সোয়া চার কোটি টাকার সেতুতে উঠতে লাগে বাঁশের সাঁকো

সংগৃহীত ছবি

সোয়া চার কোটি টাকার সেতুতে উঠতে লাগে বাঁশের সাঁকো

অনলাইন ডেস্ক

সোয়া চার কোটি টাকার সেতুতে উঠতে হলে এখন ২৫ ফুটের বাঁশের সাঁকোই ভরসা। সেই বাঁশও চাঁদা তুলে কিনতে হয়েছে স্থানীয় লোকজনের। ঢাকার ধামরাই উপজেলার সূতিপাড়া ইউনিয়নের নওগাঁও বাজার থেকে মানিকগঞ্জের আটিগ্রাম ইউনিয়নে যেতে গাজীখালী নদীর ওপর এ সেতু। গাজীখালী নদীর ওপর সেতু থাকলেও নেই সংযোগ সড়ক।

 ফলে ১০ গ্রামের মানুষের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ধামরাই কার্যালয় থেকে জানা গেছে, ৪৫ মিটার সিসি গার্ডারের এই সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে চার কোটি ২১ লাখ ২৭১ টাকা। কার্যাদেশ অনুযায়ী, ২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি এর নির্মাণকাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে এক বছরের পরিবর্তে সাড়ে তিন বছরে সেতু নির্মিত হলেও উভয় পাশের সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়নি।

ফলে সেতুটি কাজেই আসছে না। সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্য দিয়েই স্থানীয় লোকজন সেতুর উভয় পাশে ২৫ ফুট উচ্চতার বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করছে।

এলাকাবাসী জানায়, নওগাঁও, বাথুলী, বালিথা, ভাটারখোলা, বারপাইকা, কেষ্টিসহ প্রায় ১০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করছে। যানবাহন তো দূরের কথা, একটি সাইকেলও পার করা যাচ্ছে না।

এলাকাবাসী আরও জানায়, কাজকর্মের সরঞ্জাম, কৃষিপণ্যসহ নানা ধরনের মালপত্র নিজেদেরই ওঠাতে হয়। এ ছাড়া সেতুসংলগ্ন উত্তর পাশে নওগাঁও আশরাফ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়, নওগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং নওগাঁও বাজার রয়েছে। কয়েক শ ছাত্র-ছাত্রী বাঁশের সাঁকো বেয়ে ওঠানামা করতে গিয়ে আতঙ্কের মধ্যে থাকে।

নওগাঁও বাজারের ব্যবসায়ী আয়নাল হক বলেন, ‘দিনে পাঁচ-ছয়বার পার হতে গিয়ে যে কষ্ট করতে হচ্ছে, তাতে মনে হয় এর চেয়ে জেল খাটাও ভালো। ’

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর মা আমেনা বেগম জানান, মেয়েকে স্কুলে পাঠিয়ে সব সময় চিন্তায় থাকতে হয়, সেতু পার হতে গিয়ে কখন কী ঘটে।

আশরাফ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কিয়াম উদ্দিন বলেন, ‘বাঁশের সাঁকো বেয়ে সেতুতে উঠতে গিয়ে অনেক শিক্ষার্থী ব্যথা পাচ্ছে। ভয়ে শিক্ষার্থীরা আসতে চায় না স্কুলে। ’

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য শফিউজ্জামান স্বপন বলেন, ‘ঠিকাদারকে বারবার তাগিদ দেওয়া হলেও গুরুত্ব দিচ্ছেন না। ’

নির্মাণ ব্যয় বেড়ে যাওয়ার অজুহাত দেখিয়ে ঠিকাদার মেসার্স জয়েন্ট ব্রিকস টেডার্সের স্বত্বাধিকারী শফিকুল ইসলাম পাপ্পু বলেন, আগামী জুন মাসের মধ্যে সংযোগ সড়কটি করে দেওয়া হবে।

উপজেলা প্রকৌশলী আজিজুল হক বলেন, ‘ডিজাইন ও ব্যয়বৃদ্ধির কারণে সমস্যা হয়েছে। এর পরও দুই পাশের সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ’ সূত্র: কালের কণ্ঠ

news24bd.tv রিমু