হিজড়া জনগোষ্ঠীর অধিকাংশই মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত

হাসান ওয়ালী

সরকারি হিসেবে সাড়ে বারো হাজার, অন্যদিকে বেসরকারি সংস্থাগুলোর দাবি অন্তত এক লাখ হিজড়া জনগোষ্ঠীর মানুষ রয়েছে দেশে। যার অধিকাংশই মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। ২০১৩ সালে স্বীকৃতি মিললেও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা অধরাই রয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইনে অধিকার নিশ্চিতের পাশাপাশি সামাজিক কুসংষ্কার এবং ভুল তথ্য দূর করতে পারলেই পরিবর্তন হতে পারে দৃশ্যপট।

রহিম সরদার কনা। এসএসসির গণ্ডি পার হওয়ার আগেই বাড়িঘর ছেড়ে পাড়ি জমান ঢাকায়। এরপর থেকেই জীবন সংগ্রামের নানা বাঁক পেরিয়ে রাজধানীর নতুন বাজারে ফাস্টফুডের দোকান চালিয়ে করছেন জীবিকা নির্বাহ।

পরিবার- সমাজের তাড়া খেয়ে অনেকেই পাড়ি জমান রাজধানী ঢাকায়।

কখনও কখনও জড়ান অন্ধকার জগতে। কেউ কেউ ফিরে আসেন, নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে স্বপ্ন দেখেন কমিউনিটির অন্যদের ভাগ্য পরিবর্তনের। ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২’-এর তথ্যনুযায়ী দেশে হিজড়া জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ১২৬২৯ জন। তবে বেসরকারি হিসাবে এই সংখ্যা প্রায় দেড় লাখ।

হিজড়া অধিকার কর্মীরা বলছেন, তৃতীয় লিঙ্গের সন্তানরা নানা গুজব আর কুতথ্যে ঘর ছাড়তে বাধ্য হন কিশোর বয়সেই। যা ভুল পথে নিতে বাধ্য করে। সামাজিক কুসংস্কার দূর করতে কারিকুলামে এই সংক্রান্ত সঠিক তথ্য আনার দাবি জানান হিজড়া অধিকার কর্মী শোভা সরকার।

২০১৪ সালের ২৬ জানুয়ারি হিজড়াদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে গেজেটে এই জনগোষ্ঠীকে ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। তা নিয়েও আপত্তি আছে হিজড়া জনগোষ্ঠী মানুষদের।

ট্রান্সজেন্ডার নারী অধিকার কর্মী জয়া সিকদার হিজড়াকে সংস্কৃতি উল্লেখ করে ট্রান্সজেন্ডার নাম অন্তর্ভুক্তির দাবি জানান।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইনের প্রয়োগ এবং সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটলেই বিশাল এই জনগোষ্ঠীর ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটবে।

হিজড়া কিংবা ট্রান্সজেন্ডার- যে নামেই ডাকা হোক। এই জনগোষ্ঠিকে মূল স্রোতে এনে দক্ষ করে গড়ে তুলতে পারলেই বদলাবে সামগ্রিক দৃশ্যপট- এমনটিই বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

news24bd.tv/রিমু