গান্ধী আদর্শ বিস্তারে ‘যমুনলাল বাজাজ পুরস্কার’ পেলেন নোয়াখালীর রাহা নবকুমার

সংগৃহীত ছবি

গান্ধী আদর্শ বিস্তারে ‘যমুনলাল বাজাজ পুরস্কার’ পেলেন নোয়াখালীর রাহা নবকুমার

অনলাইন ডেস্ক

মহাত্মা গান্ধীর আদর্শ বিস্তারে কাজ করায় ৪৫তম সন্মানজনক যমুনলাল বাজাজ পুরস্কার পেয়েছেন নোয়াখালীর গান্ধী আশ্রমের পরিচালক রাহা নবকুমার। শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ভারতের মুম্বাইয়ে তার হাতে পুরস্কার তুলে দেন ভারতের প্রধান বিচারপতি ধনঞ্জয় যশবন্ত চন্দ্রচূড়।

ভারতের বাইরে কেবল রাহা নবকুমারই এ বছর এ পুরষ্কারে ভূষিত হন। নোয়াখালীর গান্ধী আশ্রমগুলোতে শিক্ষাদান ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরিচালনা করা এবং প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে স্যানিটেশন সম্প্রসারণে কাজ করায় তাকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়।

১৯৪৬-৪৭ সালের দিকে নোয়াখালীর ওই এলাকা পরিদর্শনে  গিয়েছিলেন মহাত্মাগান্ধী।  

অনুষ্ঠানে নবকুমার বলেন, ‘আমি জানি, গান্ধীয়ান হওয়াটা অত্যন্ত কষ্ঠসাধ্য। তবে আমি চেয়েছি, গান্ধীর সত্যবাদিতা, সততা, শান্তি ও অহিংসার দর্শন মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে। ’   

এ বছর পুরস্কপ্রাপ্তদের মধ্যে আরও যারা রয়েছেন তারা হলেন, ডা. রেজি জর্জ, ডা. ললিতা রেজি, ডা. রামলক্ষ্মী দত্ত এবং সুধা ভার্গিস।

প্রত্যন্ত এলাকা যেখানে সরকারের সহযোগিতা সুদূরপরাহত, সেখানে গান্ধীর আদর্শ বিস্তারে অবদান রাখায় তাদের এ পুরস্কারে ভূষিত করা হলো।  

তামিল নাডুর ধর্মপুরী জেলার একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপে গান্ধীর আদর্শ বিস্তার করায় এ পুরস্কার পান ডা. রেজি জর্জ ও ডা. ললিতা রেজি। সেখানার মানুষের স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করেন তারা। ডা. ললিতা জানান, তারা সর্বপ্রথম ১৯৯৩ সালে ওই এলাকায় যান। তখন শিশু মৃত্যু ও মাতৃ মৃত্যুর হার ছিল অত্যন্ত বেশি। এলাকার ৪৫ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো চিকিৎসক পাওয়া যেত না। বড় ধরনের স্বাস্থ্য সুবিধার জন্য এলাকাবাসীকে ১০০ কিলোমিটার দূরে যেত হতো।  

ডা. রামলক্ষ্মী দত্ত গ্রামীণ উন্নয়নে প্রযুক্তির ব্যবহারে এ পুরস্কার পান।  সুন্দরবন এলাকার ৫৪টি গ্রামে টিস্যু কালচার সম্প্রসারণে এ পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি।  

সুধা ভার্গিস বিহারে বঞ্চিত নারী ও শিশুদের শিক্ষা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজ করায় এ পুরস্কার পান। পরিবারের বাধা উপেক্ষা করে গান্ধীর আদর্শে কাজ করা এ নারী বলেন, ‌‘এই পুরস্কার আমি ওই সব বঞ্চিত নারী ও  শিশুদের উৎসর্গ করছি এবং এ ধরনের সব পুরস্কার তাদের জন্য। ’   

পুরস্করের আয়োজন করে যমুনলাল বাজাজ ফাউন্ডেশন। প্রধান অতিথি হিসেবে ভারতের প্রধান বিচারপতি ছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান শেখর বাজাজ, নোবেল বিজয়ী কৈলাশ সত্যার্থী, ফাউন্ডেশনের অ্যাডভাইজর কাউন্সিলর চেয়ারম্যান ড. আরএ মাশেলকার।  

অনুষ্ঠানে বাজাজের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যারা নিঃস্বার্থে গান্ধীর মহৎকর্ম ও মূল্যবোধ ছড়িয়ে দিতে কাজ করেছে তাদের এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। ফাউন্ডেশনের অ্যাডভাইজর কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মাশেলকার বলেন, আমাদের গান্ধীয়ান যোদ্ধরা গান্ধীর মূল্যবোধ সংরক্ষণ, চর্চা ও ছড়িয়ে দিতে কাজ করেছে। ’
news24bd.tv/আইএএম