অঝোরে কাঁদলেন ইসি মাহবুব

জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।

অঝোরে কাঁদলেন ইসি মাহবুব

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

বক্তব্য দেওয়ার সময় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কেঁদে ফেলেছেন জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। এ সময় পুরো সভা মিলনায়তনে নীরবতা ছড়িয়ে পড়ে। উপস্থিত অনেকেই তখন নিজেদের চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি।

মঙ্গলবার নির্বাচন ভবনের মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এমন দৃশ্যের অবতারণা হয়।

‘মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০১৯’ উপলক্ষে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) উদ্যোগে এ আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

তিনি বলেন, আজ আমার বারবার কার কথা মনে পড়ছে, আপনারা জানেন? আমার মনে পড়ছে বঙ্গবন্ধুর কথা। আমার পরম সৌভাগ্য যে, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সরকারিভাবে কাজ করার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। অনেক স্মৃতি।

আজ মাত্র দুটি বলব।

বন্ধবন্ধুর স্মৃতিচারণ করে মাহবুব তালুকদার বলেন, ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধু। ওই দিনই তিনি আমায় ডেকে বলেন, মাহবুব তুমি আমার সঙ্গে থাকবা। আমাকে রাষ্ট্রপতির সহকারী প্রেস সচিবের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পদবি বড় কথা নয়, দায়িত্ব অর্পিত হওয়ার পর স্বভাবতই আমি খুব খুশি হই। আমার দায়িত্ব পড়ে বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীর ডিকটেশন নেওয়ার। সিদ্ধান্ত হয় দুপুরে খাওয়ার পর বঙ্গবন্ধুর বিশ্রামের সময়টুকুতে আমি তার রুমে ঢুকে যাব। তিনি আমাকে বলেন, যদি কোনো অজুহাতে ডিকটেশন দেওয়ার জন্য তিনি সময় না দিতে পারেন, তাহলে আমি যেন জোর করে ডিকটেশন নিই।

‘আমি পরপর তিনদিন বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীর ডিকটেশন নিই। তার ডিকটেশন রেকর্ডও করি। চতুর্থ দিন এসে বঙ্গবন্ধু বেঁকে বসেন।
বঙ্গবন্ধু বলেন, তোমার জন্য তো আমি বিশ্রামটুকুও নিতে পারছি না। আমি তাঁকে বলি-আইয়ুবের শাসন, আপনার ছয় দফা, পাকিস্তানের জেলে বন্দির দিনগুলো, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা-এ রকম গুরুত্বপূর্ণ সব অধ্যায়ের বিষয়গুলো নিয়ে তো আপনাকে ডিকটেশন দিতে হবে। আপনার বিশ্রামের সময় আপনাকে বিরক্ত করা আমারও ভালো লাগে না। তাই আপনি আমাকে অন্য একটা সময় বের করে দিন। ’

মাহবুব তালুকদার বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেন আমি সমস্ত কাজ গুছিয়ে আনছি, পরিবারের (সদস্য) বিয়ে শাদি শেষ করছি। সামনেই ডিকটেশন নেওয়ার সময় বের করে দেবো। কোনো কিছুই আটকে থাকবে না। এরপরই ঘটে সেই ঘৃণ্য আগস্ট।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর