চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান মটন মিয়া নিজ বাসায় জোরপূর্বক ধর্ষণের জেরে অনুষ্ঠিত হওয়া সালিশে মেয়ের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৭২ হাজার টাকায় সমাধান করে দেন। আর সালিশের সমাধান মানতে না পেরে ক্ষোভে শুক্রবার বিষ পানে আত্মহত্যা করেছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার দ্বারিয়াপুর মহাজনপাড়া মহল্লার সাদিকুল ইসলামের মেয়ে ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী আসিফা খাতুন (১৩)।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সকালে আসিফা খাতুন বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে পরিবারের লোকজন তাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
পরে বিকেল ৪টার দিকে চিকিৎসারত অবস্থায় হাসপাতালেই মারা যায় আসিফা।আরও পড়ুন:
ধর্ষণ ও নুরদের নিয়ে যা যা বললেন সেই ঢাবি ছাত্রী
আসিফার পরিবার জানায়, কয়েকদিন আগে একই এলাকার তহিদুল ইসলামের ছেলে আব্দুল বাসির আসিফার ঘরে ঢুকে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।
এ সময় আসিফার চিৎকারে তার মা ঘরের দরজা আটকে দেয় এবং আটক থাকা অবস্থায় ধর্ষক বাসিরের বাবা তহিদুলের বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছেলেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।
পরে গত বৃহস্পতিবার ২৪ সেপ্টেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান মটন মিয়ার উদ্যোগে তার নিজ বাড়িতে উভয় পক্ষকে নিয়ে সালিশে বসেন এবং ধর্ষক আব্দুল বাসিরের অনুপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত সালিশে ধর্ষক বাসিরকে ৭২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
নিহত আসিফার বড় বোন বলেন, ৭২ হাজার টাকায় ধর্ষণের সমাধান মানতে না পেরে সালিশেই আসিফা সাফ জানিয়ে দেয় এ বিচার মানিন এবং আসিফা সকলের উপস্থিতিতে বলে, আমাকে বাসির ধর্ষণ করেছে। আমি তাকেই বিয়ে করব, টাকা নিব না।
এদিকে আসিফার ভাবি জানান, আসিফা ধর্ষণের পর হতেই বলত, আমি বাসিরকে বিয়ে করতে না পেলে আত্মহত্যা করব। আর এটি করেই ফেলেছে সে। তিনি আরও বলেন, ৭২ হাজার টাকায় সমাধান হলেও কাউন্সিলর মতিউর রহমান মটন মিয়া আমাদের পরিবারকে ৬০ হাজার টাকা দিয়েছে। বাকিটা মটন মিয়া নিজের কাছেই রেখে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন:
ডোপ টেস্টে পজিটিভ: চাকরিচ্যুত হচ্ছেন ২৬ পুলিশ সদস্য
এবিষয়ে কথা বলতে হাসপাতালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান মটন মিয়ার সাক্ষাৎ পাওয়া গেলেও তিনি এবিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
এদিকে আজ শনিবার দুপুরে হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের নিকট লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।
এবিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) মোজাফফর হোসেন জানান, পরিবারের পক্ষ হতে নারী নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এবিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
news24bd.tv কামরুল