এত শখ তো রোহিঙ্গাদের নিয়ে যান: জাতিসংঘকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী

এত শখ তো রোহিঙ্গাদের নিয়ে যান: জাতিসংঘকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর নিয়ে জাতিসংঘের দেয়া বিবৃতির তীব্র সমালোচনা করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।  

গতকাল সোমবার ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তিনি। এসময় তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা কক্সবাজারের কুতুপালং না ভাসানচরে থাকবে সেটি জাতিসংঘের দেখার বিষয় নয়। বাংলাদেশের যেখানেই রোহিঙ্গারা থাকুক না কেন সেখানেই তাদের সহযোগিতা করা জাতিসংঘের দায়িত্ব।

বড় পশ্চিমা দেশ ও বেসরকারি সংস্থাগুলোকে (এনজিও) ইঙ্গিত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের এত শখ তো ওদের (রোহিঙ্গাদের) নিয়ে যান। ’

নোয়াখালীর ভাসানচরের পরিবেশ নিয়ে জাতিসংঘ ও প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা ইঙ্গিতপূর্ণ বিবৃতি দিলেও দ্বীপটি পরিদর্শনের ব্যাপারে তারা বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রস্তাব দেননি। দুই বছরেরও বেশি সময় ভাসানচর নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে বাংলাদেশের আলোচনা হয়েছে। তাই জাতিসংঘকে না জানিয়ে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়েছে - এমন ভাবনার সত্যতা নেই।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, বাংলাদেশ কয়েক বছর ধরে ভাসানচরে রোহিঙ্গা স্থানান্তর পরিকল্পনা নিয়ে যখন এগিয়েছে, তখন বিভিন্ন পক্ষ তাদের স্বার্থে একে বিতর্কিত করার চেষ্টা চালিয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ভাসানচর পরিদর্শনের জন্য জাতিসংঘ আনুষ্ঠানিক কোনো প্রস্তাব কখনো দেয়নি। তারা চাইলেই যেকোনো সময় সেখানে যেতে পারে, সেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে সরকার।

রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর শুরু করার প্রভাব আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পড়বে কি না জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কেন পড়া উচিত? কুতুপালং থাকুক, কক্সবাজার থাকুক, এখানে থাকুক, অসুবিধা কী? সবগুলো তো একই জিনিস।

বাংলাদেশ সরকারই ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের খাওয়াচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার মনে হয়, জাতিসংঘের ম্যান্ডেট, আমাদের দেশে যার ভিত্তিতে তারা কাজ করে, তা হলো যারা শরণার্থী তাদের সাহায্য করবে। তাদের ম্যান্ডেট অনুসরণ করা উচিত। তারা কোথায় আছে সেটি বিষয় নয়। তারা কুতুপালং আছে, ভাসানচরে আছে, না অন্য কোথাও আছে, তাদের ম্যান্ডেট হলো সাহায্য করা।


আরও পড়ুন: সরকার মৌলবাদকে উস্কে দিচ্ছে: মির্জা ফখরুলের


পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের যেখানেই থাকবে সেখানেই তাদের (জাতিসংঘ) সহযোগিতা দিতে হবে। এ কারণেই তারা এখানে এসেছে। সেখানে লেখা নেই যে শুধু কুতুপালংয়েই তারা সহযোগিতা দেবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর এ দেশের অভ্যন্তরীণ একটি উদ্যোগ। মিয়ানমার যখনই তাদের লোকদের নেওয়া শুরু করবে, হয়তো ওরাই প্রথম যাবে।

ভাসানচরে কয়েক মাস আগে থেকে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ৩০৬ জন সমুদ্রে গিয়ে মরে যাচ্ছিল। ওদের সলিলসমাধি হচ্ছিল। সেখান থেকে আমরা বাঁচিয়েছি। তাদের আর কেউ নেয়নি। বিভিন্ন দেশ তখন আমাদের কাছে তদবির করেছে। আমরা বলেছি, আপনারা নিয়ে যান। বড় বড় দেশ যারা, তাদেরও বলেছি, আপনাদের এত শখ, ওদের নিয়ে যান। আমাদের কোনো আপত্তি নাই। কেউ নেয় নাই।

news24bd.tv আহমেদ