সুন্দরবনে বাঘ বেড়ে ১১৪
আজ বিশ্ব বাঘ দিবস

সুন্দরবনে বাঘ বেড়ে ১১৪

অনলাইন ডেস্ক

আজ ২৯ জুলাই বিশ্ব বাঘ দিবস। বাংলাদেশ ও ভারতসহ বিশ্বে বাঘের বসবাস এমন দেশগুলোতে বাঘের বংশ বৃদ্ধির অঙ্গিকারের মধ্য দিয়ে আজ করোনা প্রতিরোধে চলমান লকডাউনের কারণে কোনো আনুষ্ঠান না করে ‌‘ভারচুয়ালী’ বাংলাদেশে বাঘ দিবস পালিত হচ্ছে।  

বাংলাদেশের সুন্দরবন অংশে গত ৩ বছরে বাঘের সংখ্যা ১০৬ থেকে বেড়ে বর্তমানে ১১৪ হয়েছে। ২০১৯ বছরের ২২ মে সর্বশেষ বাঘ জরিপে সুন্দরবনে ১১৪ বাঘ রয়েছে বলে ক্যামেরা ট্রাকিং জরিপে উঠে এসছে।

২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত এই ৩ বছরে বাঘের এ সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। সুন্দরবনে বনদস্যুদের আত্মসর্ম্পপণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফেরা ও চোরা শিকারীদের দৌরাত্ম্য কম হওয়ায় রয়েল বেঙ্গল টাইগার বা বাঘের সংখ্যা বেড়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইড সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশের আয়তন ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার।

চলতি বছরের ২২ মে সর্বশেষ বাঘ জরিপে সুন্দরবনে ১০৬ থেকে বেড়ে বর্তমানে বাঘের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১৪ টিতে।

২০০১ সাল থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত ৫২টি বাঘের মৃত্যু হয়েছে।

এর মধ্যে চলতি বছরে দুটিসহ স্বাভাবিক ভাবে মৃত্যু হয়েছে মাত্র ১২টি বাঘের। লোকালয়ে ঢুকে পড়া ১৪টি বাঘকে পিটিয়ে মেরেছে স্থানীয় জনতা, একটি নিহত হয়েছে ২০০৭ সালের সুপার সাইক্লোন সিডরে ও বাকী ২৫ বাঘ হত্যা করেছে চোরা শিকারীরা। অধিক মুনাফার আশায় বাঘের অঙ্গ-প্রতঙ্গ, চামড়া, হাড়, দাঁত, নখ পাচার ছিল নিত্য দিনের ঘটনা। আর এটি দেশ ও দেশের বাইরে চলে যেত চোরকারবারী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে। তবে আশার খবর হচ্ছে সুন্দরবনে একের পর এক বনদস্যুদের আত্মসমর্পণে বাঘ নিধন কমে এসেছে।

সুন্দরবনে চোরা শিকারি পাশাপাশি বাঘের আবাসস্থল ক্ষতিগ্রস্ত হবার কারণে হুমকির মুখে রয়েছে বাঘ। পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণায়নে বাড়ছে সমদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা। এ অবস্থায় হারিয়ে যেতে পারে সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার। ২০৭০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে বাঘের জন্য কোনো উপযুক্ত জায়গা থাকবে না। কেননা, বিশ্বের তাপমাত্রা ক্রমাগত বৃদ্ধিসহ উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন সুন্দরবনে টিকে থাকা কয়েক শত বাঘ বিলীন হওয়ার জন্য যথেষ্ট। এই অবস্থায় সুন্দরবনে বাঘের আবাসভূমি এখন চরম হুমকির মুখে পড়েছে।

সুন্দরবন বিভাগ বলছে, সুন্দরবনে একসময় চোরাশিকারী আর বনদস্যুদের হাতে একের পর এক বাঘ নিধন হতো। তবে, ২০০৮ সাল থেকে এপর্যন্ত সুন্দরবন ও লোকালয়ে বাঘের হামলায় ২০৮ জন মানুষ মারা যায় ও প্রায় এক শত জেলে-বনজীবী আহত হয়েছে। বর্তমানে সুন্দরবন সুরক্ষাসহ বাঘের প্রজনন, বংশ বৃদ্ধিসহ অবাধ চলাচলের জন্য গোটা সুন্দরবনের আয়তনের ২৩ ভাগ থেকে প্রায় ৫২ ভাগ এলাকাকে সংরক্ষিত বন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এতে করে বাঘের প্রজনন, বংশ বৃদ্ধিসহ বাঘ অবাধ চলাচলের ব্যবস্থা নেওয়ায় বাঘ কিছুটা হলেও স্বস্তির মধ্যে রয়েছে।

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, বাঘ কমার অন্যতম কারণ চোরা শিকারী ও বনদস্যুদের দ্বারা বাঘ নিধন। বাঘের মূল্য অনেক বেশি। তাই দ্রুত চোরা মার্কেটে চলে যাচ্ছে। সুন্দরবনের বাঘের সংখ্যা বাড়াতে আবাসস্থল খাবার ও প্রজনন নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ নিশ্চিত করতে কাজ করছে বন বিভাগ।

সুন্দরবনে বনদস্যুদের আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফেরা ও চোরা শিকারীদের দৌরাত্ম্য কম হওয়ায় রয়েল বেঙ্গল টাইগার বা বাঘের সংখ্যা সর্বশেষ জরিপে বেড়েছে। ইতিমধ্যেই বাঘের প্রজনন, বংশ বৃদ্ধিসহ অবাধ চলাচলের জন্য গোটা সুন্দরবনের আয়তনের ২৩ ভাগ থেকে প্রায় ৫২ ভাগ এলাকাকে সংরক্ষিত বন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। বর্তমানে সুন্দরবন পাহারায় স্মার্ট প্রেট্রোলিং টিম কাজ করছে। কুখ্যাত বাঘ শিকারী ‘বাঘ হাবিব’ ও তার প্রায় সব সহযোগী চোরাশিকারীদের আটক করে কারাগারে পাঠানো ফলে বর্তমানে বাঘ মারা যাচ্ছে না।

আরও পড়ুন:


করোনায় ঝালকাঠির আদালতের বিচারকের মৃত্যু!

নরসিংদীতে ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশক নিধন স্প্রে

মমেক হাসপাতালে ৫০ টি অক্সিজেন সিলিন্ডার দিলেন সিটি মেয়র ও চেম্বার সভাপতি


news24bd.tv তৌহিদ

এই রকম আরও টপিক

সম্পর্কিত খবর