বাসের নিচে লুকিয়ে দুই চীনা শিশুর ৮০ কি.মি. পাড়ি!

বাসের নিচে লুকিয়ে ভ্রমণ করছে দুই চীনা শিশু। ছবির কপিরাইট SOUTHERN MORNING POST

বাসের নিচে লুকিয়ে দুই চীনা শিশুর ৮০ কি.মি. পাড়ি!

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

বাসের নিচে লুকিয়ে ৮০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিল দুই চীনা শিশু। স্থানীয় একটি পত্রিকার ওয়েবসাইটে ছাপা হয়েছে বাসের নিচে দুই শিশুর লুকিয়ে ভ্রমণ করার ছবি। এ নিয়ে দেশটিতে তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়েছে।  

চীনে বাসের নিচে দুই শিশুর লুকিয়ে ৮০ কিলোমিটার (৫০ মাইল) ভ্রমণ করার একটি ছবি দেশটিতে ''পরিবার-বিচ্ছিন্ন'' শিশুদের অবস্থা ও তাদের কল্যাণের বিষয়টি নিয়ে আলোড়ন তৈরি করেছে।

দেশটির সংবাদমাধ্যমে ছেলে দুটির নাম উল্লেখ করা হয়নি, তবে তারা দক্ষিণাঞ্চলীয় গুয়াংশি প্রদেশের দরিদ্র একটি গ্রামের ছেলে। তাদের বাবা-মা কাজ করেন প্রতিবেশী গুয়াংডং প্রদেশে। বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করতে ওই দুই শিশু এভাবে লুকিয়ে ভ্রমণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।

তাদের স্কুলশিক্ষক ২৩শে নভেম্বর তারা নিখোঁজ বলে খবর দেন।

ওইদিনই একটি বাস স্টেশনে বাসের নিচে তাদের খুঁজে পাওয়া যায়।
ছবিতে দেখা যায় দুটি ছেলেরই সারা শরীর কাদা মাখা এবং তারা বাসের তলায় কিছু একটা ধরে ঝুলছে।

সাউদার্ন মর্নিং পোস্ট পত্রিকার খবর অনুযায়ী ছেলে দুটির বয়স "আট বা নয়''। পথে বাসটি একটি স্টেশনে থামলে নিরাপত্তা কর্মীরা তাদের খুঁজে পায়।
যাত্রাপথের পাঁচ কিলোমিটার পথ বাসটিকে খাড়া চড়াই বেয়ে উঠতে হয়েছিল। কর্মীরা অবাক হয়ে গেছেন কীভাবে অক্ষত অবস্থায় ছেলে দুটি ওই পথটা পার হয়েছে।

''শিশু দুটি খুবই রোগা, কাজেই বাসের নিচটা তাদের লুকিয়ে থাকার জন্য খুবই উপযুক্ত জায়গা ছিল,'' ওই পত্রিকাকে বলেন বাস কোম্পানির একজন কর্মচারী।

স্টাফরা জানায়, ছেলে দুটি তাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে চায়নি।

পরে জানা গেছে, তারা বাবা-মাকে খোঁজার বৃথা চেষ্টায় বাসের নিচে লুকিয়ে ভ্রমণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।

খবরে বলা হয়েছে, তাদের আত্মীয়দের খবর দেওয়া হলে ওইদিনই সন্ধ্যাবেলা তারা এসে বাচ্চা দুটোকে নিয়ে গেছে।

চীনের অনলাইন ব্যবহারকারীরা এই ঘটনায় স্তম্ভিত। জনপ্রিয় সিনা ওয়েবো সাইটে বিষয়টি নিয়ে কয়েক হাজার মানুষ আলোচনা করেছে।
ছবিটি ব্যাপক শেয়ার হয়েছে এবং বহু মানুষ এই ঘটনাকে 'হৃদয়-বিদারক' বলে মন্তব্য করেছে।

একজন বলেছে ''চীনে এখন বহু শিশু অল্প বয়স থেকেই তাদের বাবা-মায়েদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন জীবন কাটায়। তাদের দেখাশোনা করে কারা, তাদের সমস্যার সমাধান করে কারা?''
আরেকজন মন্তব্য করেছে এটা ''সমাজের একটা মর্মান্তিক দিক'', আর তৃতীয় আরেকজন ''পরিত্যক্ত শিশুদের আরও দেখাশোনার'' আহ্বান জানিয়েছে।

সম্পর্কিত খবর