যেখানে মৃত্যুকে আমন্ত্রণ জানান পুণ্যার্থীরা

প্রতীকী ছবি

যেখানে মৃত্যুকে আমন্ত্রণ জানান পুণ্যার্থীরা

অনলাইন ডেস্ক

ভারতের উত্তর প্রদেশের বারানসি শহর। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস এ শহরে জীবনের শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করতে পারলে মিলবে মুক্তি, লাভ করা যাবে সৃষ্টিকর্তার নৈকট্য। আর তাই পূজা-অর্চনা করে জীবন কাটাতে শহরটির ধর্মশালায় ভিড় করেন বহু পুণ্যার্থী।

প্রায় ১১ বছর আগে পার্থিব সব মোহ-মায়া ত্যাগ করে ভারতের পবিত্র হিন্দু শহর বারানসিতে আসেন মুরলী মোহন শাস্ত্রী এবং তার স্ত্রী।

উদ্দেশ্য একটাই জাগতিক সব আরাম আয়েশ ভুলে শহরটিতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করা। পাপমুক্তির আশায় প্রতিদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠে গঙ্গাস্নান করাই এই দম্পতির প্রথম কাজ।

মুরলী মোহন শাস্ত্রী আল-জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমার সন্তানরা বড় হয়ে গেছে। তারা সবাই বিয়ে করে নিজ নিজ পরিবার গড়েছে।

সবাই নিজেদের জগতে ব্যস্ত। তাদের ছেড়ে আসা কষ্টকর ছিল, কিন্তু আমার স্বামীকে ছেড়ে থাকা আরও বেশি কঠিন ছিল। তাই আমি এখানে তার সঙ্গে চলে এসেছি। ’

শুধু মুরলী মোহন শাস্ত্রীর মতো অনেক বাসিন্দার অন্তিম ইচ্ছা বারানসিতে থেকে জীবনের শেষ দিনগুলো পূজা-অর্চনার মধ্য দিয়ে পার করা।

রাম পেয়ারি নামে এক বৃদ্ধা বলেন, প্রতিটা মানুষকে এত বেশি দুঃখ-কষ্ট সহ্য করতে হয় যে জীবনের ওপর থেকে মায়া চলে যায়। আপনি যদি আত্মতৃপ্তি লাভ করতে চান তাহলে আপনাকে এখানে আসতে হবে।

তবে এত মানুষকে একসঙ্গে থাকা-খাওয়ার জায়গা দিতে হিমশিম খেতে হয় স্থানীয় ধর্মশালার কর্তৃপক্ষকে।

স্থানীয় ধর্মশালা মুমুখশু ভবনের ম্যানেজার মানিশ কুমার পানডে বলেন, অনেক বয়স্ক লোকজন বারানসিতে এসে এখানে থাকতে চান। তাই এ জায়গার চাহিদা অনেক বেশি। তবে, আমরা শুধুমাত্র নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষকে জায়গা দিতে পারি। কারণ আমাদের জায়গার স্বল্পতা রয়েছে।

হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা যারা জীবনের শেষ সময়গুলো বারানসিতে পার করতে পারেন না, তাদের সবার ইচ্ছা মৃতদেহের শেষকৃত্যানুষ্ঠানটি যেন পুণ্যভূমিতেই হয়। যাতে করে পাপ থেকে মুক্তি মেলে।
news24bd.tv/আলী