‌‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়েছে’

সংগৃহীত ছবি

‌‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়েছে’

অনলাইন ডেস্ক

‌বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত চ্যালেঞ্জের মুখে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, ‘সমন্বিত মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী বিদ্যুৎ, জ্বালানি খাতের উন্নত অবকাঠামো তৈরিতে ২০৫০ সালের মধ্যে ১৮০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ প্রয়োজন। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি ও বৈদেশিক উৎস থেকে এই অর্থ সংগ্রহ করা হবে। স্মার্ট গ্রিড, আধুনিক প্রযুক্তি, উন্নত সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থা, সাশ্রয়ী উৎপাদন সিস্টেমে এই বিনিয়োগ করা হবে।

’ 

সোমবার (২৯ মে) বিদ্যুৎ ভবনে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালিকদের সংগঠন বিপাপার সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতকে চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলেছে। সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থা পরিকল্পনামাফিক চললেও প্রাথমিক জ্বালানির ধারাবাহিক সরবরাহ চ্যালেঞ্জে পড়েছে। আগামী ২ বছরে আরও ২০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে উৎপাদন করা হবে।

নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আসবে। গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধান কার্যক্রম বাড়ানো হচ্ছে। পিএসসি হালনাগাদ ও আকর্ষণীয় করা হচ্ছে। ট্রান্সমিশন বেসরকারি খাতে দেওয়া হচ্ছে। বিতরণ ব্যবস্থা আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। ’ 

গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম বাড়ানো হচ্ছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আশা করি আরও গ্যাস পাওয়া যাবে। ভোলার গ্যাস মূলধারায় আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ’ 

নসরুল হামিদ আরও বলেন, ‘কয়লা ও তেলের দাম বৃদ্ধির ধাক্কা এখন আমরা টের পাচ্ছি। আমাদের প্রধান লক্ষ্য ছিল সবার ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া। সেই কাজটি আমরা সফলভাবে করতে পেরেছি। আমাদের কেন্দ্র এবং সঞ্চালন লাইনের কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু বড় সমস্যা হচ্ছে জ্বালানি ঘাটতি। ’

তিনি বলেন, ‘নিজস্ব জ্বালানি অনুসন্ধানের ওপর আমরা জোর দিচ্ছি। কিন্তু করোনার মধ্যে কাজ হয়নি। এটি একটি বড় সমস্যা। ’ আর্থিক জোগানের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘একটি কূপ খনন করতে ৯ থেকে ২১ মিলিয়ন ডলার খরচ হয়। আমাদের নিজস্ব অনুসন্ধান উন্নয়ন দলের ঘাটতি রয়েছে। এজন্য ঠিকাদার দিয়ে কাজ করাতে হয়। আমরা চেষ্টা করছি আগামী তিন থেকে চার বছরের মধ্যে ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যোগ করতে। ’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ জমির সংস্থান করা। আমরা এখন দুই হাজার মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য বাস্তবায়ন করছি। এজন্য ছয় হাজার একর জমি প্রয়োজন। এত পরিমাণ জমির সংস্থান করা যাচ্ছে না। এরপরও সরকার সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে সবচেয়ে বেশি জোর দিচ্ছে। ’

ভোলার গ্যাসে সম্ভাবনা থাকলেও সেখান থেকে পাইপলাইন করতে ৯ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন। এটি একটি বড় বিনিয়োগ।

তিনি বলেন, ‘জ্বালানির মূল্য নির্ধারণের জন্য সরকার বাজেট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চায়। বাজেটকে সামনে রেখে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কর সমন্বয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ’

এফইআরবির নির্বাহী পরিচালক রিসান নসরুল্লাহর সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিপ্পার ভাইস প্রেসিডেন্ট মোজাম্মেল হোসেন। তিনি প্রবন্ধে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা, জ্বালানি আমদানিতে আর্থিক সংকট, প্রাথমিক জ্বালানিতে বিভিন্ন করহার ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরেন।

এফইআরবির চেয়ারম্যান শামীম জাহাঙ্গীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেইন, বুয়েটের অধ্যাপক এজাজ হোসাইন, বিইআরসির সাবেক সদস্য মো. মকবুল-ই-ইলাহী চৌধুরী ও বিপ্পার প্রেসিডেন্ট ফয়সাল খান প্রমুখ।

news24bd.tv/আইএএম