শান্তিরক্ষা মিশন নিয়ে ষড়যন্ত্র: বিএনপির রাষ্ট্রদ্রোহিতা

সংগৃহীত ছবি

শান্তিরক্ষা মিশন নিয়ে ষড়যন্ত্র: বিএনপির রাষ্ট্রদ্রোহিতা

অনলাইন ডেস্ক

নির্বাচনের আগে সরকারের ওপর নানারকম চাপ প্রয়োগের চেষ্টা চলছে। চলছে নানা রকম আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র। সেই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই এবার শান্তি মিশনকে টার্গেট করা হয়েছে। সম্প্রতি হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ থেকে শান্তি মিশনে লোক নেয়ার আগে তাদের অতীত পর্যালোচনা করার পরামর্শ দিয়েছে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, শান্তি মিশনে যাদেরকে  নেয়া হচ্ছে তারা অতীতে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে কিনা তা যাচাই বাছাই করে তারপর শান্তি মিশনে তাদেরকে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ একটি বিতর্কিত প্রতিষ্ঠান। তারা জাতিসংঘের পিস অপারেশন বিভাগের প্রধান আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যঁ পিয়েরে ল্যাক্রুয়ার এর কাছে এই আহ্বান জানিয়েছে। জাতিসংঘের এই কর্মকর্তার শিগগির বাংলাদেশ সফরের কথা।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এই বিবৃতি এমন এক সময় দেয়া হলো বাংলাদেশের নির্বাচন আসন্ন এবং এই নির্বাচন নিয়ে নানারকম চক্রান্ত চলছে। কিন্তু বিএনপি একটি বিতর্কিত সংস্থার (হিউম্যান রাইটস ওয়াচ) বিবৃতি তাদের দলীয় টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে সমর্থন করেছে। এটি শুধুমাত্র রাজনৈতিক কটূচাল নয়, এটি বিএনপির রাষ্ট্রদ্রোহিতার সামিল, দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানা অপতৎপরতায় লিপ্ত। মার্কিন ভিত্তিক এই মানবাধিকার সংস্থাটি বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারেও বাধা প্রদানের চেষ্টা করেছিল। সেই সময় যুদ্ধাপরাধী গোষ্ঠী তাদেরকে বিপুল পরিমাণ আর্থিক অনুদান দিয়েছিল এমন অভিযোগ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই সময় ড. কামাল হোসেনের জামাতা ডেভিড বার্গম্যান হিউম্যান রাইটস ওয়াচের পক্ষ থেকে এই বিচারের বৈধতা নিয়ে এবং বিচারের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেছিলেন। যদিও বাংলাদেশ যুদ্ধাপরাধের বিচার করেছে আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে এবং এই বিচার সর্বোচ্চ আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এ নিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে একের পর এক নালিশ করতে থাকে। এরপর হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বাংলাদেশের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ইস্যুটিতে সামনে নিয়ে আসে এবং এ নিয়ে একের পর এক অভিযোগ করতে থাকে। এটিও বিএনপি-জামায়াতের আন্তর্জাতিক লবিংয়ের ফল হিসেবে বিশ্লেষকরা মনে করেন।  

বাংলাদেশের বিএনপিপন্থীদের দুটি প্রতিষ্ঠান অধিকার এবং মায়ের ডাক এর তথ্যগুলো নিয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ একের পর এক বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে নানারকম মনগড়া বিদ্বেষ মূলক প্রতিবেদন তৈরি করতে থাকে। এমনকি সেগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর কাছেও বিতরণ শুরু করে যেন তারা প্রভাবিত হয়। সেই সময় বাংলাদেশের সরকার এটিকে উপেক্ষা করে ছিল। কিন্তু একের পর এক লবিংয়ের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞায় হিউম্যান রাইটসের প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।  

গত দুই বছর ধরেই হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এর প্রতিবেদন আমলে নেওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের। সর্বশেষ মানবাধিকার রিপোর্টেও হিউম্যান রাইটস ওয়াচের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আর এখন শান্তি মিশনে ব্যাপারেও হিউম্যান রাইটস ওয়াচ কথা বলা শুরু করল এবং এটি একটি ভয়ঙ্কর প্রবণতা বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একটি সশস্ত্র বাহিনী। এটি সরকারের সাথে সংশ্লিষ্ট নয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী রাষ্ট্রের সম্পদ। যারা রাষ্ট্রের ভূখণ্ডের অখণ্ডতা রক্ষা সহ সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে থাকে। কিন্তু বিএনপি একটি বিতর্কিত সংস্থার (হিউম্যান রাইটস ওয়াচ) বিবৃতি তাদের দলীয় টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে সমর্থন করেছে। এটি শুধুমাত্র রাজনৈতিক কটূচাল নয়, এটি বিএনপির রাষ্ট্রদ্রোহিতার সামিল, দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান।

বাংলাদেশ শান্তি মিশনে সবচেয়ে বড় সৈন্য প্রেরণকারী দেশ। আর সবচেয়ে প্রশিক্ষিত এবং ভালো ভূমিকায় অবতীর্ণকারী দেশ গুলোর একটি হল বাংলাদেশ। সেই বাংলাদেশের শান্তি মিশনের উপস্থিতি কমানো বা বন্ধ করার জন্য হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এই তৎপরতার বিরুদ্ধে এখনই ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার। নির্বাচনকে সামনে রেখে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এটি নিয়ে আরও বিভিন্ন রকমের অপপ্রচারে লিপ্ত হবে তা বোঝাই যাচ্ছে। এক্ষেত্রে সরকার যদি নির্লিপ্তভাবে থাকে তাহলে পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নির্বাচনের আগে যারা বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে বানচাল করতে চায়, অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে দিতে চায় না তারা শান্তি মিশনকে টার্গেট করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এই পদক্ষেপের মাধ্যমে সেটা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো।

News24bd.tv/desk