কিশোরকে বলাৎকারের পর ভিডিও ধারণ, মাকে ধর্ষণের হুমকি

প্রতীকী ছবি

কিশোরকে বলাৎকারের পর ভিডিও ধারণ, মাকে ধর্ষণের হুমকি

অনলাইন ডেস্ক

মেহেরপুরের গাংনীর মাঠপাড়ায় এক কিশোরকে বলাৎকারের ঘটনা ঘটেছে। বলাৎকারের পর তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে ভিডিও এবং ছবিও ধারণ করেছেন প্রতিবেশী মুরছালিন।

এ ঘটনায় স্থানীয়ভাবে সালিশ করতে চাইলেও কয়েকজন রাজনৈতিক নেতাকর্মী ভুক্তভোগী পরিবারটিকে বাধা ও হুমকি দেওয়ায় বিচার কাজ থমকে যায়।  

মুরছালিন মাঠপাড়ার মোকাদ্দেস ওরফে মুকার ছেলে এবং একজন মুরগী ব্যবসায়ী।

জানা যায়, গত ৫ জুলাই সকালে মাঠপাড়ার ওই কিশোরকে পাখি শিকারের কথা বলে তারই খেলার সঙ্গী রাহুলকে দিয়ে ডেকে নেয় মুরছালিন। পরে বাড়ির পাশে মাঠে জোরপূর্বক বলাৎকার করে। আর ভিডিও এবং ছবি ধারণ করে রাহুল। বলাৎকার শেষে বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য শাসিয়ে দেয়।

ঘটনাটি ফাঁস হলে হত্যার হুমকিও দেয় মুরছালিন।

এদিকে ওই কিশোর বাড়ি ফিরে অসুস্থতাবোধ করলে বিষয়টি তার মায়ের নজরে আসে। এরপর স্থানীয় কয়েকজনকে জানিয়ে তার মা বিচার দাবি করেন। কিন্তু প্রভাবশালী মুরসালিন ও তার লোকজনের চাপ ও হুমকির মুখে তা থমকে যায়।

একই সময়ে অসহায় পরিবারটি গাংনী থানায় আসলে একজন পুলিশ কর্মকর্তা তাদেরকে নিরুৎসাহিত করেন। মেডিকেল করা হলে কোনো আলামত পাওয়া যাবে না, মামলা করলেও কিছু হবে না; উল্টো বিপদে পড়তে হবে বলেও জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা। পরে এক রকম হতাশা নিয়েই ফিরে আসেন তারা।

জানা যায়, বিচার না পেয়ে ও নিরাপত্তাহীন হয়ে এক রকম গৃহবন্দী হয়ে পড়েন ওই পরিবারটি। থানা থেকে ফেরার পর মুরছালিনের মা ও বোন ওই কিশোরের বাড়িতে যায় এবং বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য হুমকি-ধামকি দেয়। বেশি বাড়াবাড়ি করলে তাদেরকে এই পাড়া থেকে উচ্ছেদ করা হবে বলেও হুমকি দেন। এরপরদিন মুরছালিন ওই কিশোরের মাকেও ধর্ষণের হুমকি দেয়। অবশেষে গাংনী পৌর মেয়রকে জানালে তিনি ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রাশিদুল ইসলাম খোকনকে দায়িত্ব দেন ঘটনাটি তদন্ত ও ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।  

কাউন্সিলর রাশিদুল ইসলাম খোকন বিস্তারিত জানার পর সাংবাদিকদের বিষয়টি অবগত করেন এবং একই সঙ্গে থানায় মামলা করার জন্য ওই কিশোরের পরিবারের লোকজনকে পাঠিয়ে দেন।

ওই কিশোরের মা জানান, তার ছেলের ওপর পাশবিক নির্যাতনের পর থেকেই তারা হুমকির মুখে। স্বামী বিদেশ থাকায় গোটা পরিবার নিরাপত্তাহীন। এরপর একের পর এক হুমকি। এর সুষ্ঠু ও সু বিচার দাবি করেন তিনি।

গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক জানান, ওই কিশোরের পরিবারটি ইতোপূর্বে থানায় এসেছিলেন। মামলার করার বিষয়ে তারা পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত জানানোর কথা বলে বাড়ি ফিরে যায়। কিন্তু পরে আর তাদেরকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। শুক্রবার ওই পরিবারটি থানায় এসে অভিযোগ দায়ের করেন। একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।