বিএনপি প্রচণ্ড হতাশ হয়ে গেছে: তথ্যমন্ত্রী 

সংগৃহীত ছবি

বিএনপি প্রচণ্ড হতাশ হয়ে গেছে: তথ্যমন্ত্রী 

অনলাইন ডেস্ক

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, মার্কিন ভিসানীতি ঘোষণার পর বিএনপি অনেক উদ্বেলিত হয়েছিল। এখন দেখি বিএনপি ভালো হয়ে গেছে। তাদের মধ্যে একটা পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। তারা পুলিশের ওপর আগের মতো হামলা করার সাহস পাচ্ছে না।

বিএনপির আশা ছিল, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দল নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কিছু বলবে। কিন্তু এনিয়ে তারা টু শব্দটি করেননি। এজন্য তারা (বিএনপি) প্রচণ্ড হতাশ হয়ে গেছে।

মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন চত্বরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ঘোষিত শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রা পূর্ব আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত সোমবার চট্টগ্রামে শ্রমিক সমাবেশ করেছে। তিনি সেখানে কথা ঘুরিয়ে দিয়ে বলেছেন আমরা বিদেশি শক্তির ওপর নির্ভর করি না। অথচ বিএনপি দিনের বেলায় তারুণ্যের সমাবেশ, হাঁটা কর্মসূচি, বসা কর্মসূচি, মাঝেমধ্যে দৌড় কর্মসূচি দেয়। আবার রাত-বিরাতে রুমিন ফারহানা, শ্যামা ওবায়েদ, নিপুণ রায়সহ তাদের মহিলা নেত্রীদের সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন অ্যাম্বেসিতে ধরনা দেয়, উনাদের পায়ে ধরেন। এখন তারা বুঝতে পেরেছে ধরনা দিয়ে কোনো লাভ হয় নেই। মার্কিন প্রতিনিধি দল এসেও তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিংবা নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কিছু বলেনি। তারা বুঝতে পেরেছে তাদের দাবি বিদেশিরাও প্রত্যাখ্যান করেছে।

তিনি বলেন, বিএনপি সমাবেশের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মানসে সারাদেশে নানা ধরনের কর্মসূচি পালন করছে। কদিন আগে চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জায়গায় তারুণ্যের সমাবেশ করেছে। পরশুদিন খুলনা শহরেও তারুণ্যের সমাবেশ করেছে। আমি দেখলাম সেখানে সব ষাটোর্ধ মানুষ। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তারুণ্যের ডেফিনেশনটা কী একটু যদি বলতেন, তাহলে ভালো হতো।

তিনি বলেন, বিএনপি বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে। আজকেও তারা বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশে একটা বিশৃঙ্খলা তৈরি করা। আওয়ামী লীগ গণমানুষ থেকে গড়ে ওঠা রাজপথের দল। আমাদের নেতাকর্মীরা সমস্ত প্রতিকূলতার মধ্যে উজান ঠেলে এগিয়ে যাওয়ার দল। আমরা রাজপথে আছি, নির্বাচন পর্যন্ত রাজপথে থাকব এবং শেখ হাসিনাকে টানা পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসিয়ে তারপর আমরা ঘরে ফিরে যাব।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আমাদেরও বৈঠক হয়েছে। তথ্যমন্ত্রী হিসেবে আমার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবেও বৈঠক হয়েছে। তারা স্পষ্টত বলেছে যে, আমরা বাংলাদেশের সংবিধান ও আইন কানুন মেনেই এখানে যাতে একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হয় সেটিই চাই। তারা তত্ত্বাবধায়ক কিংবা নির্বাচনকালীন সরকার এসব কোনো কিছুর কথা বলেনি। দেশ চলবে আমাদের সংবিধান ও আইন অনুযায়ী। কারো প্রেসক্রিপশনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ চলবে না। উনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা, যার ধমনি-শিরায় বঙ্গবন্ধুর রক্ত স্রোত প্রবাহমান।

তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার যখন শুরু হয় তখন পৃথিবীর অনেক দেশের রাষ্ট্রপ্রধানকে দিয়ে এমনকি মার্কিন প্রেসিডেন্ট পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে দিয়েও ফোন করিয়েছিলেন এই বিচার বন্ধ করার জন্য। কিন্তু বিচার বন্ধ হয়নি, ফাঁসির রায় কার্যকর হয়েছে। শেখ হাসিনা সেগুলোর তোয়াক্কা করেননি।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি চেষ্টা করবে গণ্ডগোল লাগানোর জন্য। সেই সুযোগ আমরা তাদের দেব না। তবে কেউ রক্তচক্ষু দেখালে আওয়ামী লীগ জানে কী করতে হবে। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ একটি শক্তিশালী সংগঠন। বিএনপির মির্জা ফখরুল সাহেব কয়দিন পরপর চট্টগ্রামে আসছেন। এখানে এসে লাভ নেই। যদি বাড়াবাড়ি করেন আপনাদের আন্দোলন বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, ঢাকা ১৭ আসনের উপ-নির্বাচনে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের উপর কালিমা লেপনের উদ্দেশ্যে একজন প্রার্থী হিরো আলমের ওপর হামলা করা হয়েছে। তাদের অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেটি নিয়েও অনেকের কত মাতামাতি। যারা করেছে তারা দুষ্কৃতিকারী। তারা সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এটি করেছে। এটির আমরা নিন্দা জানাই। তবে অনেকে ঘুরে ঘুরে নির্বাচন করেন নির্বাচিত হওয়ার জন্য নয়। নির্বাচন করেন প্রচার পাওয়া এবং ঘটনাকে প্রমোট করার জন্য। যাতে আরও বেশি প্রচার পাওয়া যায়। সেটিও মাথায় রাখতে হবে।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ. জ. ম নাছির উদ্দিন, সহ-সভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, খোরশেদ আলম সুজন এবং সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ।

News24bd.tv/AA