খালাতো ভাইকে খুন করে অটোরিক্সা ছিনতাই

শেরপুরে অটোরিক্সা ছিনতাই, চালককে হত্যা

খালাতো ভাইকে খুন করে অটোরিক্সা ছিনতাই

শেরপুর প্রতিনিধি

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলায় চাঞ্চল্যকর অটোরিক্সা ছিনতাই এবং চালক আরব আলীকে (২১) ছুরিকাঘাতে হত্যা করে লাশ ঝিরিতে ফেলে রাখার ঘটনায় জড়িত মূল হত্যাকারী ৩ জন এবং অটোরিক্সা ক্রয়-বিক্রয়ে জড়িত আরও ৪ জনসহ মোট ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকালে শেরপুরের পুলিশ সুপার কার্যালয়ের হলরুমে আয়োজিত এক প্রেসব্রিফিং ওই চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের বিবরণ এবং ছিনতাই ও খুনের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের ঘটনা জানান পুলিশ সুপার মোনালিসা বেগম পিপিএম-সেবা।

গ্রেপ্তারদের মধ্যে মূল হত্যাকারী ৩ জন হচ্ছে ঝিনাইগাতী উপজেলার বনগাঁও পূর্বপাড়া গ্রামের শাহ আলীর ছেলে ও নিহত আরব আলীর খালাতো ভাই মো. শামীম মিয়া ওরফে হেদা (২৫), জুলগাঁও কোয়ারি রোড গ্রামের রজব আলীর ছেলে মো. হামিদ ওরফে সোজা (২৪) এবং বনগাঁও চকপাড়া গ্রামের মো. আব্দুল মজিদের ছেলে মো. সোহেল রানা (২৫)। এছাড়া ছিনতাই অটোরিক্সাসহ অন্যান্য মালামাল ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িতরা হচ্ছে শেরপুর শহরের নবীনগর মহল্লার আব্দুল করিমের ছেলে মো. বাবুল মিয়া (৩৫),), ঢাকলহাটি মহল্লার রফিকুল ইসলামের ছেলে মো. জাহিদ হাসান (২২) নাগপাড়া মহল্লার হাসমত আলীর ছেলে ফরহাদ আলী (২২) ও ঝিনাইগাতী উপজেলার জোলগাঁও কোয়ারি রোড গ্রামের জালাল আহমেদের ছেলে আবেদ আলী ওরফে ফকির (৩৭)।

প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার জানান, গত ৩০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬ টার দিকে ভাড়ার উদ্দেশ্যে ঝিনাইগাতী উপজেলার গৌরীপুর ইউনিয়নের বনগাঁও পূর্বপাড়া গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে আরব আলী তার ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা নিয়ে বের হয়। রাত পেরিয়ে গেলেও সে বাড়ি ফিরে না গেলে স্বজনরা তাকে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। এদিকে ঘটনার দুদিন পর ২ অক্টোবর সকালে ঝিনাইগাতী উপজেলার সীমান্তবর্তী রাংটিয়া দেওয়ানপাড়াস্থ একটি ঝিরি থেকে আলীর ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ঘটনায় নিহত অটোচালকের মা ছামেদা খাতুন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে ঝিনাইগাতী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

পরে পুলিশ এবং গোয়েন্দা সংস্থার ব্যাপক তদন্ত ও অনুসন্ধানে হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত নিহত আরব আলীর খালাতো ভাই শামীমসহ ৩ জনকে আটক করে। পরবর্তীতে তাদের জিজ্ঞাসাবাদকালে তারা অটোরিক্সা ছিনতাই ও হত্যাকান্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। পরে তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ছিনতাই অটোরিক্সাটি বিক্রির সঙ্গে জড়িত আরও ৪ জনকে আটক করে পুলিশ। একইসাথে ছিনতাই অটোরিক্সা, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি চাকু ও ভিকটিমের ব্যবহৃত কালো রংয়ের বাটন মোবাইল ফোন আলামত হিসেবে উদ্ধার করা হয়। ঘাতকরা এক সময় এলাকায় হাঁস-মুরগি চুরি করত এবং এরপর ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা চুরির সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়ে বলেও জানান পুলিশ সুপার।

ওই ঘটনায় ছিনতাই ও হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেইসাথে গ্রেপ্তারদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদানের জন্য বৃহস্পতিবার বিকেলে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

প্রেস ব্রিফিংকালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জুয়েল পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) মো. খোরশেদ আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সাইদুর রহমান, সহকারী পুলিশ সুপার (নালিতাবাড়ী সার্কেল) মো. দিদারুল ইসলামসহ জেলা পুলিশের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

news24bd.tv/তৌহিদ

এই রকম আরও টপিক