পাহাড়ে সব মৌসুমে মিলে কলা

সব মৌসুমে মিলে পাহাড়ি কলা

পাহাড়ে সব মৌসুমে মিলে কলা

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

পাহাড়ের বুক জুড়ে সাজানো কলা বাগান। সবুজ পাতার আড়ালে ঝুলে থাকে কাঁচা-পাকা কলার ছড়ি প্রতি আকর্ষণ সবার। পাহাড়ে উৎপাদিত এসব কলা দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি খেতেও মজাদার। এসব কলায় রয়েছে ব্যাপক পুষ্টিগুণ।

পাহাড়ি এলাকায় কলার চাষাবাদ হয় বছরজুড়ে। জুমচাষের পাশাপাশি কলার চাষও পাহাড়িদের আদিম পেশা। পার্বত্যাঞ্চলে ১২মাসেই কলা চাষের ফল পাওয়া যায়।

তাই পাহাড়ে কলা মিলে বছরজুড়ে সব মৌসুমে।

বর্তমানে স্থানীয়দের কলাচাষে সহায়তা দিচ্ছে সরকারের কৃষি বিভাগ। ফলে কলার ফলন বেড়েছে আগের চেয়ে অধিক হারে। তবে দুর্গম এলাকায় বাজারজাতে পর্যাপ্ত সুবিধা গড়ে না উঠায় অনেক সময় উৎপাদিত কলার ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষকরা।

স্থানীয় কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, রাঙামাটি ১০টি উপজেলা মিলে চলতি বছর কলাচাষ হয়েছে-২০.৮৪ হেক্টর জমিতে। এর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছে ৩ লক্ষ ২৭হাজার ১৩০। জেলা সদর, বরকল, বিলাইছড়ি, নানিয়াচর, লংগদু, জুরাছড়ি, কাপ্তাই, কাউখালী, বাঘাইছড়ি উপজেলা ও সাজেক ইউনিয়নে, কলাচাষের খ্যাতি অনেক। সারা বছর এসব উপজেলায় বাংলা, আনাজি, সবরি, চাম্পা, বরী, নেপালি, সাগার ও সূর্যমুখি ও নেপালি কলার বাম্পার উৎপাদন হয়।  

একইভাবে অপর দুই পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানেও কলা ব্যাপক উৎপাদন হয়। এসব পাহাড়ি কলাগুলো প্রত্যন্ত উপজেলা থেকে লঞ্চ ও ক্যান্ট্রি বোটে করে নিয়ে আসা হয় রাঙামাটি শহরে। পরে জীপ, ট্রাক, পিকআপে বোঝাই করে জেলা শহর ও চট্টগ্রামসহ বাইরে নিয়ে যান পাইকারি ব্যবসায়ীরা।  

এছাড়া প্রতি সাপ্তাহিক হাটে কলার হাট বসে রাঙামাটিতে। প্রতি হাটবার বিক্রির জন্য কলা নিয়ে যান রাঙামাটি সদরের কুতুবছড়ি, বন্দুকভাঙ্গা, বালুখালী, সাপছড়ি, কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া, নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাট, ঘিলাছড়ি, নানিয়ারচর, সাবেক্ষ্যং এবং খাগড়াছড়ি মহালছড়ি উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের বহু কলা চাষি। এসব কলার ছড়ি পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে। এসব কলার চাহিদা সমতলে বেশি। সাপ্তাহিক হাটের দিন বেচাকেনা হয় লাখ লাখ টাকার পাহাড়ি কলা। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। তবে কৃষিবিভাগ বলছে, সংরক্ষনের অভাবে কষ্টে উৎপাদিত কলা পাহাড়ে নষ্ট হয়ে যায়।  তাই কলার নায্যমূল্য পাচ্ছে না চাষীরা।

রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শান্তিময় চাকমা জানান,  পাহাড়ে এখন আধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তিতে কলার চাষ হচ্ছে। তাই পাহাড়ে কলার উৎপাদন বেড়েছে। কিন্তু কলা সংরক্ষনে কোন ব্যবস্থা না থাকায় চাষীরা ক্ষতির সন্মুখীন হচ্ছেন। হিমাগার স্থাপনের মাধ্যমে কলা চাষের সম্ভাবনাময় স্থান হিসেবে পরিচিতি পাবে তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান। এমনটাই আশা কৃষিবিদদের।  

 

NEWS24▐ কামরুল

সম্পর্কিত খবর