দোয়া কবুল হওয়ার ক্ষেত্রে কারো সুপারিশ কি প্রয়োজন

প্রতীকী ছবি

দোয়া কবুল হওয়ার ক্ষেত্রে কারো সুপারিশ কি প্রয়োজন

 উম্মে আহমাদ ফারজানা

মক্কার মূর্তি পূজকরা বলত, ‘আমরা তাদের (প্রতিমাগুলোর) উপাসনা শুধু এ উদ্দেশ্য করি যে  তারা যেন আমাদের আল্লাহর নিকটবর্তী করে দেয়। ’ (সুরা : জুমার, আয়াত : ৩)

ইসলামের শিক্ষা সম্পূর্ণ এর বিপরীত। ইসলামের শিক্ষা হলো, আল্লাহ এক-একক ও অদ্বিতীয় উপাস্য। তিনি সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী।

তাঁর ক্ষমতার প্রয়োগ, বান্দার প্রার্থনা শ্রবণ ও চাহিদা পূরণে সহায়ক শক্তির প্রয়োজন হয় না। এটা তাঁর একক কর্তৃত্ব। সুতরাং তাঁর অনুমতি ছাড়া কেউ তাঁর কাছে কারো জন্য সুপারিশ করতে পারবে না। মহান আল্লাহ বলেন, ‘কে আছে এমন, যে তাঁর অনুমতি ছাড়া তাঁর কাছে সুপারিশ করবে?’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ২৫৫)
মানবজাতির সবল ও দুর্বলের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী বা সুপারিশকারীরা মাধ্যম হিসেবে কাজ করে থাকেন।

এটা মানুষের মানবিক দুর্বলতা। কেননা তারা কেউই স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। প্রত্যেকে একে অপরের প্রতি মুখাপেক্ষী ও নির্ভরশীল। ফলে উভয় অংশের নিকট মাধ্যমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান স্বীকৃত।
এটা ক্ষমতার বিভাজনের একটি পর্যায়। কিন্তু মহান আল্লাহর কাছে সব বান্দার প্রার্থনা করার সুযোগ আছে। যে কেউ তাঁকে ডাকলে তিনি তার ডাকে সাড়া দেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‌‘....প্রার্থনাকারী যখন আমার কাছে প্রার্থনা করে আমি তার প্রার্থনায় সাড়া দিই...। ’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ১৮৬)

তাই প্রত্যেক মুমিনের এই বিশ্বাস থাকতে হবে যে মহান আল্লাহ মাধ্যমবিহীন দোয়া, ইবাদত ও আরজি কবুলকারী।

তবে যেসব বিষয় বান্দার এখতিয়ারভুক্ত সেসব বিষয়ে আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে একে অন্যের সহযোগিতা চাওয়া বৈধ। যেমন : রোগীর সেবাদান, চাকরি, ব্যবসার লাইসেন্স, নৌকায় নদী পারাপার ইত্যাদি।

কিন্তু যেসব বিষয় আল্লাহর এখতিয়ারভুক্ত যেমন : বান্দার সন্তান লাভ, সমস্যা দূর করা, বিপদ মুক্তি, আখিরাতে নাজাতের ব্যবস্থা ইত্যাদি বিষয়ে নিজে আল্লাহর কাছে দোয়া করার পাশাপাশি জীবিত কোনো নেককার মানুষের কাছে দোয়া চাওয়া যেতে পারে। তবে জীবিত বা মৃত কোনো পীর, আউলিয়া, বুজুর্গ ব্যক্তি সমস্যা উত্তোরণে ক্ষমতাসম্পন্ন মনে করা অথবা আল্লাহকে ক্ষমতাবান মেনে নিয়ে তাদের কাছে মাধ্যম হিসেবে শরণাপন্ন হওয়া শিরক।
 

এই রকম আরও টপিক