মিয়ানমারে ৩ দিনে বিদ্রোহীদের হামলায় ৬২ সেনা নিহত

সংগৃহীত ছবি

মিয়ানমারে ৩ দিনে বিদ্রোহীদের হামলায় ৬২ সেনা নিহত

অনলাইন ডেস্ক

মিয়ানমারে পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ) এবং জাতিগত সশস্ত্র সংগঠনগুলোর (ইএও) হামলায় গত ৩ দিনে সামরিক জান্তা বাহিনীর অন্তত ৬২ সেনা নিহত হয়েছে। এছাড়া সামরিক বাহিনীর বেশ কয়েকটি ঘাাঁটিও দখল করে নিয়েছে বিদ্রোহীরা।

সামরিক বাহিনীর হাতছাড়া হওয়া ঘাঁটিগুলো সাগাইং, ম্যাগওয়ে, মান্দালয়, কাচিন ও কারেন রাজ্যে অবস্থিত।

সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতী

প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমারজুড়ে হামলা জোরদার করেছে দেশটির জাতিগত বিদ্রোহীরা। এতে গত তিনদিনে পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ) ও এথনিক আর্মড অর্গানাইজেশনসের (ইএও) হামলায় ৬২ জন সেনা নিহত হয়েছে। এছাড়াও বেশ কিছু সামরিক ঘাঁটিও দখল করেছে বিদ্রোহীরা।

স্থানীয় কাচিন মিডিয়া জানায়, শক্তিশালী জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠী কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স আর্মি (কেআইএ) রোববার মিয়ানমারের জেড হাব হাপাকান্ট টাউনশিপ, কাচিন রাজ্যের নান্ট টাইন গ্রামে আরেকটি জান্তা ঘাঁটি দখল করে নিয়েছে।

কয়েকদিন ধরে ঘাঁটি ঘেরাও করার পর কেআইএ সেনারা ঘাঁটিটি দখল করে নেয়। অভিযানের সময় ঘাঁটিতে আটজন জান্তা সেনার মরদেহ পাওয়া যায়।  

গত ৬ জানুয়ারি কেআইএ হপাকান্তের নান্ট টাইন এবং ওয়াই খার গ্রামে শাসকদের ঘাঁটিতে একযোগে অভিযান শুরু করে। কেআইএ সেনার ২০ জানুয়ারি ওয়াই খার গ্রামের পাহাড়ের চূড়ার ২টি ঘাঁটি এবং একটি পুলিশ স্টেশন দখল করে।

কেআইএ গত শুক্রবার কাচিন রাজ্যের মানসি টাউনশিপে জান্তার আরেকটি ঘাঁটি দখল করেছে।

তবে জান্তার পক্ষ থেকে এখনো এ ইস্যুতে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেওয়া হয়নি। তবে ইরাবতী জানিয়েছে, পিডিএফ এবং ইআও’র গণমাধ্যম শাখার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে এ সংবাদমাধ্যমটির।

দুই বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতারা জানান, গত বছর মিয়ানমারের সাগাইং, ম্যাগউই, মান্দালয় জেলা এবং কাচিন ও কারেন প্রদেশের বেশ কিছু এলাকা দখল করে নিয়েছিল পিডিএফ এবং ইআও জোট। সেই এলাকাগুলো ফের দখল করার জন্য জানুয়ারির শেষদিকে অভিযান শুরু করেছিল জান্তা এবং জান্তা সমর্থক সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো।

সে অভিযানে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর হাত থেকে কিছু এলাকা পুনর্দখল করতেও সক্ষম হয়েছিল জান্তা এবং জান্তা সমর্থক একাধিক সশস্ত্র গোষ্ঠী। কিন্তু গত তিন দিনে জান্তার পুনর্দখল করা অধিকাংশ এলাকা থেকে সেনা সদস্য ও জান্তাপন্থিদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পিডিএফ ও ইআও’র নেতারা।

সবচেয়ে বেশি সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন মান্দালয় জেলার সান পিয়া এবং কারেন প্রদেশের থান্ডুয়াঙ্গি শহরে। পিডিএফ জানিয়েছে, এ দুই এলাকায় জান্তা-বিদ্রোহী সংঘাতে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন অন্তত ৪০ জন সেনা।

এছাড়া কারেন প্রদেশের একটি রত্নপাথরের পাথরের খনিও বর্তমানে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর হাতে চলে গেছে।

মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে গত ৫ দশকেরও বেশি সময় ধরে দ্বন্দ্বসংঘাত চলছে বিভিন্ন সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর। তবে এ লড়াই নতুন গতি পেয়েছে ২০২১ সালে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর।

২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সুচিকে হটিয়ে জাতীয় ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লেইং এ অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন।

news24bd.tv/কেআই