দিল্লিতে সহিংসতার ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৩ জনের মৃত্যু ও অনন্ত ১০০ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে পাথর ছোড়া, অগ্নিসংযোগ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। দোকানে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ভজনপুরাপ রাস্তায় হাতে লাঠি নিয়ে ঘোরাফেরা করতে দেখা গেছে বহু মানুষকে।
সোমবারও (১৪ ফেব্রুয়ারি) চাঁদবাগ এবং কারোয়াল নগর এলাকাতেও একই ছবি দেখা গেছে। এ দুটি জায়গায় এদিন নাগরিকত্ব আইনের পক্ষে ও বিপক্ষে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সেনা নামানোর জল্পনা খারিজ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
তাদের তরফে বলা হয়েছে, যথেষ্ঠ পরিমাণে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ শান্তি রক্ষার আবেদন জানিয়ে বলেছেন, গুজব ছড়ানো বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে বৈঠকের পর এমনটাই জানা গেছে।
সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দিল্লি পৌঁছানোর কয়েক ঘণ্টা আগেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজধানীর রাজপথ।
উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকজন হাতে লাঠি নিয়ে একে অপরের ওপর হামলা চালায় ভজনপুরায়।
সংলগ্ন এলাকা চাঁদবাগেও পদক্ষেপ নিতে রাজি হননি সেখানে মোতায়েন থাকা অল্প সংখ্যক পুলিশ কর্মী। সেখানে পাথর ছোড়ার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একাধিক দোকান। সোমবার দিনগত রাতে বিল্ডিং থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা গেছে।
গোকুলপুরীতে টায়ারের বাজারে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে হাতে অস্ত্র এবং লাঠি, রড নিয়ে হামলা চালানো হয়।
কোনো রকম প্ররোচণামূলক মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
বলা হয়েছে, যাতে কোনো অসামাজিক ব্যক্তি পরিস্থিতির ফায়দা তুলতে না পারে তার জন্য উত্তরপ্রদেশ এবং হরিয়ানা ও দিল্লির সীমানার দিকে নজর রাখা হচ্ছে।
নতুন করে উত্তরপূর্ব দিল্লির কারোয়াল নগর, মৌজপুর, ভজনপুরা, বিজয় পার্ক এবং যমুনা বিহার থেকে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। মৌজপুরের মতো সংলগ্ন এলাকায় পাথর ছোড়ার খবর পাওয়া গেছে।
জরুরি ফোনের জন্য আরও ব্যবস্থা করেছে দমকল বাহিনী। সোমবার তিনজন দমকলকর্মী আহত হওয়ার পর, সেখানেও বেশ কয়েকবার ফোন ধরেননি কেউই। একদল ব্যক্তি, দমকলের একটি ইঞ্জিনে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং আরেকটিতে পাথর ছোড়ে।
মৌজপুরে, মঙ্গলবার সকালে ই-রিকশায় যাচ্ছিলেন কয়েকজন, তাদের সামগ্রিক লুট করে নেওয়া হয়েছে। তাদের মারধরও করা হয়। গোকুলপুরিতে সোমবার রাতে একটি টায়ারের বাজারে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার কথা তুলেছেন তিনি এবং যাতে পুলিশ কাজ করে, সেই মতো ব্যবস্থা নিতেও আর্জি জানিয়েছেন।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের আগে অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, শীর্ষমহল থেকে নির্দেশ পাওয়ায়, কোনো কাজ করছেন না পুলিশ কর্মীরা। আমি অমিত শাহজীর সামনে এই বিষয়টি তুলে ধরব। শীর্ষ মহল থেকে নির্দেশ না পেলে, তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারে না, কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হবে নাকি, লাঠিচার্জ করা হবে।
(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)