চোখ উপরে, হাত-পা কেটে ৩৫ কাঠুরিয়াকে হত্যা করা হয়
২৩বছরেও বিচার হয়নি

চোখ উপরে, হাত-পা কেটে ৩৫ কাঠুরিয়াকে হত্যা করা হয়

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

দীর্ঘ ২৩ বছরেও বিচার হয়নি রাঙামাটির লংগদু উপজেলার পাকুয়াখালীর ৩৫ কাঠুরিয়া হত্যাকাণ্ডের। বর্বর এ হত্যাকাণ্ডের কোনো বিচার না পেয়ে হতাশায় নিমজ্জিত নিহতদের পরিবারগুলো। এ হত্যার বিচার হবে কিনা তা নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা।

অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘ বছর ধরে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের ধারা সংগঠিত হত্যাকাণ্ডগুলোর বিচার না হওয়ার কারণে এখনো পাহাড়ে রক্ত ঝড়ছে।

এ সব সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে পার্বত্যাঞ্চলে কখনো শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে না বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ নেতারা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ৯ সেপ্টেম্বর পার্বত্যাঞ্চলের জন্য সেই অন্যতম গণহত্যা দিবস। যা এ অঞ্চলের মানুষের
কাছে ‘‘পাকুয়াখালী ট্রাজেডি দিবস’’ নামে পরিচিত। এটি পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাসের সবচেয়ে শোকাবহ এক কালোদিন।

 
১৯৯৬ সালে ৯ সেপ্টেম্বর তৎকালীন শান্তি বাহিনী নামে (বর্তমান পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি) বিচ্ছিন্নতাবাদী উপজাতিদের একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ রাঙামাটি লংগদুর উপজেলার ৩৫ জন কাঠুরিয়াকে ব্যবসায়িক কাজে ডেকে নিয়ে যায় পাকুয়াখালীর গহীন অরণ্যে। জঙ্গলে পৌঁছানোর পর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা তাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। পরে কাঠুরিয়াদের হাত-পা-চোখ বেঁধে নির্যাতন করে হত্যা করে। সেসময় কাঠুরিয়াদের মধ্য থেকে ইউনুছ নামে একজন পালাতে সক্ষম হন। সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের চোখের আড়ালে পালিয়ে এসে যৌথবাহিনীকে বিষয়টি অবগত করে। একদিন পর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলের দিকে রওনা করে সেনা সদস্যরা। কিন্তু তার আগেই শান্তিবাহিনীর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা কাঠুরিয়াদের চোখ উপরে, হাত পা কেটে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করে পালিয়ে যায়।


আরও পড়ুন: 

হাসপাতালে নেওয়ার পথে করোনা আক্রান্ত তরুণীকে ধর্ষণ করল অ্যাম্বুলেন্স চালক


পরে সেনাবাহিনী পাকুয়াখালী থেকে ২৮ জন মানুষের ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করে। কিন্তু তাদের মধ্যে বাকি সাতজন কাঠুরিয়ার কোনো হদিস এখনো পাওয়া যায়নি। এ ঘটনা সেসময় ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করলেও বিচার পায়নি এসব কাঠুরিয়াদের পরিবারগুলো।

সেদিনকে স্মরণ রেখে বুধবার ওই ৩৫কাঠুরিয় কাঠুরিয়া হত্যা দিবস পালন করে রাঙামাটির লংগদু উপজেলা বাসিন্দারা। আয়োজন করা হয় আলোচনা সভা দোয়া মাহাফিল ও গণ কবর জিয়ারত। একই সাথে এ ঘটনার সুষ্টু তদন্ত ও দোষীদের বিচার, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পূর্নাবসনের দাবি জানান স্থানীয় বাঙালীরা।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর