কথিত ভাই-বোনকে ১০০টি করে জুতাপেটা করেছেন জুতার মালা পরিয়ে এলাকায় ঘোরানো ঘটনা ঘটেছে। মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায় এমন ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সালিসকারী তিনজনকে গত রোববার গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে আদালতের মাধ্যমে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়।
পুলিশ ও এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সদর উপজেলার এক ব্যক্তিকে (৪০) রাজৈর উপজেলার বাজিতপুর ইউনিয়নের এক ব্যক্তির স্ত্রী (৫০) ‘ধর্মের ভাই’ বানান। পরে তাঁরা ‘ধর্ম ভাই-বোন’ হিসেবে উভয়ের বাড়িতে আসা–যাওয়া করেন।
১৯ এপ্রিল সকাল নয়টার দিকে ওই ভাই ধর্মের বোনের বাড়িতে আসেন।
একপর্যায়ে বাড়ির উঠানে সালিস বসানো হয়। সালিসে মাতবরেরা কারও বক্তব্য না শুনে তাঁদের ইচ্ছেমতো রায় দেন।
রায়ে ওই দুজনকে ১০০টি করে জুতাপেটা, জুতার মালা পরিয়ে সারা এলাকা ঘোরানো এবং ওই বোনের ঘরে তালা ঝুলিয়ে তাঁকে এলাকা থেকে বের করার রায় দেওয়া হয়।
আসছে কঠিন শাস্তি, মাস্ক না পরলে ‘বেতের বাড়ি’
রাজশাহীতে আড়তে গিয়ে কেজিতে তরমুজ বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা দিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট
তবে রায় ঘোষণার পরপরই ইমরান ফকির, কালু ফকির, আজিজুলসহ ৮-১০ জন এলাকাবাসীর সামনে ওই দুজনকে জুতা দিয়ে ১০০টি বাড়ি দেন। পরে জুতার মালা পরিয়ে তাঁদের সারা এলাকা ঘোরানো হয়।
এ ঘটনায় শনিবার রাতে সালিসকারী কালু ফকির, ইমরান ফকির, শামীম ফকিরসহ ৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৮-১০ জনকে আসামি করে রাজৈর থানায় একটি মামলা করেন ভুক্তভোগীর স্বামী।
পরে এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সালিসকারী কালু ফকির, আজিজুল ফকির ও শাকিব আকনকে রোববার গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
নির্যাতনের শিকার ওই নারী বলেন, ‘ওরা আমাকে ও আমার ভাইকে জোর করে বাইন্দা গ্রামের সবার সামনে ১০০ জুতার বাড়ি দিছে, জুতার মালা পরাই সারা গ্রাম ঘুরাইছে। আবার মোর ঘরে তালা দিছে।
ওই নারীর স্বামী বলেন, ‘আমি দীর্ঘ ৩৬ বছর ধরে আমার স্ত্রীকে নিয়ে ঘরসংসার করছি। তার চরিত্র খারাপ হলে আমিই আগে জানতাম। যদি আমার স্ত্রী কোনো অপরাধ করে থাকে, তাহলে বিচার করতাম। ওনারা কেন আমার স্ত্রী ও আমার আত্মীয়কে জুতাপেটা করে জুতার মালা পরিয়ে এলাকা ঘোরাল?
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য তারা মিয়া ব্যাপারী বলেন, ‘ধর্মের ভাই-বোনকে কথিত বিচারের নামে একটি প্রহসনের সালিস বসানো হয়। সালিসে ওই নারীর কোনো কথা না শুনে কালু ফকির, ইমরান ফকির, শামীম ফকির, রানা ফকিররা নিজেদের ইচ্ছেমতো রায় ঘোষণা করেন।
রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. সাদিক বলেন, ‘ঘটনা শোনার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা মামলা নিয়েছি। এক দিনের মধ্যে অভিযান চালিয়ে এ ঘটনার মূল হোতা কালু ফকিরসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
news24bd.tv তৌহিদ