হুইপ ও তার ছেলে শারুনকে গ্রেফতারের দাবিতে আল্টিমেটাম

হুইপ ও তার ছেলে শারুনকে গ্রেফতারের দাবিতে আল্টিমেটাম

অনলাইন ডেস্ক

বীর মুক্তিযোদ্ধা সামছুদ্দিন আহম্মদকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে জাতীয় সংসদের হুইপ ও চট্টগ্রাম-১২ আসনের সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী এবং তার ছেলে নাজমুল করিম চৌধুরী শারুনকে গ্রেফতার দাবিতে এক সপ্তাহের আল্টিমেটাম দিয়েছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।

আজ রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে এই ঘোষণা দেন সংগঠনটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল।

মানববন্ধনে আমিনুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সামছুদ্দিন আহম্মদকে হত্যার হুমকিদাতা হুইপ সামশুল হক চৌধুরীকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার ও সংসদ সদস্যপদ শূন্য ঘোষণাসহ দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, জীবন বাজি রেখে দেশকে শত্রুমুক্ত করতে অস্ত্র হাতে নিয়েছিলেন সামছুদ্দিন আহম্মদ।

দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ করে দেশকে শত্রুমুক্ত করেছিলেন। চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার এবং আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন এই জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদ। ৮০ বছর বয়সী সেই মুক্তিযোদ্ধাকে লুঙ্গি খুলে পেটানোর হুমকি দিয়েছেন জাতীয় সংসদের হুইপ ও চট্টগ্রাম-১২ আসনের সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী ও তার ভাই মোহাম্মদ আলী নবাব। শুধু তাই নয়, তাকে লুঙ্গি খুলে বাজারে ঘোরানোরও হুমকি দেন।

আমিনুল হক আরও বলেন, হুইপ সামশুল হক, তার ভাই এবং তার ছেলে শারুনের অপকর্মের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় আক্রমণাত্মক হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে তাকে। এই বয়সে এসে এভাবে অপমাণিত হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন বীর মুক্তিযোদ্ধ সামছুদ্দিন আহম্মদ। হুইপ ও তার পরিবারের লোকজন আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা ও সাধারণ মানুষদের ওপর এভাবে প্রতিনিয়ত নির্যাতন নিপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা সামছুদ্দিন আহম্মদকে হুইপ, তার ভাই মোহাম্মদ আলী নবাব ও তার ছেলে শারুন প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যার হুমকি দেওয়ার মাধ্যমে প্রমাণিত হয় হুইপ সামশুল হক চৌধুরী কখনোই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করেন না। তিনি স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন।

মানববন্ধনে আমিনুল হক আরও বলেন, সামশুল হক চৌধুরী তার আসনে দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি করছেন। যে অপকর্ম করছেন তার প্রতিবাদে আমরা  এখানে দাঁড়িয়েছি। এই সামশুল হক চৌধুরী গিরগিটির মতো, যখন যে দল ক্ষমতায় এসেছে তিনি তখন সেই দলের কর্মী হয়ে খেলা দেখিয়েছেন। আজকে পটিয়ার জনগণ জিম্মি হয়ে পড়েছে। সেখানে যারা প্রকৃত আওয়ামী লীগ করেন তাদের তিনি রাজনীতিতে কোনো সুযোগ দেন না। তাদের বিভিন্নভাবে নির্যাতন করেন। আমরা দুঃখের সঙ্গে বলতে চাই, সামশুল হক এই সমাজের একজন আবর্জনা। এই আবর্জনা জাতীয় সংসদে থাকতে পারে না। সমাজে থাকতে পারে না। এই সামশুল হক নামক আবর্জনাকে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ প্রতিরোধ করবে। আমরা বাংলাদেশের সাধারণ জনগণকে নিয়ে এই দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতির দোষর সামশুল হক চৌধুরীকে অতিদ্রুত সমাজ থেকে বিতাড়িত করবো।

তিনি বলেন, এই সামশুল হক ও তার পুত্র শারুনকে যদি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে গ্রেফতার করা না হয় তাহলে আমরা সারাদেশে একযোগে আরও কঠোর কর্মসূচি দেব। প্রয়োজন হলে আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে স্মারকলিপি দেবো। আমরা তাকে বহিষ্কার করার জন্য যত প্রকার কর্মসূচি আছে বাস্তবায়ন করবো। সামশুল হক ও তার পুত্র শারুনের বিরুদ্ধে আমরা রাজপথে আছি, তাদেরকে দাঁতভাঙা জবাব দেবো।   

মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আরও বলেন, আপনাদের জানাতে চাই, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন অপকর্মের দায়ে ৩৭ জন এমপিকে অবসারণ করে আইনের আওতায় এনেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী এখন পর্যন্ত একজন এমপিকেও বহিষ্কার করেননি। আজকে আমরা যাদের জন্য স্বাধীন দেশ পেয়েছি, তাদের অপমান করায়, আপনি এখনও এই দুবৃত্তদের বিচারের আওতায় আনেননি। অবিলম্বে তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।

news24bd.tv/এমিজান্নাত