আতশবাজি জলকানি। পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে হাজারো প্রদীপের আলো। আর পূর্ণিমার আকাশে রঙ, বেরঙের ফানুসের সমাহার। বাতাসের সাথে তাল মিলিয়েছে সাধু, সাধু, সাধু ধ্বনি।
সব মিলে পার্বত্যাঞ্চলে এক অন্যরহম পরিবেশে পালিত হয়েছে প্রবারণা পূর্ণিমা। একই সাথে উৎসব মুখর হয়ে উঠেছিল পাহাড়ি জনপদ।ফানুস উড়িয়ে উৎসবে উচ্ছ্বসিত পার্বত্যাঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীরা।
বুধবার ছিল বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব প্রবরণা পূর্ণিমা।
দিনটি উপলক্ষে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বিহারগুলোতে প্রস্তুতির আয়োজন ছিল মাসব্যাপী। হরেক রঙে বিহার সাজ-সজ্জাসহ
রঙ-বেরঙের ফানুস তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীরা ছেলে মেয়েরা। গেলো বছরের চেয়ে এবার আয়োজনেও ছিল ভিন্নতা।
আরও পড়ুন:
টাকা না দেওয়ায় নানাকে হত্যা করে ঘরেই পুঁতে রাখে নাতি
আমরা আরও বেশি সতর্ক: ওবায়দুল কাদের
সকাল থেকে বৌদ্ধ বিহারগুলোতে ছিল নানা আচার অনুষ্ঠান।
দেশে সুখ, শান্তি, মঙ্গল প্রার্থনা ও পরস্পর ক্ষমা প্রদর্শনের প্রার্থনার মধ্যদিয়ে রাঙামাটি রাজবন বিহার ও সদর উপজেলার যমচুগ বনাশ্রম ভাবনা কেন্দ্র, তবলছড়ি আনন্দ বিহারসহ বিভিন্ন শাখা বন বিহারে উদযাপিত হয়েছে বৌদ্ধদের অন্যতম প্রবারণা পূর্ণিমা। একই সাথে বুদ্ধ পতাকা উত্তোলন, পঞ্চশীল প্রার্থনা, বুদ্ধমুর্তি দান, সংঘদান, অষ্টপরিষ্কার দান, পিন্ডদানসহ নানা কর্মসূচি পালিত হয় বিহারে বিহারে।
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী পুণ্যার্থীদের সাধু সাধু ধ্বনীর মধ্যদিয়ে মুখর হয়ে উঠেছে রাজবন বিহার। দিন ব্যাপী প্রার্থনা। প্রার্থনায় যোগ দেন, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী, রাঙামাটি রাজবন বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি গৌতম দেওয়ান, ৬নং বালুখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিজয়গিরি চাকমা ও সাবেক উপমন্ত্রী মনিস্বপন দেওয়ান।
এসময় রাঙামাটি রাজবন বিহারের অধ্যক্ষ ও আবাসিক প্রধান ভদন্ত শ্রীমৎ প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির বলেন, বনভান্তের আদর্শকে অনুসরণ করো । একে-অপরের প্রতি হিংসায় লিপ্ত না হয়না। সৎ চিন্তা ও সৎ কুশলকর্ম সম্পাদন পূর্বক নিজেকে আত্মসংযম রাখার চেষ্টা করো। ভগবান বুদ্ধের নিয়ম-নীতি পালনে মধ্যে দিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। একই সাথে দেশ থেকে করোনা মহামারি বিদায়ের জন্য বিশেষ প্রার্থনা করেন তিনি।
এদিকে সন্ধ্যা নামতে রাঙামাটি রাজ বন বিহারের শুরু হয় হাজার প্রদীপ প্রজ্জালন কর্মসূচি। পূণিমার আকাশে বাহারি রঙের ফানুস উড়িয়ে আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীরা।
অন্যদিকে অর্থাৎ বৃহস্পতিবার তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সহ মাসব্যাপী শুরু হচ্ছে কঠিন চীবর দানোৎসব।
news24bd.tv/তৌহিদ