বড়পুকুরিয়ার তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ

বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র।

বড়পুকুরিয়ার তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ

দিনাজপুর প্রতিনিধি

কয়লার অভাবে অবশেষে বন্ধ হয়ে গেছে ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন দেশের একমাত্র কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন। পার্শ্ববর্তী কয়লা খনি বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানী লিমিটেড প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কয়লা সরবরাহ করতে ব্যর্থ হওয়ায় রোববার রাত ১০টা ২০ মিনিটে উৎপাদন বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষ।

বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানান, ৫২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন এই বিদুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের তিনটি ইউনিট চালু রাখতে দৈনিক কয়লার প্রয়োজন ৫ হাজার ২শ’ মেট্রিক টন কয়লা। কিন্তু বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি চলতি জুলাই মাস থেকে কয়লার সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ায় বন্ধ হয়ে যায় ১২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন একটি ইউনিট।

অপর ১২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন আরেকটি ইউনিট এর আগে থেকেই বন্ধ রাখা হয়। ফলে ২৭৫ মেগাওয়াট বিদুৎ উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন তৃতীয় ইউনিটটি কোনো মতে চালু রাখা হয়েছিল। কিন্তু কয়লা সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রোববার রাত থেকে তৃতীয় ইউনিটটিরও উৎপাদন বন্ধ করতে বাধ্য হতে হয়। ফলে ৫২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন রোববার রাত থেকেই পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।

উল্লেখ্য, গত ২০ জুন খনি কর্তৃপক্ষ পিডিবিকে নিশ্চিত করে খনির কোল ইয়ার্ডে ১ লাখ ৮০ হাজার টন কয়লা মজুদ রয়েছে। কিন্তু খনি কর্তৃপক্ষ গত ৪/৫ দিন আগে পিডিবিকে জানিয়ে দেয়, খনির কোল ইয়ার্ডে কয়লার মজুদ শেষ পর্যায়ে। খনির কোল ইয়ার্ডে বর্তমানে দেড় লাখ মেট্রিক টন কয়লা মজুদ থাকার কথা থাকলেও আছে ৭ থেকে ৮ হাজার টন কয়লা। বাকী ১ লাখ ৪২ হাজার মেট্রিক টন কয়লার কোনো হদিস নেই। এই ঘটনায় খনির মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) নুরুজ্জামান চৌধুরী ও উপ মহাব্যবস্থাপক (স্টোর) খালেদুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করে।

অপরদিকে নতুন একটি ফেস চালুর প্রক্রিয়ারধীন থাকার কারণে জুনের ১৮ তারিখ থেকে কয়লা খনির কয়লা উত্তলন বন্ধ থাকলেও তা নতুন করে চালু হতে সময় লাগবে আরো এক মাস।

এছাড়াও ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহমদকে অপসারণ করে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানের দপ্তরে সংযুক্ত করা হয় এবং মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন ও কোম্পানী সচিব) আবুল কাশেম প্রধানিয়াকে পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড সিরাজগঞ্জে তাৎক্ষনিক বদলি করা হয়। বড়পুকুরিয়া খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (অতিরিক্ত দায়িত্ব) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পেট্রোবাংলার পরিচালক আইয়ুব খানকে। ঘটনায় গঠন করা হয়েছে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি।  

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/পলাশ/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর