কার্পেটিংয়ের সপ্তাহ না যেতেই উঠে গেল পিচ!

সপ্তাহ না যেতেই উঠে গেল রাস্তার পিচ!

কার্পেটিংয়ের সপ্তাহ না যেতেই উঠে গেল পিচ!

নাটোর প্রতিনিধি

নাটোরের সিংড়ায় খরমকুড়ি হতে শাহবাজপুর পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার পাকা সড়ক নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্ণীতির অভিযোগ উঠেছে। সড়কের কার্পেটিংয়ের এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই উঠতে শুরু করেছে পিচ। স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের পুরনো নির্মান সামগ্রী ব্যবহার করে নামকাওয়াস্তে রাস্তার কাজ করা হচ্ছে। পাথরে পিচ নেই বললেই চলে।

পাথরের পরিবর্তে ইটের খোয়া ব্যবহার হচ্ছে, তাও পুরাতন। তাছাড়া রাস্তার অধিকাংশ জায়গায় ইটের সাইডব্লক নেই। তড়িঘড়ি করে যত্রতত্র কার্পেটিং করায় সপ্তাহ না যেতেই পাথর উঠে যাচ্ছে।

উপজেলা এলজিইডি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে সিংড়া উপজেলা গ্রামীণ রাস্তা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় খরমকুড়ি হতে শাহবাজপুর পর্যন্ত ১কোটি ২ লক্ষ টাকা চুক্তি মূল্যে দেড় কিলোমিটার রাস্তা পাকাকরণের কাজ পায় নাটোরের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এ কে এন্টার প্রাইজ।

শুক্রবার সকাল ১১ টায় সরেজমিন খরমকুড়ি গিয়ে দেখা যায়, রাস্তা ভালোভাবে পরিষ্কার না করেই ধুলা-ময়লার উপর কার্পেটিং কাজ করা হচ্ছে। আর কার্পেটিং কাজে ব্যবহৃত পাথরে কোন পিচ মিশ্রিত নেই বললেই চলে। রাস্তার অধিকাংশ স্থানেই ইটের সাইডব্লক নেই। কিছু কিছু জায়গায় ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের পুরাতন ইট। ২৫ মিলি কার্পেটিংয়ের পরিবর্তে ১৫ থেকে ২০ মিলিতে রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। আর তড়িঘড়ি করে যত্রতত্র কার্পেটিং করায় এরইমধ্যে অনেক জায়গার কার্পেটিং উঠে গেছে।

news24bd.tv

এলাকাবাসী জানায়, ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির সহযোগিতায় কাজে অনিয়ম করলেও দেখার কেউ নেই। আর এতে এলজিইডির প্রকৌশলীরাও সহযোগিতা করছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। এমনকি কেউ কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুললে তাকে নানাভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান কেউ কেউ।

স্থানীয় কৃষক অলিউল অভিযোগ করে বলেন, কার্পেটিং এখনি উঠে যাচ্ছে। গতকাল তার বাড়ির সামনে কিছু কিছু জায়গায় কার্পেটিং উঠে গিয়েছিল। সকালে সেগুলো জোড়া তালি দিয়ে আবার কার্পেটিং করা হয়েছে। রাস্তা নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়টি এই তিন গ্রামের সবারই জানা। কিন্তু, কেউ কিছু বলতে পারছে না।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুস সামাদ, শুভন আহমেদসহ অনেকে বলেন, রাস্তার কার্পেটিং উঠে গেলেও কারও কিছু বলার নেই। কথা বললেই সমস্যা রয়েছে। উপজেলা প্রকৌশলী ও ঠিকাদার মিলেমিশে সরকারি অর্থ লুটপাটের সঙ্গে জড়িত।

কাজ তদারককারী উপ-সহকারী প্রকৌশলী গোলাম হোসেন এই প্রতিবেদককে বলেন, যা খুশি লিখতে পারেন। কোন সমস্যা নেই। এখানে কাজে কোন অনিয়ম হচ্ছে না। নিম্নমানের কাজের কোন কাহিনী নেই। যারা অভিযোগ করেছে তাদের নাম সহকারে লিখেন।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার নজরুল ইসলাম বলেন, আমার জানামতে কাজ সুন্দর হচ্ছে। তারপরও কাজ খারাপ হলে ঠিক করে দেওয়া হবে।

উপজেলা প্রকৌশলী হাসান আলী বলেন, শুক্রবার ও শনিবার তিনি বাইরে আছেন। রাস্তা কার্পেটিংয়ে কোন অনিয়ম হলে আগামীকাল রোববার পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেবেন।


(নিউজ টোয়েন্টিফোর/কামরুল)

সম্পর্কিত খবর