অল্পের জন্য রক্ষা পেল বিমানের ১৭১ প্রাণ

দুর্ঘটনা কবলিত বিমান এবং পাইলট জাকারিয়া।

অল্পের জন্য রক্ষা পেল বিমানের ১৭১ প্রাণ

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

বৈমানিকের দক্ষতায় ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজের ১৭১ আরোহীর প্রাণ বেঁচে গেল। সামনে চাকা না খোলায় দক্ষতার সঙ্গে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে বিমানটির জরুরি অবতরণ করে পাইলট।

দুর্ঘটনার শঙ্কা নিয়ে ইউএস-বাংলার (৭৩৭-এইটকিউএইট) উড়োজাহাজের পাইলট স্কোয়াড্রন লিডার (অব.) জাকারিয়া দক্ষতার সঙ্গে নোজ গিয়ার (সামনের চাকা) ছাড়াই শুধু পেছনের চাকায় ভর করেই অবতরণে সক্ষম হন।

এ ঘটনায় ৪০ জন যাত্রী আহত এবং ৭০ জন সাময়িকভাবে আতঙ্কগ্রস্ত (ট্রমা) হলেও বর্তমানে সুস্থ আছেন।

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করে।

সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বেলা ১১টা ৪৮ মিনিটে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে যাওয়া ফ্লাইট বিএস ১৪১ কক্সবাজারে নামার কথা ছিল বেলা সাড়ে ১২টায়। কক্সবাজারের আকাশেই নোজ হুইল (সামনের চাকা) কাজ না করার বিষয়টি বুঝতে পারেন বৈমানিক। পরে উড়োজাহাজটি চট্টগ্রামে উড়িয়ে নিয়ে এসে বেলা ১টা ২০ মিনিটে শাহ আমানত বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করান।

ওই ফ্লাইটে ১৬৪ জন যাত্রী এবং সাতজন ক্রু ছিলেন।

শাহ আমানতের সারোয়ার ই জাহান বলেন, নোজ গিয়ার দুইভাবে খোলা যায়। হাইড্রোলিক ও ম্যানুয়াল। কোনোটাই কাজ না করায় জরুরি অবতরণের সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এটা টেকনিক্যাল ল্যান্ডিং। এভাবে সামনের চাকা ছাড়া অবতরণ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। যে কোনো ধরনের বড় দুর্ঘটনা হতে পারত।

তিনি বলেন, এটা একটা টেকনিক্যাল ফল্ট। পাইলট অত্যন্ত দক্ষ। তিনি গতি একদম কমিয়ে বিমানটি অবতরণ করাতে সক্ষম হয়েছেন বলেই বড় কোনো বিপদ হয়নি।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ শাখার জিএম কামরুল ইসলাম বলছেন, উড্ডয়নের আগে সব ধরনের কমপ্লায়েন্স ক্লিয়ারেন্স পেলে ইঞ্জিনিয়ারের সার্টিফিকেট নিয়েই বিমান ছাড়া হয়। এই প্লাটটির ক্ষেত্রেও তাই করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, স্বাভাবিক নিয়ম অনুসারে সবই করা হয়েছে। কিন্তু নোজ গিয়ার না খোলার এই টেকনিক্যাল সমস্যা যেকোনো সময়ই হতে পারে।

ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, শাহ্ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি রানওয়েতে নামে পিছনের দিকে হেলে। কারণ সামনের চাকা নেই। একটু পরই বিমানটি সামনের দিকে হেলে গেলে ধোঁয়া উড়তে থাকে। এই বুঝি আগুন ধরে যাবে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়। সঙ্গে সঙ্গে উড়োজাহাজটির পেছনে ছুটতে শুরু করে ফায়ার সার্ভিসের বেশ কয়েকটি গাড়ি। এক পর্যায়ে ফ্লাইটি রানওয়েতে থেমে গেলে বড় কোন দুর্ঘটনা ছাড়া ইমারজেন্সি ডোর দিয়ে যাত্রীরা একে এক বের হয়ে আসেন।

উড়োজাহাজের এক যাত্রী বলেন, বিমানটি যখন কক্সবাজার নামতে পারেনি তখনো আমাদের কিছু বলা হয়নি। এরপরও সেটি আধ ঘণ্টার মত আকাশে ছিল। চট্টগ্রামে নামার সময় ঝাঁকুনি দিলে যাত্রীরা কান্না করতে শুরু করে। এক পর্যায়ে ঝাঁকি দিয়ে বিমানটি থামে। তখন ধোঁয়া দেখতে পাই। পরে পেছনের দরজা দিয়ে নেমে আসি।

প্রসঙ্গত, চলতি বছর নেপালের কাঠমান্ডুতে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় ৫১ জনের মৃত্যু হয়।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর