তুষারপাতে বিপর্যস্ত ইউরোপ, মসজিদে ঠাঁই নিয়েছে গৃহহীনরা

সংগৃহীত ছবি

তুষারপাতে বিপর্যস্ত ইউরোপ, মসজিদে ঠাঁই নিয়েছে গৃহহীনরা

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

তুষারপাতে বিপর্যস্ত গোটা ইউরোপ। খারাপ আবহাওয়ার কারণে জেনেভা বিমানবন্দরে বিমান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, খারাপ আবহাওয়ার কারণে পরবর্তী বিজ্ঞপ্তি জারি না হওয়া পর্যন্ত বিমান পরিষেবা বন্ধ থাকবে। তুষারপাতের কারণে শুক্রবার দক্ষিণপূর্ব ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ ওয়েলসে আবহাওয়া দফতর সর্বোচ্চ সতর্কতা সঙ্কেত জারি করেছে।

এই পরিস্থিতিতে শত শত গৃহহীন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন মসজিদে।

আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস, ইউরোপের উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বে মোট চার থেকে ছয় ইঞ্চি তুষারপাত হতে পারে। তুষারপাতের কারণে স্থানীয় বাসিন্দাদের পিচ্ছিল রাস্তায় সাবধানে চলাচল করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে৷ তুষারে অধিকাংশ রাস্তা ঢাকা পড়ায় স্থানীয়দের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে৷

এছাড়া যুক্তরাজ্যে ইয়েলো ও অ্যামবার সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সাধারণত আবহাওয়া পরিস্থিতি সামনের কয়েকদিন মারাত্মক রূপ নেয়ার আশঙ্কা থাকলে ইয়েলো সতর্কতা জারি করা হয়।

আর অ্যামবার সতর্কবার্তায় সম্ভাব্য খারাপ আবহাওয়ায় নাগরিকদের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখানো হয়।

এদিকে ভয়াবহ হিমঝড়, তুষারপাতে বিপর্যস্ত যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ডের বিভিন্ন মসজিদ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে গৃহহীনদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবকরা নামাজের জায়গায় তাবু খাটিয়ে গৃহহীনদের আশ্রয় ও খাবারের ব্যবস্থা করেছেন। আশ্রয়হীনদের জন্য মসজিদে গোসলের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

ম্যানচেস্টারের মাক্কি মসজিদের ট্রাস্টি রাবনাওয়াজ আকবর বলেন, আবহাওয়া পরিস্থিতি মারাত্মক খারাপ পর্যায়ে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কেন গৃহহীনদের সাহায্যে আমরা এগিয়ে আসবো না? তিনি বলেন, গত আট বছর ধরে সরকার কৃচ্ছতানীতি গ্রহণ করায় আশ্রয়হীনদের অনেক সেবা বন্ধ রয়েছে। এতে তাদের খোলা আকাশের নিচে ঘুমাতে হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মসজিদে ঘুমিয়ে ছিলেন মাদকাসক্ত জেমি। তিনি বলেন, আমি একজন মাদকাসক্ত। সারাজীবনে কখনও মসজিদে থাকিনি। তারা আমাকে খাবার ও পানীয় দিয়েছেন। স্থানীয় কাউন্সিল যেটা আমাকে দিতে পারতো না, তারা সেটাই আমাকে দিয়েছেন। গণমাধ্যমে মসজিদকে নেতিবাচকভাবে তুলে ধরা হয়। এতে মসজিদ সম্পর্কে একটা গৎবাঁধা ধারণা আমাদের ভেতরে জন্ম নেয়। আজ সেই ধারণা ভেঙে গেছে।

কেবল মাক্কি মসজিদই নয়, লিডস গ্রান্ড মসজিদ, ওল্ডহ্যাম মসজিদ, ফিন্সবুরি মুসজিদ, ক্যান্টারবুরি মসজিদ ও ডাবলিন'স ক্লোন্সকিয়াগ মসজিদও এই বৈরী আবহাওয়ায় গৃহহীন ও অসহায়দের জন্য খুলে দিয়েছে তাদের দরজা।
 
এদিকে সাইবেরিয়া থেকে ধেয়ে আসা বাতাসে রাতের গড় তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রির নিচে চলে যাওয়ায় মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাপনে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, ভয়াবহ ঠাণ্ডা দরিদ্র, গৃহহীন ও অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ওপর বড় ধরনের বিপদ বয়ে আনতে পারে।

সম্পর্কিত খবর