জগন্নাথে ‘যৌন নিপীড়নে’ শিক্ষককে তিরস্কারের সাজায় ক্ষোভ

জগন্নাথে ‘যৌন নিপীড়নে’ শিক্ষককে তিরস্কারের সাজায় ক্ষোভ

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে নাট্যকলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল হালিম প্রামানিককে (সম্রাট) কেবল তিরস্কার ও পদোন্নতি দুই বছর বিলম্বিত করার সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী ছাত্রীরা।


বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় অধ্যাপক প্রামানিকের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থার পাশাপাশি প্রকাশনা জালিয়াতির জন্য ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নাসির উদ্দিন আহমদকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি থেকে অপসারণের সিদ্ধান্ত হয়।

অধ্যাপক প্রামানিকের শাস্তিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিযোগকারী এক শিক্ষার্থী বলেন, প্রকাশনা জালিয়াতির জন্য একজন শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করা হলে যৌন নিপীড়নের জন্য তিরস্কারের এই শাস্তি হবে কেন?

নতুন করে ঘটনার তদন্ত করে ওই শিক্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা। এর আগে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির জন্য আরেক শিক্ষক রাজীব মীরকে চাকরিচ্যুত করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

 


শাস্তির বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ‌্যাপক মীজানুর রহমান বলেন, এটা একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া ছিল। ঘটনাটি নিয়ে দুই দফা তদন্ত করা হয়েছে। তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

গত বছর ১৯ ফেব্রুয়ারি উপাচার্যের কাছে নাট্যকলা বিভাগের তৎকালীন চেয়ারম্যান আবদুল হালিম প্রামানিকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন তার বিভাগের এক ছাত্রী।

লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন, অধ্যাপক আবদুল হালিম প্রামানিক আগের দিন বিকাল সাড়ে ৫টায় মোবাইলে ফোন করে ক্লাসের জন্য তাকে বিভাগে আসতে বলেন। সন্ধ্যার দিকে তিনি বিভাগে এলে চেয়ারম্যান তাকে একাডেমিক বিষয়ে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে ক্লাসরুমে বসতে বলেন।

ঐ ছাত্রী বলেন, ক্লাসরুমে সম্রাট কু-প্রস্তাব দেন এবং লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করেন এবং ঘটনার কথা কেউ জানবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিতে থাকেন। এ সময় তাকে ধাক্কা দিয়ে আমি ক্লাসরুম থেকে বের হয়ে আসি।

অভিযোগের পরদিন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ওই শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্তের কথা জানানো হয়। তাতে বলা হয়, অভিযোগ পাওয়ার পরপরই শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এ বিষয়ে ‘জরুরি ব্যবস্থা’ নিতে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যপক মীজানুর রহমানকে বলেছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় ওই শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে।

বরখাস্তের ওই ঘোষণা আসার পর প্রশাসনের কাছে আব্দুল হালিম প্রামানিকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন তার বিভাগের আরেক ছাত্রী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেল প্রথমে এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত করে।

ওই তদন্ত কমিটির প্রধান গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়্যারম্যান হেলেনা ফেরদৌসি শুক্রবার  বলেন, আমরা যে তদন্ত করেছি তাতে আমরা অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি এবং আমরা উপাচার্যের কাছে জমা দিয়েছি। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় আরেকটি উচ্চতর তদন্ত কমিটি করে, তাদের সুপারিশে সিন্ডিকেটে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।


(নিউজ টোয়েন্টিফোর/কেআই)

সম্পর্কিত খবর