স্ত্রীর অধিকার পেতে স্বামীর বাড়িতে অনশনে তরুণী

সংগৃহীত ছবি

স্ত্রীর অধিকার পেতে স্বামীর বাড়িতে অনশনে তরুণী

অনলাইন ডেস্ক

স্ত্রীর অধিকার পেতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের  ভোলাহাটে স্বামীর বাড়িতে অনশন করছেন এক তরুণী। বুধবার (১৩ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার গোহালবাড়ী ইউনিয়নের গোহালবাড়ী হাটখোলা পাড়ায় এই ঘটনা ঘটেছে। অনশনরত ওই তরুণীর বাড়ি উপজেলার ভোলাহাট গ্রামে।  

তিনি জানান, গোহালবাড়ী ইউনিয়নের গোহালবাড়ী হাটখোলা পাড়ার মো. মোরসারুল হক চারুর ছেলে মো. মিনহাজুল প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে নানা কৌশলে তার আপত্তিকর ছবি নিয়ে রাখে।

২ বছর আগে অন্যত্র বিয়ে ঠিক হলে মিনহাজুল সেই সব আপত্তিকর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে তার বিয়ে ভেঙে দেয়। পরবর্তীতে ২০২০ সালের ২ মে মিনহাজুল তাকে বিয়ে করে। বিয়ের রেজিষ্ট্রারে উল্লেখ করে, স্ত্রী ২ বছর বাবার বাড়িতে অবস্থান করবেন, স্বামী মিনহাজুল সেখানে যাতায়াত করবেন।

কিন্তু বিয়ের পর মিনহাজুল তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।

ফোন করলে নম্বর ব্লক করে রাখে। বিয়ের রেজিষ্ট্রার অনুযায়ী ২ বছর পার হলেও মিনহাজুল তার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। স্ত্রী যোগযোগের চেষ্টা করলে তিনি কোনো কথা না বলে তার বাবাকে ফোন ধরিয়ে দেয়। এ সময় মিনহাজুল স্ত্রীকে কোনো ভরণপোষণ দেয়নি। এমনকি স্ত্রীর মর্যাদাও দিচ্ছে না। বহু অপেক্ষা করেও অধিকার না পাওয়ায় এখন স্ত্রীর অধিকার পেতে অনশন করছেন।

ভুক্তভোগী ওই তরুণী বলেন, মিনহাজুল আপত্তিকর ছবি ভাইরাল করে বিয়ে ভেঙে দিয়েছিল। এরপর সে বিয়ে করে আমাকে স্ত্রীর মর্যাদা দিচ্ছে না। উল্টো লোকের মাধ্যমে ডিভোর্সের প্রস্তাব পাঠিয়েছে। আমি স্বামীর সংসার করতে চাই, ডিভোর্স নিয়ে আমি কোথায় যাব?

তিনি আরও বলেন , আমার বাবা মারা গেছেন। এখন আমি ভাইদের কাছে বোঝা হয়ে গেছি।   তারা আমাকে রাখবে না। আমার এখন কোথাও ঠাঁই নেই। সকালে স্বামীর বাড়িতে আসলে শ্বশুর-শাশুড়ি ও স্বামী আমাকে শারীরিক নির্যাতন করে বের করে দিয়েছে। আমি মিনহাজুলের কাছে স্ত্রীর অধিকার চাই। তা না দিলে এই বাড়িতেই আত্মহত্যা করব।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মো. মিনহাজুল বলেন,  আমার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল না। জোর করে, থানা থেকে ভয় দেখিয়ে আমাকে বিয়ে করতে বাধ্য করেছিল।

আপত্তিকর ছবির বিষয়ে জানতে চাইলে মিনহাজুল ও তার বাবা সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হন এবং অকথ্য ভাষায় ঘটনাস্থল থেকে চলে যেতে বলেন। তবে শেষ পর্যন্ত ওই তরুণী স্বামী মো. মিনহাজুলের বাড়িতেই অনশন অব্যাহত রেখেছেন বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান মো. ইয়াশিন আলী শাহ বলেন, বিষয়টি সমাধান করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছি। আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি। কিন্তু মেয়েটি স্ত্রীর অধিকার পাওয়া ছাড়া অন্য কোন সমাধানে রাজি হয়নি।

অন্যদিকে ভোলাহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে কিছু জানি না। তবে, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

news24bd.tv/আলী