ডিসির নাম্বার ক্লোন করে অর্থ দাবি, থানায় জিডি

ডিসির নাম্বার ক্লোন করে অর্থ দাবি, থানায় জিডি

পঞ্চগড় প্রতিনিধি :

পঞ্চগড়ে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) মোবাইল নাম্বার ক্লোন করে চলমান জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করা হয়েছে। ফোনে নির্বাচনের প্রার্থী এবং ভোটারদের ফোন করে বিশেষ বরাদ্দ দেওয়ার নামে অর্থও দাবি করা হয়। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।

পুলিশ ও ঘটনার শিকার একাধিক ব্যক্তি জানান, শনিবার সকাল ১১টা এক মিনিটে ০১৭১৩৮৮০৮৭৬ মোবাইল নাম্বার দিয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তি প্রথমে জেলা পরিষদ নির্বাচনের আটোয়ারী উপজেলার সদস্য প্রার্থী মো. মাজেদুর রহমান বুকুলকে ফোন করেন।

ফোনে সেই ব্যক্তি নিজেকে পঞ্চগড়ের ডিসি পরিচয় দেন এবং নাম্বারটি তার ব্যক্তিগত বলে জানান। পরে মাজেদুর রহমান প্রশ্ন করলে তিনি পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের সরকারি ০১৭১৩২০০৮০৩ নাম্বার ক্লোন করে সেই নাম্বার দিয়ে ফোন করে তার পূর্বের কথিত ব্যক্তিগত (পারসোনাল) ০১৭১৩৮৮০৮৭৬ নাম্বারে কল ব্যাক করতে বলেন।  

সদস্য প্রার্থী মাজেদুর কল ব্যাক করলে তাকে ফোনে বলেন, আমি বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদে বিশেষ বরাদ্দ দিয়ে আপনার ভোটের বিষয়ে হেল্প করতে চাই। এর বিনিময়ে তিনি বিকাশ এর মাধ্যমে টাকা দাবি করেন।

 

একইভাবে তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কুদরত-ই-খুদা মিলনকেও ০১৭১৩৮৮০৮৭৬ নাম্বার দিয়ে ফোন করে তার পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত করার প্রস্তাব দেন। এ সময় তিনি (প্রতারক) ০১৮৬৪৪৩৬০৪৭ নাম্বার দিয়ে সেই নাম্বারে বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে বলেন। জেলা প্রশাসকের নামে মোবাইলের মাধ্যমে অর্থ চাওয়ার বিষয়টি সন্দেহ হলে তারা তাৎক্ষণিক বিষয়টি জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টদের জানান।  

একই সঙ্গে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের ব্যক্তিগত সহকারী মো. আলতাফ পঞ্চগড় সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন এবং সামাজিক মাধ্যমে সতর্কতামূলক প্রচারণা চালানো করেন।

তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কুদরত-ই-খুদা মিলন জানান, সকালে অজ্ঞাত একজন আমাকে ০১৭১৩৮৮০৮৭৬ নাম্বার দিয়ে ফোন করে আমার এক প্রার্থীকে নির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত করার প্রস্তাব দেন। এর বিনিময়ে তিনি (প্রতারক) ০১৮৬৪৪৩৬০৪৭ নাম্বার দিয়ে বিকাশের মাধ্যমে টাকাও পাঠাতে বলেন। আমি শুরু থেকেই তার প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারি। বিষয়টি তাৎক্ষণিক জেলা প্রশাসক মহোদয়সহ সংশ্লিষ্টদের জানাই।

সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ মিঞা জানান, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নাম্বার ক্লোন করে চলমান জেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রভাব বিস্তারসহ অর্থ চাওয়ার ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। আমরা প্রতারকের নাম্বারসহ বিভিন্ন দিক গুরুত্বের সাথে তদন্ত শুরু চলছে। আশা করি দ্রুত প্রতারক চক্রকে আইনের আওতায় আনা হবে।

জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আজাদ জাহান জানান, কোন একটি অসাধু চক্র জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সরকারি মোবাইল ফোন নাম্বার ক্লোন করে বিভিন্ন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র, ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, পৌর কাউন্সিলরসহ বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে অর্থ এবং ভোট চাওয়ার মত অবৈধ প্রস্তাব দেওয়া হয়। এ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের মাঝে সতর্কতামূলক প্রচারণাসহ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।

news24bd.tv/কামরুল