ক্রিকেটে ডিআরএস বা এডিআরএস যেভাবে কাজ করে

সংগৃহীত ছবি

ক্রিকেটে ডিআরএস বা এডিআরএস যেভাবে কাজ করে

অনলাইন ডেস্ক

বিপিএলের এবারের আসর শুরুর পর থেকেই আবারও আলোচনা-সমালোচনায় ডিআরএস ও এডিআরএস।  আর কেন এতো বিতর্ক তা স্পষ্ট বোঝা গেল প্রথম কয়েক ম্যাচেই। ম্যাচের আম্পায়ারিং নিয়েও চলছে বিতর্ক।  আজ আপনাদের জানাবো এই দুই পদ্ধতি নিয়ে।

 ডিআরএস ও এডিআরএস কি? কিভাবে এ পদ্ধতি কাজ করে? পার্থক্যই বা কি? চলুন জেনে নেয়া যাক।

ডিআরএস কি?
ক্রিকেটে আউটগুলোর মধ্যে একটা হলো এলবিডাব্লিউ বা লেগ বিফোর উইকেট। যখন কোনো ব্যাটার ইচ্ছাকৃতভাবে পায়ে বল লাগান কিংবা বল প্যাডে আঘাত করে, তখন বোলারের আপিলের ভিত্তিতে আউটের সম্ভাবনা বিবেচনায় এনে আম্পায়ার আউট দেন।  

এক্ষেত্রে দুইটি ব্যাপার মূলত সবচেয়ে বেশি বিবেচনায় আনা হয়।

প্রথমত, ব্যাটার আউট হচ্ছেন জেনেও বল পা দিয়ে আটকে দিচ্ছেন কিনা। দ্বিতীয়ত, বলটি স্টাম্পে হিট করার সম্ভাবনা কতটুকু ছিলো। এই দুইয়ের ভিত্তিতেই আম্পায়ার বেশিরভাগ সময় সিদ্ধান্ত দেন।  

তবে এই আউট নিয়ে একটা সময় শুরু হয় বিতর্ক। দেখা যায়, বল প্যাডে লাগলেও উইকেটে হিট করার সম্ভাবনা নেই। অথচ আম্পায়ার আঙ্গুল তুলে দিয়েছেন। আবার অনেক সময় বল লাইনে না থেকেও স্টাম্পে হিট করে যায়! এজন্যই মূলত ডিআরএস নির্ভূলভাবে কাজ করে।

ডিআরএস যেভাবে কাজ করে?
ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম বা ডিআরএসে টিভি আম্পায়ার কয়েকটি প্রযুক্তি ব্যবহার করেন। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হক আই, হট স্পট, আল্ট্রা এজ। হক আই দিয়ে বলের গতিপথ নির্ধারণ করা হয়। হটস্পট দিয়ে বলটি কোথায় আঘাত করেছে, ছায়ার মাধ্যমে সেটি চিহ্নিত করা যায়।  

আল্ট্রা এজ অনেকটাই হট স্পটের মতো। আম্পায়ার যদি বলের আওয়াজ শুনতে না পান কিংবা ব্যাট-বলের সংযোগ ধরতে না পারেন, তবে সেটি আল্ট্রা এজে ধরা পড়বে। তাতে বল ব্যাটারের ব্যাটে লেগেছে কিনা, সেটা বের করা সহজ হয়ে যায়।  

ডিআরএস পদ্ধতিতে আউটের নিয়ম হলো, আম্পায়ার্স কলে বল যদি ইন লাইন পিচিং (পিচের মাঝ ববাবর কালো রেখা) হয়ে স্টাম্পে আঘাত করে তবে সেটি আউটের জন্য বিবেচনা করা হয়। এক্ষেত্রে বলের অন্তত অর্ধেকের বেশি অর্থাৎ ৫১ ভাগ লাইনে থাকতে হবে।

এডিআরএস কি?
এবারের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের নবম আসরের শুরুতেই আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল এডিআরএস (অল্টারনেটিভ রিভিউ সিস্টেম)। যেটা মূলত ক্রিকেটের হারিয়ে যাওয়া প্রাচীন প্রযুক্তি। এই সিস্টেম ব্যবহার হতো ডিআরএস প্রযুক্তি ব্যবহার শুরুর আগে।  

এই সিস্টেমে কেবল লেগ বিফোর উইকেটের জন্যেই আবেদন করা যাবে। কারণ এটার জন্য আল্ট্রা এজ বা স্নিকো মিটার নেই। এই সিস্টেমে প্রত্যেকটি দল দুইবার রিভিউ নিতে পারবে। এর জন্য সময় পাওয়া যাবে ১৫ সেকেন্ড।  

এডিআরএস কিভাবে কাজ করে?
এডিআরএস পদ্ধতি মূলত ছায়াপথের মাধ্যমে কাজ করে। এ পদ্ধতির মাধ্যমে শেডেড দিয়ে দেখানো হয় বল কোথায় পিচ করেছে এবং বলের ইমপ্যাক্ট কোথায় ছিল। এছাড়া বল উইকেটে হিট করছিল কিনা সেটাও দেখা যাবে।  

যেহেতু আল্ট্রা এজ ও স্নিকোমিটার নেই তাই স্ট্যাম্প  মাইকের আওয়াজ ও টিভি রিপ্লে দেখে থার্ড আম্পায়ার সিদ্ধান্ত দেবেন আউট হয়েছে কী না। বল ও ব্যাটের সংযোগ সুক্ষ্মভাবে দেখার জন্য এই পদ্ধতিতে জুম ইন-আউট করা হয়।

বিপিএল কমিটি প্রনীত আইনে এডিআরএসে আউটের নিয়ম হলো, বলের যে কোনো ইন পিচিং লাইনে পরে ব্যাটারের প্যাডে আঘাত করে স্টাম্প আঘাতে সম্ভাবনা থাকলেই সেটিকে 'ইন লাইন' হিসেবে গণ্য করা হবে। অর্থাৎ ব্যাটার আউট।   

ডিআরএস ও এডিআরএসের পার্থক্য কি?
ডিআরএস ও এডিআরএসের মধ্যে যদিও বেশি পার্থক্য ছিল না। প্রাথমিক নিয়মটা একই ছিলো। তবে বিপিএলের নবম আসরে এডিআরএসের নিয়মে আনা হয়েছে পরিবর্তন। তাতে সম্পূর্ন উল্টো হয়ে গেছে দুই পদ্ধতির নিয়ম।

বিপিএলের প্লেয়িং কন্ডিশনের ডি-১ অ্যাপেনডিক্সের ৬.৪.৩.৩ ধারা অনুযায়ী এডিআরএসের ক্ষেত্রে, বলের যে কোনো অংশ লাইনে না থাকলেও সেটিকে 'ইন লাইন' হিসেবে গণ্য করা হবে।  

ঐদিকে ক্রিকেটের ডিআরএস আইন আবার সম্পূর্ন উল্টো। ডিআরএস আইনে বলা আছে, বলের বেশির ভাগ অংশ বা অন্তত ৫১ ভাগ অংশ থাকতে হবে লাইনে। এরপর বল স্টাম্পে আঘাত করলে সেটা আউট হিসেবে ধরা হবে।

news24bd.tv/আলী