বাগেরহাটে নতুন আকর্ষণ রায়েন্দার রিভার ভিউ ইকোপার্ক

সুন্দরবনসহ বিভিন্ন স্পটে পর্যটকদের ভিড়

বাগেরহাটে নতুন আকর্ষণ রায়েন্দার রিভার ভিউ ইকোপার্ক

বাগেরহাট প্রতিনিধি

বাগেরহাটে ঈদের ছুটিতে দুটি ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইড সুন্দরবন ও ষাটগম্বুজ মসজিদ, শরণখোলার রায়েন্দা-বলেশ্বর রিভার ভিউ ইকোপার্ক ও হযরত খানজাহান (রহ:) দরগা-দিঘীর পর্যটন স্পটে পর্যটকদের ঢল নেমেছে।

এর মধ্যে শরণখোলার রায়েন্দা-বলেশ্বর রিভার ভিউ ইকোপার্কে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় লেগেই রয়েছে। ঈদের লম্বা ছুটিতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ একাধিক ভিভিআইপিরাও ঘুরে দেখেছেন সুন্দরবনের অপরূপ সৌন্দর্য।

সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন ও পর্যটন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাওলাদার আজাদ কবির জানান, ঈদের লম্বা ছুটিতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ একাধিক ভিভিআইপিরাও ঘুরে দেখেছেন সুন্দরবনের অপরূপ সৌন্দর্য।

সোমবার বিকাল পর্যন্ত গত তিন দিনে সুন্দরবনের শুধু করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন ও পর্যটন কেন্দ্রে এক দিনে প্রায় দেড় হাজার পর্যটক এসেছেন। এসব পর্যটকরা করমজলে হরিণ, বানর, কুমিরসহ নানা প্রজাতির প্রাণীসহ বনের বিভিন্ন স্থানে অবলোকন করেছেন। মুগ্ধ হয়েছেন বনের জীববৈচিত্র্য দেখে। সোমবার বিকাল পর্যন্ত ৩৫টিরও অধিক বিরাম বহুল লঞ্চ ও কেবিন ক্রুজারে করে প্রায় ৩ হাহার দেশি-বিদেশি পর্যটক সুন্দরবনে প্রবেশ করেছে।

পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে করমজলে দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা ও অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। উন্নত দেশগুলোর মতো আকর্ষণীয় করে সুন্দরবনের স্পটগুলোকে সাজানো হয়েছে। ঈদের ছুটিতে সুন্দরবনে পর্যটন খাতে রাজস্ব আয় বেড়াবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা। সোমবার সকালে ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইড ষাটগম্বুজ মসজিদসহ হযরত খানজাহান (রহ:) দরগা-দিঘীর পর্যটন স্পটে ঘুরে দেখা গেছে পর্যটকদের ভিড় লেগেই রয়েছে।

গত এক বছর ধরে বাগেরহাটের সব থেকে আলোচিত পর্যটন কেন্দ্র শরণখোলার রায়েন্দা-বলেশ্বর রিভার ভিউ ইকোপার্কে ঈদের ছুটিতে প্রতিদিন প্রায় অর্ধ লাখ পর্যটকের ঢল নামছে। সুপার সাইক্লোন সিডরে মৃত্যুপুরী শরণখোলাকে জলোচ্ছ্বাসের হাত থেকে বাঁচাতে বলেশ্বর নদীর তীরে সিসি ব্লকের বেড়ীবাঁধের দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এখন পর্যটন কেন্দ্রে রূপ নিয়েছে।

শরণখোলা উপজেলা প্রশাসন সিসি ব্লকের বেড়ীবাঁধকে রায়েন্দা-বলেশ্বর রিভার ভিউ ইকোপার্কে রূপ দিয়েছেন। গত এক বছর ধরে বলেশ্বর নদীর মোহনায় বঙ্গোপসাগরে সূর্যাস্ত দেখা, বলেশ্বর নৌভ্রমণ ও সুন্দরবনে অপরূপ দৃশ্য দেখার সুযোগ থাকায় ইতোমধ্যেই এই পর্যটন স্পটটি দেশের বিভিন্ন জেলার পর্যটকদের কাছে দর্শনীয় পর্যটন কেন্দ্রে রূপ নিয়েছে। এখনো পর্যটন মন্ত্রণালয়ে তালিকার বাইরে থাকা শরণখোলার রায়েন্দা-বলেশ্বর রিভার ভিউ ইকোপার্কে সোমবার বিকালে গিয়ে দেখা গেছে সেখানে পর্যটকের প্রচণ্ড ভিড়।

দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা বিভিন্ন শ্রেণিপেশার নারী-পুরুষসহ শিশুরা কেউ ঘোড়ায় চড়ছে, কেউবা ছোটো নৌযান বা স্পিডবোটে চড়ে নৌভ্রমণ করছেন। অধিকাংশ পর্যটক সিসি ব্লকের বেড়ীবাঁধে বসে পড়ন্ত বিকালে বলেশ্বর নদী বেয়ে চলা বাতাস, ঢেউসহ প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করছেন।

সিলেট থেকে আসা একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা আব্রাহাম চৌধুরী জানান, বন্ধুর কাছে থেকে এই পর্যটক কেন্দ্রের কথা জেনেই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এসেছি। ঢাকা থেকে মাত্র ৪ ঘণ্টায় সহজেই সড়ক এসে এই পর্যটক দেশের নতুন এই পর্যটন কেন্দ্রটি দেখে সত্রই মুগ্ধ হলাম। তবে পর্যটকের ঢল শ্যামল দিতে দ্রুত টুরিস্ট পুলিশসহ কারপার্কিং ও পর্যাপ্ত পাবলিক টয়লেট নির্মাণ প্রয়োজন বলেও জানান তিনি।

বাগেরহাট টুরিস্ট পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম জানান, শরণখোলার রায়েন্দা-বলেশ্বর রিভার ভিউ ইকোপার্ক এখনো দেখভালের দায়িত্ব আমাদের না। তবে, দুটি ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইট সুন্দরবন ও ষাটগম্বুজ মসজিদ ও হযরত খানজাহান (রহ:) দরগা-দিঘীর পর্যটন স্পটে ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের ঢল সামাল দিতে টুরিস্ট পুলিশ নিরাপত্তাসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনায় সর্বদা তৎপর রয়েছে।

news24bd.tv/FA