কী আছে ওয়াগনার ও এর সেনাদের ভাগ্যে?

সংগৃহীত ছবি

কী আছে ওয়াগনার ও এর সেনাদের ভাগ্যে?

অনলাইন ডেস্ক

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে পুতিনের তুরপের তাস ছিলো ভাড়াটে সেনাবাহিনী ওয়াগনার। যেখানে রাশিয়ার নিয়মিত সেনাবাহিনী সুবিধা করতে পারছিল না সেখানেই ডাক পড়েছে ইয়েভজেনি প্রিগোজিনের সেনাদের। আর পুতিনের ভরসার যথাযথ প্রতিদানও দিয়ে আসছিলো গোষ্ঠীটি। দীর্ঘ লড়াইয়ে রুশ প্রেসিডেন্টকে এনে দিয়েছে বাখমুতের দখল।

তবে গত ২৪ জুন হটাৎ করেই রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বসেন ওয়াগনার প্রধান প্রিগোজিন। বিশাল বহর নিয়ে দখল করে নেন দক্ষিণাঞ্চলে রাশিয়ার সেনা সদরদপ্তর। এরপর সেনা নিয়ে প্রায় মস্কো পৌঁছে যান প্রিগোজিন। শেষমেশ বেলারুশ প্রেসিডেন্টের মধস্ততায় শেষ হয়েছে সেই বিদ্রোহ।

এবার প্রশ্ন উঠেছে কি আছেন ভাড়াটে গোষ্ঠী ওয়াগনারের ভাগ্যে?

বেলারুশ প্রেসিডেন্টের মধ্যস্ততায় একটি চুক্তি হয়েছে ওয়াগনার প্রধানের সঙ্গে। চুক্তি অনুযায়ী সাজা পেতে হবে না ওয়াগনার সেনাদের। তাদের সামনে এখন তিনটি রাস্তা খোলা রয়েছে। বিদ্রোহের পর দ্বিতীয়বারের মতো জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, আমি ওয়াগনার গ্রুপের সেই সেনা ও কমান্ডারদের ধন্যবাদ জানাই, যারা একমাত্র সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তারা ভ্রাতৃঘাতী রক্তপাতে যায়নি, শেষ মুহূর্তে তারা থেমে গেছে।

এসব যোদ্ধাদের সামনে তিনটি পথ খোলা আছে জানিয়ে পুতিন বলেন, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বা অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করে রাশিয়ার সেবা চালিয়ে যেতে পারবেন তারা, অথবা নিজের পরিবার ও বন্ধুদের কাছে ফিরে যাওয়ার সুযোগ থাকবে তাদের। তৃতীয়ত, ওয়াগনার বাহিনীর কেউ চাইলে বেলারুশও চলে যেতে পারবেন। এর মাধ্যমে ওয়াগনারের অস্তিত্ব কার্যত বিলীন হয়েই যাচ্ছে।  

এরমধ্যেই রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ওয়াগনার বাহিনীকে তাদের সামরিক অস্ত্র ফেরত দিতে হবে। এরই মধ্যে এটি শুরু হয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা। রাশিয়ান ফেডারেশনের সশস্ত্র বাহিনীর সক্রিয় ইউনিটগুলোতে পিএমসি ‘ওয়াগনার’ ভারী সামরিক সরঞ্জাম স্থানান্তরের প্রস্তুতি চলছে।

এর আগে পুতিন বলেছিলেন, ভাগনার সদস্য যাঁদের বেশির ভাগই সত্যিকারের দেশপ্রেমিক, যাঁরা বিভ্রান্ত হয়ে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছিলেন, তাঁরা নিয়মিত সামরিক বাহিনীতে যোগ দিতে পারেন অথবা তাঁরা চাইলে পরিবারের কাছে ফিরে যেতে বা বেলারুশে যেতে পারেন বলে প্রস্তাব দিয়েছিলেন।

একই সময়ে সাংবাদিকেরা খবর পান, যাঁরা এই বিদ্রোহে অংশ নিয়েছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে সব ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়ার ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস। এমনকি যাঁরা ইতিমধ্যে সশস্ত্র বিদ্রোহের জন্য বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও অভিযোগ তুলে নেওয়া হবে।

ওয়াগনার প্রধানকে যদিও নির্বাসনে চলে যেতে হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী রাশিয়া ছেড়ে বেলারুশ চলে যাওয়ার কথা রয়েছে প্রিগোজিনের। সমঝোতায় বলা হয়, প্রিগোজিন বেলারুশে চলে যাবেন। বিদ্রোহের কারণে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রত্যাহার হবে।

বিদ্রোহ থেকে সরে আসার পর গতকাল প্রথমবারের মতো অডিও বার্তা দেন প্রিগোশিন। এতে তিনি দাবি করেন, প্রেসিডেন্ট পুতিনকে ক্ষমতাচ্যুত করতে নয়, বরং প্রতিবাদ জানাতে মস্কো অভিমুখে যাত্রা করেছিল তাঁর বাহিনী।

news24bd/Arh