পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকে ছাত্রীর গায়ে আগুন দিল দুর্বৃত্তরা

অগ্নিদগ্ধ পরীক্ষার্থী

পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকে ছাত্রীর গায়ে আগুন দিল দুর্বৃত্তরা

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

ফেনীর সোনাগাজীতে আলিম পরীক্ষার কেন্দ্রের ভেতরে এক ছাত্রীর গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে হত্যাচেষ্টা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

শনিবার সকালে পৌরশহরের সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। অগ্নিদগ্ধ ওই পরীক্ষার্থীর নাম নুসরাত জাহান ওরফে রাফি (১৮)।

এ ব্যাপারে ছাত্রীর ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বলেন, শনিবার সকালে তিনি বোনকে নিয়ে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে যান।

ওই সময় কয়েকজন ছাত্র ও অফিস সহকারী মো. মোস্তফা তাঁকে মাদ্রাসায় ঢুকতে বাধা দেন। পরে তিনি বোনকে দিয়ে চলে যান। পরে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার পক্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থী নুসরাতকে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে যান। তাঁরা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা তুলে নিতে তাঁকে চাপ দেন।
এ সময় তিনি কিছু না বলায় তিনজন শিক্ষার্থী তাঁর হাত ধরে, একজন তাঁর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যান।

‘তাঁর চিৎকারে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠান। ’

ওই ছাত্রীর অবস্থা আশঙ্কাজনক উল্লেখ করে ফেনী সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মো. আবু তাহের বলেন, ছাত্রীর শরীরের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ঘটনার সময় তিনি মাদ্রাসার অফিস কক্ষে প্রশ্নপত্র হলে পাঠানোর জন্য তৈরি করছিলেন জানিয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নুরুল আমিন বলেন, চিৎকার শুনে বেরিয়ে এসে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় এক পরীক্ষার্থীকে দেখতে পেয়ে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান।

পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সোহেল পারভেজ, সোনাগাজী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) সাইকুল আহমেদ ভূঁইয়া, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোয়াজ্জেম হোসেনসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ঘটনাটি পুলিশ খুব গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে খতিয়ে দেখছে। এ ঘটনায় কে বা কারা জড়িত, তা তদন্ত করে বের করা হবে।

উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ ওই ছাত্রীকে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় নিজের কক্ষে ডেকে নিয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা শ্লীলতাহানি করেন অভিযোগে মামলা হয়েছে। ওই মামলায় অধ্যক্ষ এখনো কারাগারে আছেন। ঘটনার পর থেকে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ অধ্যক্ষের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন। আরেকটি অংশ অধ্যক্ষের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন। এ ব্যাপারটি নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে একাধিকবার বাদানুবাদও হয় বলে জানা গেছে।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর