মৃত্যুর আগে নুসরাত যা বলছিলেন

মৃত্যুর আগে নুসরাত যা বলছিলেন

অনলাইন ডেস্ক

‘‌আমাকে ছাদে ডেকে নেওয়ার পর সেখানে যারা ছিল তাদের মধ্যে আমি একজনকে চিনতে পেরেছি। সে হলো হুজুরের (সিরাজ) জেঠাশের মেয়ে তুহিন (উম্মে সুলতানা পপি)। তাকে আটক করা হলে কারা কারা জড়িত ছিল, সব প্রকাশ হবে। ’

মৃত্যুর আগে বার্ন ইউনিটে চিকিত্সকের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে এ কথাই বলেছিলেন ফেনীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি।

মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণকালে নুসরাতের মা শিরিনা আক্তার বলেছিলেন, ‘২৭ মার্চ খবর শুনেই আমি মাদরাসায় ছুটে যাই। তখন অধ্যক্ষ আমার সঙ্গে খুবই খারাপ ব্যবহার করেন। পরে সোনাগাজী থানার দারোগা ইকবাল এসেও কটু কথা শুনিয়ে দেন। থানায় গিয়েও অসম্মানের শিকার হই।

কোথাও সুবিচার পাইনি। ৪ এপ্রিল ফেনীতে মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পি কে এম এনামুল হকের অফিসে গিয়ে সব কিছু খুলে বলি। কিন্তু সেখানেও কোনো সহায়তা পাইনি। ’

৬ এপ্রিলের ঘটনা সম্পর্কে তিনি বলেন, ঘটনার কিছুক্ষণ পর সকাল ১০টার কিছু পর ছেলে নোমান মোবাইল টেলিফোনে আমাকে ঘটনা জানায়। সঙ্গে সঙ্গে ফেনী সদর হাসপাতালে যাই। সেখানকার চিকিত্সকরা ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার পরামর্শ দেন।

আদালতে কান্নাজড়িত কণ্ঠে শিরিনা বলেন, ‘১২ আসামির ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দি ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আমরা জেনেছি, সিরাজ উদ দৌলার নির্দেশে শাহাদাত হোসেন শামীম, সাইফুর রহমান জোবায়ের, জাবেদ হোসেন, উম্মে সুলতানা পপি ও কামরুন নাহার মনি আমার মেয়েকে হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন দিয়ে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। এরা যেভাবে আমার মেয়েকে আগুনে পুড়িয়েছে, আমিও যদি এদের সেভাবে পারতাম তবে শান্তি পেতাম। ’

উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে তার মায়ের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে।

পরে ৬ এপ্রিল ওই মাদরাসাকেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে গেলে নুসরাতকে মাদরাসার প্রশাসনিক ভবন কাম সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে ডেকে নিয়ে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা।

১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)