সোলাইমানি নিহতের ঘটনায় ঢাকাস্থ ইরান দূতাবাসের বিবৃতি

সোলাইমানি নিহতের ঘটনায় ঢাকাস্থ ইরান দূতাবাসের বিবৃতি

অনলাইন ডেস্ক

বাগদাদে মার্কিন সন্ত্রাসী বাহিনীর হামলায় ইরানের কুদস ফোর্সের কমান্ডার লেঃ জেনারেল কাসেম সোলাইমানিসহ ১০ জন  নিহতের ঘটনায় বিবৃতি দিয়েছে ঢাকাস্থ ইরান দূতাবাস।

বিবৃতিটি উল্লেখ করা হয়,

مِّنَ الْمُؤْمِنِینَ رِجَالٌ صَدَقُوا مَا عَاهَدُوا اللَّهَ عَلَیْهِ ۖ فَمِنْهُم مَّن قَضَىٰ نَحْبَهُ وَمِنْهُم مَّن یَنتَظِرُ ۖ وَمَا بَدَّلُوا تَبْدِیلًا

[الأحزاب: 23]

“মুমিনদের মধ্যে কতক আল্লাহর সাথে তাদের কৃত ওয়াদা পূর্ণ করেছে, তাদের কেউ কেউ শাহাদত বরণ করেছে এবং কেউ কেউ প্রতীক্ষায় রয়েছে। তারা তাদের অঙ্গীকারে কোনো পরিবর্তন করেনি। ” (সূরা আহযাব, আয়াত-২৩)

“‌‌ওহে বাংলাদেশের বীর জনগণ!
ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের ঢাকাস্থ দূতাবাস ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থিত ইরানের দূতাবাস ও কূটনৈতিক মিশনগুলোতে ইসলামের জন্য নিবেদিতপ্রাণ, সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের নির্মূল অভিযানের অক্লান্ত সৈনিক, ইসলামের বীর সেপাহসালার শহীদ জেনারেল কাসেম সোলায়মানির বীরত্ব ও আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান জানিয়ে আমাদের জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে।

জেনারেল সোলায়মানি শুধু ইরানি জনগণের নয়; বরং তিনি বিশ্বের সকল মুসলমান এবং নিপীড়িত ও বঞ্চিত মানুষের মর্যাদা ও গর্বের প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন। মার্কিনীরা মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ও সংঘাতের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে দিতে অত্যন্ত বর্বরোচিত হামলার মাধ্যমে ইরানের কুদস ব্রিগেডের এই স্বনামধন্য কমান্ডারকে শহীদ করেছে। তারা এই জঘন্য অপরাধের মাধ্যমে ইরাকের সার্বভৌমত্ব লঙঙ্ঘন করেছে, আন্তর্জাতিক রীতি-নীতি পদদলিত করেছে এবং মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে বিনষ্ট করতে চেয়েছে। তবে এই জঘন্য অপরাধের নির্বোধ হোতারা যেন মনে রাখে যে, তারা তাদের অপরাধের দাঁতভাঙা জবাব পাবে।

জেনারেল সোলায়মানির শাহাদাতের ঘটনা আবারও এ কথা প্রমাণ করলো যে, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের স্বাধীনচেতা জাতিগুলোর কাছে সর্বাধিক ঘৃণ্যরাষ্ট্র ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদের প্রতীকে পরিণত হয়েছে। হোয়াইট হাউজ ও পেন্টাগনের কর্মকর্তাদের জেনে রাখা উচিত যে, গুণ্ডামি ও সীমালঙ্ঘনের যুগ শেষ হয়ে গেছে এবং যারা জেনারেল সোলায়মানির মতো স্বাধীনচেতা ব্যক্তিত্ব ও অন্যান্য শহীদের রক্তে নিজেদের হাত রঞ্জিত করেছে তাদের জন্য কঠিন প্রতিশোধ অপেক্ষা করছে।

শহীদ জেনারেল কাসেম সোলায়মানি ইসরাইল, আল-কায়দা ও আইএস জঙ্গিদের জন্য দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছিলেন। তিনি ইরাক ও সিরিয়াকে আইএসের মত রক্ত পিপাসু জঙ্গিদের হাত থেকে মুক্ত করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। তাঁর একমাত্র অপরাধ ছিল, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের লালিত জঙ্গিগোষ্ঠি আইএস নির্মূলে আপোষহীন ভূমিকা পালন করেছেন। তাই যুক্তরাষ্ট্র তাকে পথের কাঁটা মনে করেছিল। এতে কোন সন্দেহ নেই যে, এই মহান শহীদের পবিত্র রক্ত প্রতিরোধ সংগ্রামকে আগের চেয়ে বেগবান করবে এবং মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধাংদেহী নীতিকে অকার্যকর করতে সাহায্য করবে।

জেনারেল কাসেম সোলায়মানি তাঁর পুরো বরকতময় জীবন আল্লাহর রাস্তায় জিহাদে নিবেদিত করেছেন। নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা ও সংগ্রামের জন্য শাহাদাতের উচ্চ মর্যাদা তার প্রাপ্য ছিল।

এই ঘটনায় যারা শাহাদাত বরণ করেছেন বিশেষ করে শহীদ জেনারেল সোলায়মানি ও শহীদ আবু মাহদি আল মুহান্দিসের নাম ও স্মৃতি অনন্তকাল বিশ্বের স্বাধীনচেতা মানুষের মনে অমর হয়ে থাকবে, আর এই অপরাধের যারা হোতা তারা চিরদিন ইতিহাসে ধিকৃত হয়ে থাকবে।

وَسَیَعْلَمُ الَّذِینَ ظَلَمُوا أَیَّ مُنقَلَبٍ یَنقَلِبُونَ 

(الشعرء: 227)

"জালিমরা শীঘ্রই জানতে পারবে তারা কোন স্থলে প্রত্যাবর্তন করবে। " (সূরা শোয়ারা, আয়াত-২২৭)

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি, ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান দূতাবাস, ঢাকা। তারিখ: ৪ জানুয়ারি ২০২০। ”

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর