রাতে প্রতিবেশীর ডাকে বাইরে গিয়ে লাশ হলো স্কুলছাত্র

রাতে প্রতিবেশীর ডাকে বাইরে গিয়ে লাশ হলো স্কুলছাত্র

রেজাউল করিম মানিক, রংপুর

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার মানুষ যখন ভয়াবহ আতঙ্কে, তখন নিজ বিদ্যালয়ের বারান্দা থেকে উদ্ধার করা হলো এক শিক্ষার্থীর রক্তাক্ত লাশ। শ্যামল চন্দ্র মহন্ত ওরফে নয়ন নামে ওই শিক্ষার্থী দশম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। তারা বাবার নাম নারায়ন চন্দ্র মহন্ত।

বৃহস্পতিবার রাতে রংপুরের বদরগঞ্জ পৌরশহরের কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয়ে মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটে।

তবে কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে সে ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত নয় নয়নের পরিবার।

জানা গেছে, বদরগঞ্জ উপজেলায় পরপর দুইদিন দুই করোনা রোগী সনাক্ত হওয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলাটি লকডাউন ঘোষণা করা হয়। লকডাউনের মধ্যেই এমন মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় উপজেলাজুড়ে বিরাজ করছে আতঙ্ক ও উৎকন্ঠা।

নিহত শিক্ষার্থীর পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাত নয়টার দিকে নয়ন স্কুলের পাশে নিজ বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে রাতের খাবারের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল।

এ সময় প্রতিবেশী জুলফিকার নামে এক যুবক কথা আছে বলে বাড়ি থেকে বাইরে ডেকে নিয়ে যায়। রাত গভীর হলেও সে আর বাড়ি ফিরে আসেনি। রাতে আশেপাশের এলাকায় তার খোঁজ নেন পরিবারের লোকজন। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে সবাই নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করায় কারো দেখা মেলেনি তাদের। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে পরিবারের লোকজন। আজ সকালে নিজ স্কুলের বারান্দায় রক্তাক্ত অবস্থায় তার লাশ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা নয়নের পরিবারকে জানায়।

সরেজমিন দেখা যায়, পরনে প্যান্ট, গায়ে টিশার্ট পরা অবস্থায় লাশ পড়ে ছিল স্কুলের বারান্দায়। ধারণা করা হচ্ছে, স্কুল চত্তরের ভেতরের টিউবয়েলের হাতল খুলে তার মাথায় আঘাত করা হয়েছে। এতে তার মাথা থেতলে যায়। মাথা, নাক-মুখ দিয়ে রক্ত ঝরার দাগ লেগেছিল বারান্দার মেঝেতে।

নিহত নয়নের মা প্রমিলা রানী মহন্ত আহাজারী করে বলেন, মোর ছইলোক(সন্তান) রাইতোত(রাত) ওর বন্ধুরা ডাকে নিয়া গেইছে। যাওয়ার সময় মুই কইছু বাবা এতো রাইতোত কোটে যাওছিস। ছইল মোর কয়া (বলে) গেল মা জুলফিকার কেনবা ডাকাওছে। একটু পরে আইসোচু। এরপর সে আর রাইতোত বাড়ি আইসে নাই। সকালে স্কুলের বারান্দাত লাশ পড়ি আছে।

বদরগঞ্জ থানার ওসি(তদন্ত) আরিফ আলী বলেন, এটি রহস্যজনক হত্যাকাণ্ড। লাশ উদ্ধার করে
ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর