করোনাকালে হকারদের পাশে নেই কেউ

করোনাকালে হকারদের পাশে নেই কেউ

রেজাউল করিম মানিক, রংপুর

 


চলমান করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউন ও জাতীয় ছুটি থাকায় সারাদেশে সংবাদপত্র বিক্রি কমে গেছে ব্যাপাক ভাবে। বিক্রি না হওয়ায় এজেন্ট ও বিক্রয় প্রতিনিধিদের অনেকেই পত্রিকা আনা বন্ধ করে দিয়েছেন। এমন অবস্থায় দেশের অন্যান্য এলাকার মতো মানবেতর জীবনযাপন করছেন রংপুর নগরীর ২ শতাধিক হকার। তাদের বেশির ভাগেই এখন বেকার।

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বর্তমানে বাড়ি বাড়ি পত্রিকা সরবরাহ অব্যাহত রাখার চেষ্টা করলেও অর্থকষ্টে তারা দিশেহারা অবস্থায় জীবন যাপন করছেন।

রংপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে কিছু ত্রাণ সামগ্রী জুটলেও সহযোগীতার হাত বাড়ায়নি কেউ।
জীবন বাঁচার তাগিতে পত্রিকার পাশাপাশি মাক্স বিক্রি শুরু করেছে জাকির হোসেন। রংপুর প্রেসক্লাব বারান্দায় গিয়ে দেখা গেল এমন দৃশ্য।

নগরীর পায়রা চত্বর থেকে প্রেসক্লাব এলাকায় কয়েকটি হকারের দোকান বসলেও করোনার কারণে সব দোকানে এখন বন্ধ। রংপুর প্রেসক্লাব সামনে গিয়ে কথা হয় পত্রিকা বিক্রেতা শফিউল ইসলাম, আবুল কাদের ও আকমলের সাথে তারা জানালেন, তাদের এই করোনার সময়ে করুন দশার কথার।

পত্রিকা বিক্রেতা আকমল বলেন, করোনার কারণে এখন কারো বাসায় যেতে পারি না। তারা পত্রিকা
নেওয়া বন্ধ করে দিচ্ছে যদি পত্রিকায় ভাইরাস থাকে। এর কারণে পত্রিকার বিল ১৭ হাজার টাকা পড়ে
আছে বিভিন্ন জনের বাসায়। খুব কষ্টে পরিবারের লোজন নিয়ে চলছি।

সংবাদপত্র হকার কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক, জাকির হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,
আজকাল কেউ কারো খবর রাখে না। সবাই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত। ‘আমার ভাইও পত্রিকা বিক্রি করে
খাই, বেশি ভাগ পত্রিকা বন্ধ হওয়ায় সংসার চালানো সম্ভব হচ্ছে না।

এদিকে সংবাদপত্র ইউনিয়ের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন জানান, ডিসি অফিস ছাড়া
কোথাও থেকে আমরা ত্রাণ পাইনি। আমরা সংখ্যায় ২শ' জন। আর ডিসি অফিস থেকে ত্রাণ পেয়েছি
দেড়শ। তা নিয়ে আছি আমরা। এই সময়ে আমরা এতটাই অবহেলিত হব তা বুঝতে পারি নাই।
অথচ রোদ বৃষ্টির মধ্যে ও আমরা দ্রুত পত্রিকাটি পৌঁছে দেই সবার বাসায়।

এদিকে, প্রায় সবকটি জাতীয় পত্রিকা গণসচেতনতায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, করোনা ভাইরাস পত্রিকার কাগজের মাধ্যমে ছড়ায় না। তারপরেও বিক্রি তেমন বাড়েনি। বিক্রিত পত্রিকার বিল তুলতেও হকারদের বর্তমান পরিস্থিতিতে নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। সময়মতো পাওনা না পেয়ে অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে নিদারুণ কষ্টে পড়েছেন।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর