করোনায় বন্ধ ৬০ ভাগ স্থানীয় সংবাদপত্র, বাড়ছে দুর্নীতি-অনিয়ম

করোনায় বন্ধ ৬০ ভাগ স্থানীয় সংবাদপত্র, বাড়ছে দুর্নীতি-অনিয়ম

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনার কারণে আর্থিক সংকটে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে ৬০ দশমিক ৩১ ভাগ স্থানীয় সংবাদপত্র। এছাড়া ৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ সংবাদপত্র বিজ্ঞাপন বা অর্থ জোগাড় করতে পারলে প্রকাশিত হচ্ছে। এতে স্থানীয় পর্যায়ের প্রাতিষ্ঠানিক, অপ্রাতিষ্ঠানিক, ব্যক্তি ও গোষ্ঠী পর্যায়ের দুর্নীতি, অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের ঘটনাগুলো লোকচক্ষুর অন্তরালেই থেকে যাচ্ছে। এতে স্থানীয় পর্যায়ের অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্থ হচ্ছে।

বাংলাদেশ ইন্ডিপেন্ডেন্ট জার্নালিস্টস নেটওয়ার্কের (বিআইজেএন) এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।

গতকাল এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন বিআইজেএন- এর প্রধান সমন্বয়কারী আমীর খসরু।

তিনি বলেন, জরিপে ২৩শে জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত সময়ে রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও ঢাকা বিভাগের ৩৪টি জেলার ৪৫৬টি স্থানীয় দৈনিক এবং সাপ্তাহিক পত্রিকার তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এছাড়া কথা বলা হয় স্থানীয় পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ ২৮৭ জন ব্যক্তির সাথে।

জরিপে দেখা গেছে, আর্থিক সংকটে ৪৫৬টি সংবাদপত্রের মধ্যে ২৭৫ টি (৬০.৩১%) সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। বিজ্ঞাপন পেলে অথবা অর্থ জোগাড় করতে পারলে ১৮টি (৩.৯৫%) সংবাদপত্র প্রকাশ করা হয়। নিয়মিত প্রকাশের চেষ্টা করা হয় ১৬৩ টি (৩৫.৭৫%) পত্রিকা।

সংবাদপত্র বন্ধ হয়ে যাওয়ার প্রভাব সম্পর্কে জরিপে অংশগ্রহণকারী ৮৬ দশমিক ৪১ শতাংশ মানুষ জানিয়েছেন, স্থানীয় পর্যায়ের অনেক অনিয়ম, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, আইনভঙ্গ ও ভোগান্তির খবর জাতীয় পত্রিকায় জায়গা পায় না। সেক্ষেত্রে সেগুলো কোনো না কোনো স্থানীয় পত্রিকায় ছাপা হতো যা এসব অনিয়ম কমাতে ভূমিকা রাখত। স্থানীয়রা যে কোনো সমস্যা নিয়ে ওই সব পত্রিকা ও সাংবাদিকদের কাছে যেতে পারতেন। স্থানীয় প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং তার “সাঙ্গপাঙ্গরা” স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের কারণে কিছুটা হলেও চাপের মধ্যে থাকতো।

৮ দশমিক ৭২ শতাংশ জবাবদানকারী বলেছেন, পত্রিকাগুলোর মাধ্যমে নানা ধরণের সাংবাদিকতা বহির্ভূত অপকর্ম করা হতো এবং সাংবাদিক নাম ভাঙিয়ে তারা নানা ধরণের প্রতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক পক্ষের সাথে অবৈধভাবে যুক্ত ছিল।

বিআইজেএন-এর পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে আমীর খসরু বলেন, স্থানীয় পর্যায়ে বিশাল সংখ্যক সংবাদপত্র বন্ধ ও অনিয়মিত হওয়ায় স্থানীয় প্রশাসন ও স্থানীয় নানা পর্যায়ের প্রতিনিধিদের দায়িত্ব পালনে জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা ও ভারসাম্য বজায় রাখার বিষয়টি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এতে নানামাত্রিক কর্তৃত্বপরায়ণতা বেড়ে যাবার শঙ্কা রয়েছে। তৃণমূলের সাথে খবরপ্রাপ্তিতে এককেন্দ্রীকতার সৃষ্টি হতে পারে।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর