ওজন মাপার মেশিনে বিস্ফোরক; ভাবতেও পারেনি পুলিশ

ওজন মাপার মেশিনে বিস্ফোরক; ভাবতেও পারেনি পুলিশ

অনলাইন ডেস্ক

ওজন মাপার যন্ত্রের আড়ালে লুকানো ছিল শক্তিশালী বোমা। সকালে হঠাৎ বিস্ফোরণে উড়ে যায় রাজধানীর পল্লবী থানার জানালার কাচ। ক্ষতিগ্রস্ত হয় থানার ভেতর। বোমা বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন ৪ পুলিশ সদস্যসহ ৫ জন।

পরে নিষ্ক্রিয় করা হয় আরো দুটি বোমা।

ভোরে তিন আসামিকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে পল্লবী থানা পুলিশ। পুলিশের দাবি, তাদের সঙ্গে ছিল একটি ওজন মাপার যন্ত্র। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ ও বোমার ধরণ দেখে এটাতে জঙ্গি তৎপরতা সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বড় ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্যই অপরাধীরা চেষ্টা করছিল বলেও জানায় ডিএমপি।

পল্লবী থানার ভেতর থেকে দুটি অবিস্ফোরিত বোমা উদ্ধারের পর ঘটনাস্থলেই সেগুলো নিষ্ক্রিয় করে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট।

বুধবার ভোরে তিনজন আসামিকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে পল্লবী থানা পুলিশ। পুলিশের দাবি তাদের সঙ্গে ছিল একটি ওজন মাপার যন্ত্র। ডিজিটাল ওজন মাপার মেশিনে বোমা থাকতে পারে এমন ধারনাই ছিলনা পুলিশের। এ কারণে কোনো ধরণের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা ছাড়াই সংরক্ষণ করা হয় সেটি।

সকাল সাতটার দিকে বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয় মেশিনটি। আহত হন ৪ পুলিশসহ ৫ জন। পরে পল্লবী থানা ঘিরে ফেলে পুলিশ। ঘটনাস্থলে আসে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট। ওজন মাপার মেশিনটি পর্যবেক্ষণ করে , আরো দুটি বোমা সদৃশ বস্তু পাওয়া যায়।

পল্লবী থানা ভবন পরিদর্শনের পর ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় বলেন, আধাঘণ্টার মধ্যে দুটি শব্দ হয়েছে আপনারা শুনেছেন। আমাদের বোম্ব ডিস্পোজাল ইউনিট এক্সপার্টরা ডিভাইসগুলো স্টাডি করার পরে এক্সপ্লোসিভ সমৃদ্ধ দুটি ডিভাইস নিষ্ক্রিয় করেছে।

তিনি জানান, পল্লবী থানা পুলিশ ও মিরপুরের ডিবির নেতৃত্বে একটা টিম কাজ করছিল কয়েকদিন ধরে। একটি গ্রুপ ক্রাইম করতে পারে বা ক্রাইম হতে পারে, এমন তথ্যের ভিত্তিতে গত রাত ২টার দিকে কালশী কবরস্থানের দিকে পুলিশের একটি টিম যায়। সেখানে একটি সংঘবদ্ধ গ্রুপ সমবেত হয়ে ক্রাইম করার পরিকল্পনা করছে- এমন খবরে পল্লবী থানা পুলিশ সেখানে অপারেশনে গিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।

তবে সেখান থেকে বেশ কয়েকজন পালিয়ে যায়। সেখান থেকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়। একটি ডিভাইস উদ্ধার করা হয় যেটি ওয়েট মেশিনের মতো।

পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, ওজন মেশিনের মতো কোনো জিনিস কেন তাদের কাছে থাকবে... সেটা কী প্রশ্ন ওঠায় রাতেই বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটকে খবর দেওয়া হয়। কিছুক্ষণের মধ্যে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট থানায় চলে আসে। তারা ওই ডিভাইসটিকে স্টাডি করে। সেটা দেখার পর তারা আরও বিশদভাবে ডিভাইসগুলো খতিয়ে দেখতে আরও কিছু পর্যবেক্ষণ মেশিনসহ আসার জন্য ইউনিটের অন্য সহকর্মীদের খবর দেয়।

তারা যখন আরও পর্যবেক্ষণ মেশিন নিয়ে আসছিল তখন থানার ভেতর একটি বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণ ঘটার পরে আমাদের চার পুলিশ সদস্যসহ পাঁচ সদস্য আহত হন। তারা সবাই চিকিৎসাধীন আছেন।

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, এক্সপার্ট টিম এসে পৌঁছানোর পর তারা পুরো এলাকা সিকিউরড করে। প্রাথমিক স্তরে থেকে তারা তারা ধারণা দেয় যে আরও কিছু বিস্ফোরক অবিস্ফোরিত থাকতে পারে। এরপর আরও দুটি অবিস্ফোরিত এক্সপ্লোসিভ নিষ্ক্রিয় করে থানা ভবন নিরাপদ করা হয়।

পুলিশের গোয়েন্দারা ঘটনাটি করছে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, এসব কেন, কোত্থেকে এলো, কী উদ্দেশ্যে এলো সেটা নিয়ে আমাদের তদন্ত চলছে।

 

নিউজ টোয়েন্টিফোর/কামরুল