পিতা হিসেবে বলছি, ধর্ষণের শাস্তি বৃদ্ধি করুন

ফাইল ছবি

পিতা হিসেবে বলছি, ধর্ষণের শাস্তি বৃদ্ধি করুন

শামীম ওসমান, এমপি

ধর্ষণ আজকের দিনের বিষয় নয়। প্রাগৈতিহাসিক সময় থেকে এটি হয়ে আসছে। তবে এসব ঘটনায় কোনো সংগঠনের নাম বা সংগঠনের নেতাকর্মী বা সংশ্লিষ্ট কারো জড়িত হওয়ার বিষয় সামনে আসলে তা বেশি প্রচার পায়, এতে সেই সংগঠন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে সংগঠনের ইমেজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

ধর্ষণ যে আজকে ঘটেছে তা নয়, এটি নিয়ে আমি কোনো রাজনৈতিক বিরোধে যাব না।

আমাদের দেশে তিনটি বিভাগ আছে, নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ ও সংসদ। ধর্ষণ বন্ধে এখন দু্টি বিভাগ কাজ করবে। একটি নির্বাহী বিভাগ অপরটি বিচার বিভাগ।

এখন দেখতে হবে নির্বাহী বিভাগ দায়িত্ব পালন করেছে কী না। এখানে দলের কিছু মানুষের নাম এসেছে পত্রপত্রিকার মাধ্যমে, এর আগেও রিজেন্টের শাহেদের নাম এসেছিলো জালিয়াতির কারণে, তারা গ্রেপ্তার হয়েছে। সিলেটের এমসি কলেজের ঘটনায় বা নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের ঘটনায় অভিযুক্তরা গ্রেপ্তার হয়েছে। এখানে দেখতে হবে নির্বাহী বিভাগ গ্রেপ্তার করেছে কিনা, অর্থাৎ নির্বাহী বিভাগ দায়িত্ব পালন করেছে কিনা। সরকারকে তখনি দোষারোপ করা যাবে যখন সরকার এই ধরনের অপরাধীদের ছাড় দেয়। কিংবা দলের কোনো নেতা যদি অপরাধে জড়িত থাকে এবং সরকার কোনো ধরনের ছাড় দেয় বা সহায়তা করে তখন দোষারোপ করা যাবে।

ধর্ষণ যিনি করেন, তাকে আমি রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব বা মানুষ হিসে্বেই গণ্য করতে চাই না। এখন আমরা করবটা কী? যদি রাজনৈতিক বিতর্কে যাই, তাহলে ২০০১ সালের নির্বাচনের পরে মানুষের ওপর যে নির্যাতন হয়েছিল, যে ধর্ষণ হয়েছিল তা বলা যাবে। তখন ধর্ষণ করেছিল তাই এখনকার ধর্ষণ আইনসম্মত বা মেনে নেওয়া যায়, এটা কোনোভাবে বলা যাবে না।

আমি একজন বাবা। আমি একজন ছেলে ও একজন মেয়ের বাবা। যদি আমার মেয়ের ওপর নির্যাতন হতো, তাহলে আমার কেমন লাগতো? সেই জায়গা থেকে, একজন বাবার অনুভূতি থেকে আমি কথা বলতে চাই। এখন এসব অপরাধের বিরুদ্ধে আমাদের সোচ্চার হওয়ার সময় এসেছে। এখন একজন মানুষ হিসেবে আমাদের কথা বলার সময় এসেছে বলে আমি মনে করি। ধর্ষণ ঠেকাতে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকম আইন রয়েছে। সৌদী আরবে ধর্ষণের জন্য কল্লা কেটে নেওয়া হয়, আরব আমিরাতে সাত দিনের মধ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়, চায়নায় গুলি করে হত্যা করে, উত্তর কোরিয়ায় ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করে। মঙ্গোলিয়ায় যিনি রেপড হন তার পরিবারের মাধ্যমে ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড প্রয়োগ করা হয়।

আরও পড়ুন: ৫ টুকরো করে হত্যা: বুকের অংশ ও পা দুটি উদ্ধার

ধর্ষকরা বিকৃতি সম্পন্ন, এদেরকে আপনি মানবিক মানুষ বলতে পারবেন না। বয়স্ক মানুষ থেকে শুধু করে তিন বছরের শিশু তাদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। ধর্ষক হিসেবে শুধু সরকারি দলের দেলোয়ারের নামই আসছে না, মাসজিদের ইমাম সাহেবের নাম আসছে, গির্জার ফাদারের নাম আসছে। এই মনুষত্বের লোপ পাওয়ার বিষয়টি শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বজুড়েই হচ্ছে। তারপরো বিশ্বজুড়ে ধর্ষণ বাড়ল কী কমল তা আমাদের বিবেচনার বিষয় নয়। আমাদের বিবেচনার বিষয় বাংলাদেশে বন্ধ হলো  কী না। যদি বাংলাদেশে ধর্ষণ হয়েই যায়, তবে সর্বোচ্চ সাজা দেওয়া নিশ্চিত হলো কিনা তা দেখার বিষয়।

ধর্ষণের জন্য এখন সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। তা বাড়ানো দরকার। আমি মনে করি ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা হওয়া উচিত মৃত্যুদণ্ড। আমি আশা করি সরকার ধর্ষণের সাজা মৃত্যুদণ্ড নির্ধারণ করবে।  

শামীম ওসমান, সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগ নেতা।

news24bd.tv তৌহিদ

সম্পর্কিত খবর