শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে অক্ষম হওয়ায় স্বামীকে খুন 

স্বামী সমীরের সঙ্গে মধুমিতা [ছবি: জি নিউজ] 

শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে অক্ষম হওয়ায় স্বামীকে খুন 

সাহিদ রহমান অরিন

রাতে খাবার খেতে বসেছিলেন। স্ত্রী ভাত দিয়েছিলেন ঘরের প্রধান দরজার ঠিক উল্টো দিকেই। দরজা খোলা ছিল। ভাত মুখে তুলতেই একটি গুলি এসে তার পিঠে বিদ্ধ হয়।

সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন তিনি। প্রাণ যায় সেখানেই।  

ঘটনাটি ভারতের পশ্চিম বঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার। গেল ১০ এপ্রিল জেলার সোনারপুর পৌর এলাকার ট্যাক্সি চালক সমীর মিস্ত্রী এভাবেই খুন হন।

 

খুনের কিনারা করতে গিয়ে পুলিশের হাতে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। প্রথমে মনে করা হয়েছিল, প্রোমোটিং সংক্রান্ত বিবাদের জেরেই এই ঘটনা। কিন্তু পরে জানা যায়, স্ত্রী বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্কের জেরেই খুন হয়েছেন সমীর মিস্ত্রী। প্রেমিকের সঙ্গে ফন্দি এঁটে স্ত্রী মধুমিতা মিস্ত্রী তার স্বামীকে হত্যা করিয়েছেন বলে অভিযোগ।

প্রথমে সমীরের স্ত্রী মুধমিতা পুলিশকে জানান, কিছুদিন আগে ট্যাক্সি চালানোর পাশাপাশি প্রোমোটিং ব্যবসায় যুক্ত হয়েছিলেন সমীর। তার থেকেই খুন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু মধুমিতার মোবাইল ফোনের কল লিস্ট খতিয়ে দেখতেই চক্ষু চড়কগাছ পুলিশের!

news24bd.tv
হত্যার দায়ে অভিযুক্ত মধুমিতা ও চন্দন [ছবি: জি নিউজ] 

তদন্তে জানা যায়, প্রেমিক চন্দন মণ্ডলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সুপরিকল্পিতভবে সমীরকে খুন  করেছেন মধুমিতা। সোনারপুরের ক্ষুদিরাম পল্লির বাসিন্দা চন্দনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই অবৈধ সম্পর্ক চলছিল মধুমিতার।  

মধুমিতা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনে কাজ করতেন। কর্মস্থলে যাতায়াতের পথে সোনারপুর স্টেশনেই চন্দনের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। তারপর ঘনিষ্ঠতা।  

জানা যায়, সমীর নাকি শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে অক্ষম হয়ে পড়েছিলেন। সে কারণে সমীরকে তালাক দিতে চেয়েছিলেন মধুমিতা। বারুইপুর আদালতে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলাও চলছিল। কিন্তু ততদিন অপেক্ষা করতে পারেননি মধুমিতা-চন্দন।

চন্দনের সঙ্গে মিলে স্বামীকেই পথ থেকে সরানোর ফন্দি আঁটেন মধুমিতা। কোনো দিনই রাতে ঘরের দরজা খুলে খেতে বসতেন না সমীর-মধুমিতা। অথচ খুনের রাতে সেটাই করেছিলেন মধুমিতা। ঘরের দরজা খোলা ছিল। আর উল্টোদিক করে সমীরকে খেতে দিয়েছিলেন তিনি। সেই সুযোগেই চন্দন গুলি করে পালায়।  

পুলিশ জানিয়েছে, খুনের দিন বেশ কয়েকবার চন্দনের সঙ্গে ফোনে কথা হয় মধুমিতার। মধুমিতা ও তার প্রেমিক চন্দনকে আটক করেছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে সমীরকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে তারা।

চন্দনের বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগণার গোসাবায়। চন্দনও বিবাহিত। বাড়িতে তার স্ত্রী ও ১ বছরের পুত্র সন্তান রয়েছে।  

সূত্র: জি নিউজ 

 

সম্পর্কিত খবর