কসম ভাঙ্গার কাফফারা

কসম ভাঙ্গার কাফফারা

অনলাইন ডেস্ক

আল্লাহ্ পাক ছাড়া অন্য কারো নামে শপথ করা বা কসম করা শিরক ও কুফর। তাই কখনো শপথ করলে একমাত্র আল্লাহর নামেই করতে হবে। নিজের মাথা, বুকে বা শরীর ছুঁয়ে,সন্তানদের কসম করে, বিদ্যা, মাটির নামে বা এইগুলো ছুঁয়ে কসম করা-এই সবগুলো কাজ সম্পূর্ণ হারাম। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যার কসম করতে হয়, সে যেন আল্লাহর নামে কসম করে, অথবা চুপ থাকে।

’ (বুখারি: ২৬৭৯)।

ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা তোমাদের পিতাদের নামে কসম কর না। যে আল্লাহর নামে কসম করে তার উচিত সত্য বলা, আর যার জন্য আল্লাহর নামে কসম করা হলো তার উচিত সন্তুষ্টি প্রকাশ করা, আর যে আল্লাহর নামে সন্তুষ্টি প্রকাশ করল না, তার সঙ্গে আল্লাহর সম্পর্ক নেই। ’ (ইবনে মাজাহ: ২১০১)।

কসমের পাঁচ সুরত :

(১) ওয়ায়াজিব : নিরপরাধ ব্যক্তির প্রাণ বাঁচানোর উদ্দেশ্যে শপথ করা ওয়াজিব।

(২) মুস্তাহাব : দুই মুসলমানকে মিলানো বা কোনো মুসলমানকে ক্ষতি থেকে বাঁচানোর উদ্দেশ্যে শপথ করা মুস্তাহাব।

(৩) মুবাহ বা জায়েজ : কোনো বৈধ জিনিস করা বা ছাড়ার ব্যাপারে শপথ করা জায়েজ। নিজের বৈধ অধিকার হাসিলের জন্য শপথ করাও জায়েজ।

(৪) মাকরুহ : কোনো মাকরুহ কাজ করা বা কোনো মুস্তাহাব কাজ না করার শপথ করা মাকরুহ।

(৫) হারাম : মিথ্যা কথার কসম বা গুনাহে লিপ্ত হওয়া বা কোনো ওয়াজিব ছেড়ে দেওয়ার শপথ করা হারাম। (আল মুগনি : ৯/৩৮৭-৮৯)

কসম তিন প্রকার :

(১) গামুস : অতীত বা বর্তমানকালের কোনো বিষয় সম্পর্কে ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা কসম খাওয়া। এ ধরনের কসম করা কবিরা গুনাহ। এজাতীয় কসমের কোনো কাফফারা নেই। এর পাপ থেকে নিষ্কৃতির একমাত্র উপায় আল্লাহর কাছে তাওবা ও ইস্তিগফার করা।

(২) মুনআকিদাহ : ভবিষ্যতে কোনো কাজ করা বা না করার ব্যাপারে কসম খওয়া। যদি কসম ভঙ্গ করে তাহলে কাফফারা দিতে হবে। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহ তাআলা অর্থহীন কসমের জন্য তোমাদের দায়ী করবেন না। কিন্তু যেসব কসম তোমরা দৃঢ়ভাবে করো, সেসবের জন্য তিনি তোমাদেরকে দায়ী করবেন ...। ’    (সুরা : মায়িদা, আয়াত : ৮৯)

(৩) লাগব : লাগব বলা হয়, কসমকারী অতীত বা বর্তমানকালের কোনো একটি বিষয়ে নিজের ধারণা অনুযায়ী সত্য মনে করে কসম করে অথচ বিষয়টি বাস্তবে তার ধারণামাফিক নয়, বরং তার বিপরীত। এই ধরনের কসমের ক্ষেত্রে আশা করা যায় যে আল্লাহ তাআলা পাকড়াও করবেন না। (বাদায়েউস সানায়ে : ৩/১৭)

কসম ভাঙ্গার কাফফারা:

কোরআনুল কারিম বা আল্লাহর নাম বা তার কোনো সিফাতের নামে কসম করার পর যদি কসম থেকে ফেরত আসতে চায়, অথবা কসম ভঙ্গ করতে চায়, তাহলে কসমের কাফফারা দেয়া জরুরি। কসমের কাফফারা হচ্ছে দশজন মিসকিনকে খাবার দেয়া, অথবা তাদেরকে পরিধেয় বস্ত্র দান করা, অথবা একজন মুমিন গোলামকে মুক্ত করা, যদি এর কোনোটার সামর্থ্য না থাকে, তাহলে তিন দিন সিয়াম রাখা।

আরও পড়ুন:

 আজিমপুর স্টাফ কোয়ার্টার থেকে ঢাবি ছাত্রীর লাশ উদ্ধার

 বিনিয়োগ আকর্ষণে ‘বাংলাদেশ আইটি কানেক্ট-ইউকে ডেস্ক’ চালু

 রাজধানীর যেসব এলাকায় গ্যাস থাকবে না আজ

 ৪ হাত, ৪ পা নিয়ে জন্ম নেওয়া শিশুটি সুস্থ আছে: চিকিৎসক

 

কাফফারা বিষয়ে কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন,  ‘আল্লাহ তোমাদেররকে পাকড়াও করেন না তোমাদের অর্থহীন কসমের ব্যপারে, কিন্তু যে কসম তোমরা দৃঢ়ভাবে করছো, সেই কসমের জন্য তোমাদেরকে পাকড়াও করেন। সুতরাং এর কাফফারা হলো দশজন মিসকীনকে খাবার দান করা-মধ্যম ধরণেরখাবার, যা তোমরা স্বীয় পরিবারকে খাইয়ে থাক, অথবা তাদের বস্ত্র দান, কিংবা একজন দাস-দাসী মুক্তকরা। অতঃপর যে সামর্থ্য রাখে না তবে তিন দিন সিয়াম পালন করা। এটা তোমাদের কসমের কাফফারা- যদি তোমরা কসম কর, আর তোমরা তোমাদের কসম হেফাজত কর। এমনিভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তার আয়াতসমূহ বর্ণনা করেন যাতে তোমরা শোকর আদায় কর। ’ (মায়েদা : ৮৯)।

কাফফার বিষয়ে হাদিসে এসেছে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহর শপথ, আমি কোনো কসম করে যদি তার বিপরীতে কল্যাণ দেখি-ইনশাআল্লাহ, অবশ্যই আমি আমার কসমের কাফফারা দেই এবং ভালো কাজটি করি; অথবা ভালো কাজটি করি পরে আমার কসমের কাফফারা দেই। ’ (বুখারি: ৬৬২৩)।

news24bd.tv নাজিম

এই রকম আরও টপিক