মুমিন বান্দার জন্য বিপদের সমপরিমাণ প্রতিদান নির্ধারিত

মুমিন বান্দার জন্য বিপদের সমপরিমাণ প্রতিদান নির্ধারিত

অনলাইন ডেস্ক

দুঃখ, কষ্টের সময় আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট থাকা বান্দাকে মহান আল্লাহ বেশি ভালোবাসেন। দুঃসময়ে মুমিন বান্দা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্টি নিয়ে দৃঢ়কণ্ঠে বলে থাকেন- ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’। কোনো বান্দা যখন আল্লাহর দেওয়া সমস্যাকে হাসি মুখে মেনে নেন, তখন ওই বান্দার জন্য বিপদের সমপরিমাণ প্রতিদান নির্ধারিত হয়ে যায়।

হাদিসে বলা আছে- 'রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- ‘নিশ্চয় মুসিবত তথা বিপদের বিনিময়ে বড় পুরস্কার পাওয়া যায়।

আর নিশ্চয়ই আল্লাহ যখন কোনো জাতিকে ভালোবাসেন তখন তার ওপর বিপদাপদ চাপিয়ে দেন। সুতরাং (বিপদের সময়) যে সন্তুষ্ট হবে, তার জন্য সন্তুষ্টি থাকবে; আর যে অসন্তুষ্ট হবে, তার জন্য (আল্লাহর পক্ষ থেকে) অসন্তুষ্টিই থাকবে। ’ 

দুঃখের সময় বান্দা আল্লাহর কাছে কিভাবে প্রার্থনা করবেন, প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা শিখিয়ে দিয়েছেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
১. ‘যখন কোনো মুসলিম চরম বিপদে আক্রান্ত হয়; তারপর আল্লাহ তাকে যে নির্দেশ দিয়েছেন তা বলে-
اِنَّا لِلَّهِ وَ اِنَّا اِلَيْهِ رَاجِعُوْنَ – اَللَّهُمَّ اَجِرْنِىْ فِىْ مُصِيْبَتِىْ وَ اَخْلِفْ لِىْ خَيْرًا مِنْهَا
উচ্চারণ : ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

আল্লাহুম্মা আজিরনি ফি মুসিবাতি ওয়া আখলিফলি খাইরাম মিনহা। ’
অর্থ : ‘আমরা আল্লাহর জন্য এবং আল্লাহর দিকেই ফিরে যাব। হে আল্লাহ! তুমি আমাকে আমার মুসিবতে সাওয়াব দান কর, আর আমার জন্য এর চেয়ে উত্তম বদলা দাও!। ’
তাহলে আল্লাহ তাআলা তাকে আগের তুলনায় উত্তম প্রতিদান এবং বদলা দান করবেন। ’

২. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুমিন বান্দাকে আরও শিখিয়েছেন যে, যখন সে কোনো বিপদগ্রস্ত লোককে দেখবে, তখন এ দোয়া করবে-
اَلْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِىْ عَافَانِىْ مِمَّا ابْتَلَاكَ بِهِ – وَ فَضَّلَنِىْ عَلَى كَثِيْرٍ مِّمَنْ خَلَقَ تَفْضِيْلَا
উচ্চারণ : আলহামদুলিল্লাহিল্লাজি আফানি মিম্মানিবতালাকা বিহি; ওয়া ফাদ্দালানি আলা কাছিরিম মিম্মান খালাকা তাফদিলা। ’
অর্থ : সব প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি তোমাকে বিপদাক্রান্ত করেছেন; তা থেকে আমাকে নিরাপদ রেখেছেন এবং আমাকে তিনি তার মাখলুক থেকে মাখলুকের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। ’ তখন তাকে এ মুসিবত কখনো স্পর্শ করবে না। ’ (তিরমিজি)

মুমিন বান্দা বিপদে ধৈর্য্যধারণের মাধ্যমে অন্যায় থেকে ফিরে থাকে গোনাহ থেকে মুক্তি পায়।  

সুতরাং মুমিন বান্দার জন্য তাদের অসুস্থতা, পেরেশানি, দুশ্চিন্তা এ সবই বিরাট সুসংবাদ এবং নেয়ামত। এ সব বিপদ-আপদেও তারা কখনও আল্লাহর আনুগত্য থেকে পৃথক হয় না। কারণ আল্লাহ তাআলা বান্দাকে পরীক্ষা করার ঘোষণা দিয়েছেন কুরআনে।  

শুধুমাত্র মুখে কালেমা পড়ে একজন মুমিন বান্দা ঈমানের উচ্চ মর্যাদায় পৌঁছানো কোনোভাবে সম্ভব নয়; বরং যে ঈমানের দাবি করে, তাকে অবশ্যই ঈমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। এ কথা সমর্থনে আল্লাহ তাআলা একাধিক আয়াতে ঘোষণা করেন-

১. আর নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে কিছু ভয়, ক্ষুধা দ্বারা এবং কিছু সম্পদ এবং জীবনের ক্ষতি দ্বারা পরীক্ষা করব। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও। ’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৫৫)

২. আর আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব যতক্ষণ না আমি প্রকাশ করে দেই যে, কারা জিহাদকারী আর ধৈর্যশীল। ’ (সুরা মুহাম্মদ : আয়াত ৩১)

 

আরও পড়ুন:


লকডাউনের সপ্তম দিনে সরব ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

আর্জেন্টিনার বিপক্ষে জেসুসকে পাচ্ছে না ব্রাজিল


যারা এ সব পরীক্ষায় আল্লাহ তাআলার প্রতি সন্তুষ্ট থাকবে; আল্লাহ তাআলাও তাদের প্রতি সন্তুষ্ট। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে চরম বিপদ ও মুসিবতে ধৈর্যধারণ করার তাওফিক দান করুন।   আমিন।

news24bd.tv রিমু