যুবকদের যৌনদাসীর প্রলোভন দিচ্ছে আইএস

যুবকদের যৌনদাসীদের প্রলোভন দিচ্ছে আইএস

যুবকদের যৌনদাসীর প্রলোভন দিচ্ছে আইএস

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

ইরাক ও সিরিয়ায় জমি খুইয়ে এবার আফগানিস্তানে শিকড় ছড়াচ্ছে আইএস। তরুণ আফগানি যুবকদের দলে আনতে যৌনদাসী ও বিয়ের টোপ দিচ্ছে সংগঠনটি।

পাহাড়ি দেশটিতে তালেবান-সহ একাধিক জঙ্গিগোষ্ঠী রয়েছে। তাঁদের সঙ্গে আধিপত্যের লড়াই লেগেই আছে ইসলামিক স্টেটের।

এছাড়াও রয়েছে মার্কিন বাহিনীর হানা। ফলে দলে তরুণদের টানতে না পারলে টিকবে না দলটি। জেহাদের ধুয়ো আগেই দিয়েছে তালিবান। তাই এবার যুবকদের যৌনদাসীদের প্রলোভন দিচ্ছে আইএস।

কিছুতেই বিয়ের টাকা জোগাড় করতে পারছিল না মোহাম্মদ শাহ। পাত্রীপক্ষের দাবি ১৫ হাজার মার্কিন ডলার (১২ লাখ টাকারও বেশি)। চিন্তায় ঘুম উধাও মোহাম্মদ শাহর। এই বুঝি হাতছাড়া হয় প্রেমিকা। রাতভর চিন্তা করে অবশেষে সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেললেন প্রেমে মাতোয়ারা আফগান যুবকটি। সকাল হতেই দেখা গেল একটি পাহাড়ি গুহায় ঢুকছেন যুবকটি।

এরপর সেদিন রাতেই মেয়ের বাড়িতে হানা দিল ‘কালো পাগড়ি’রা। পাত্রীকে তুলে নিয়ে বিয়ের আসরে বাবু হয়ে বসল মোহাম্মদ শাহ। যাক বিনা পণেই বিয়ে সারা! বেশ শিক্ষা দেওয়া গিয়েছে মেয়ের বাবাকে। তবে মোহাম্মদ শাহ যা বোঝেননি, তা হল, ‘কালো পাগড়ি’দের সাহায্য নিয়ে ভয়াবহ মৃত্যুফাঁদে পা দিয়ে ফেলেছে তিনি। এখন আর নিষ্কৃতি নেই।

প্রশ্নের জবাব পেতে হলে যেতে হবে সুদূর সিরিয়া ও ইরাকে। যুদ্ধবিধ্বস্ত ওই দেশগুলি থেকে প্রায় পুরোপুরি বিতাড়িত ‘কালো পাগড়ি’ বা ইসলামিক স্টেট। আফগানিস্তানে এই নামেই পরিচিত জঙ্গি সংগঠনটির সদস্যরা। নামকরণের নেপথ্যে রয়েছে জঙ্গিদের মাথায় থাকা কালো রঙের পাগড়ি।

মোহাম্মদ শাহকে সাহায্য করে দলে ভর্তি করাই ছিল জঙ্গিদের উদ্দেশ্য। এবং তা সফল ও হয়। মোহাম্মদ শাহ একা নয় শয়ে-শয়ে তরুণরা এই ফাঁদে পা দিচ্ছে।

উল্লেখ্য, আফগান প্রথা মাফিক পাত্রীপক্ষকে অনেক টাকা দিতে হয় পাত্র পক্ষের। তার পরিমাণ কম কিছু নয়। ফলে টাকা জোগাড় করতে না পেরে অনেকেই নাম লিখাচ্ছে আইএস-এর খাতায়। তা করলেই বিয়ে করানোর সমস্ত দায় নেবে সংগঠনটি। সঙ্গে একাধিক যৌনদাসীও দেয় জঙ্গি সংগঠনটি।

মোহাম্মদ শাহের বাবা জামালউদ্দিন জানান, ছেলে ভুল করেছে। তার মুখও দেখতে চান না তিনি। উল্লেখ্য, আইএস-এর ভয়ে জোয়ান প্রদেশে নিজের বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছেন জামালউদ্দিন। তাঁর ও এলাকার সকলের সমস্ত কিছু কেড়ে নিয়েছে কালো পাগড়িরা। আর সেই দলেই ছেলের নাম লেখানোয় মুষড়ে পড়েছেন ওই বৃদ্ধ।

একটি মার্কিন রিপোর্ট মতে, কয়েকদিন আগেই আইএস এর শীর্ষ নেতা কারি হিকমতুল্লাকে খতম করেছে আফগান নিরাপত্তারক্ষীরা। নানগরহার প্রদেশেও চলছে অভিযান। খানিকটা চাপেই রয়েছে আইএস।

তবে এত কিছুর পরও আফগানিস্তানে রয়েছে প্রায় ৩ হাজার আইএস জঙ্গি। আফগান ছাড়াও বহু বিদেশিও রয়েছে এদের মধ্যে। এদের মধ্যে অনেকেই ইরাক ও সিরিয়ায় লড়াই করে এসেছে। ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। পাকিস্তান হয়েই সেদেশে প্রবেশ করছে জঙ্গিরা।

জানা গিয়েছে, দারযাব প্রদেশে প্রশিক্ষণ শিবির খুলেছে আইএস। এলাকার যুবতীদের অপহরণ করে যৌনদাসী বানানোও হচ্ছে। যথেচ্ছ যৌনাচারের টোপ দিয়ে আফগান তরুণদের দলে টানছে তারা।

সূত্র: এনডিটিভি, ব্লুমবার্গ

 

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/কেআই)

সম্পর্কিত খবর