কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সোনাহাট ইউনিয়নে এক মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের প্রায় কোটি টাকা মূল্যের ৩৫ শতক জমি জবর দখলের অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। এনিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগীর পরিবার।
শনিবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবস্থ সৈয়দ শামসুল হক মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা আলিমুদ্দিনের পুত্রবধূ আনজিনা বেগম। এসময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন শাশুড়ি আনোয়ারা বেগম, স্বামী মিজানুর রহমান মিজু ও জমি বিক্রেতা মুক্তিযোদ্ধা মেহের আলী।
অভিযোগে বলা হয়, কেন্দ্রিয় ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এবং উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরন্নবী চৌধুরী খোকনের পুত্র রাকিনুল হক চৌধুরী ছোটন প্রভাব খাটিয়ে অর্ধশতাধিক ছাত্রলীগের কর্মীকে নিয়ে জমি জবরদখল করেছে। সেই জমিতে গত তিনদিন ধরে ট্রাক্টর দিয়ে মাটি ফেলে ভরাট করছে তারা। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের লাগানো গাছপালা কেটে ফেলে সেখানে ঘর তুলছে। এসময় থানায় অভিযোগ করা হলেও পুলিশ কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
অভিযোগে আরো বলা হয়, ২০১৭ সালে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা মেহের আলীর কাছ থেকে ৫৯ শতক জমি রেজিস্ট্রিমূলে ক্রয় করা হয়। গত সাড়ে ৪ বছর ধরে আমরা সেই জমি ভোগদখল করে আসছি। এখন তারা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মাধ্যমে সেই জমি জবরদখল করে জোড়পূর্বক মাটি ফেলে ঘর তুলছে।
জমিদাতা মুক্তিযোদ্ধা মেহের আলী সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে জানান, আমি ৪০ বছর পূর্বে ওই জমি কিনেছি। কিন্তু ছোটন তার ভাই শোভনসহ এদের সাঙ্গপাঙ্গরা আমার বাড়ি ভেঙেছে। আমি সেই দু:খে আমার মামা বীর মুক্তিযোদ্ধা আলিমুদ্দিনের পুত্রবধূ আনজিনা বেগমের কাছে জমি রেজিস্ট্রি করে দেই। পরে আমি অনেক দূরে গিয়ে বাড়ি করে আছি। তিনি দুঃখ করে বলেন, সরকার এদেরকে পদ দিতেছে। আর এরা পদ নিয়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম করতেছে।
এ বিষয়ে অভিযোগ অস্বীকার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রাকিনুল হক চৌধুরী ছোটন বলেন, অভিযোগকারীর স্বামী মিজানুর রহমান মিজু নিজেই একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও ভূমি দস্যু। তার বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। জেলও খেটেছে। বিরোধপূর্ণ জমির সাথে আমি বা ছাত্রলীগের কারো সম্পৃক্ততা নেই। আমার নেতৃত্বে কোন ঘটনা ঘটেনি। প্রকৃত জমির মালিক নজরুল ইসলাম নিজেই সেখানে ঘর তুলছে। অভিযোগকারীরা জাল দলিল করে জমিটি দখলে নেয়।
এ ব্যাপারে ভূরুঙ্গামারী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আলমগীর হোসেন জানান, আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পক্ষের সাথে বসে সমঝোতার জন্য কোর্টের মাধ্যমে সমাধান নিতে পরামর্শ দিয়েছি। সেখানে নোটিশ টানিয়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও কোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করেছি।
আরও পড়ুন
ফোন হারিয়ে বিপাকে সারা, চোটলেন সাংবাদিকদের উপর!
news24bd.tv এসএম