সাকিবের প্রার্থিতা নিয়ে মাগুরায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া

সাকিব আল হাসান

সাকিবের প্রার্থিতা নিয়ে মাগুরায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মাগুরা-১ (সদর) আসনে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের প্রার্থী হওয়ার খবরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে জেলার রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে।  

এ খবরে সাকিবের প্রতিবেশীদের কেউ কেউ খুশি হলে বেশিরভাগই মানুষই বলছেন, সাকিব রাজনৈতিক দলের কেউ না। মাগুরায় সামাজিক অঙ্গনে তার মেলামেশা নেই, কোনো অবদানও নেই। তাই মাগুরার রাজনীতিতে যার ত্যাগ ও অবদান আছে, দলের ভেতর থেকে এমন ব্যক্তিই মনোনয়ন পাবেন বলে আশা করেন তারা।

আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা বলছেন, মনোনয়ন যাকেই দেওয়া হোক না কেন, তারা সবাই নৌকা মার্কার প্রার্থীর জন্য কাজ করবেন। তবে তাদের বিশ্বাস- দলের জন্য যার ত্যাগ আছে, তিনিই মনোনয়ন পাবেন।

এ প্রসঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মাজেদুল হক ঝন্টু বলেন, ‘দলের দুর্দিনে যাকে পাশে পাই, আগামী নির্বাচনে তিনিই আওয়ামী লীগের প্রার্থী হবেন। সাকিব আল হাসানের মনোনয়ন নিয়ে আমরা কিছু শুনিনি।

যেহেতু তিনি দলের কেউ না, তাই এ ধরনের আলোচনার প্রশ্নও ওঠে না। ’

সাকিবের প্রতিবেশী মাগুরা কেশব মোড় এলাকার এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘সাকিব আমার প্রতিবেশী। সম্পর্ক থাক বা না থাক, ওর সাফল্যে আমরা আনন্দ পাই। শুনেছি সংসদ নির্বাচনে সে মনোনয়ন পেতে পারে। যে দল থেকেই হোক না কেন, পাড়ার ছেলের সাফল্যে আমরা খুশি। ’

তবে সাকিবকে ব্যক্তিগতভাবে পছন্দ করলেও তার প্রার্থিতার ব্যাপারে শহরের কলেজপাড়ার বাসিন্দারা বলছেন, ‘সাকিবকে নিয়ে আমরা গর্বিত। অনেক ক্ষেত্রেই তাকে দিয়ে আমাদের জেলাকে ‘সাকিবের জেলা’ হিসেবে চিহ্নিত করি। কিন্তু স্থানীয় সামাজিকতার ক্ষেত্রে সাকিব অনেকটাই পিছিয়ে আছেন। তিনি কখন মাগুরায় আসেন, কখন যান তা মাগুরাবাসী কমই জানতে পারেন। হতে পারে খ্যাতিমান তারকা হিসেবে কোনও বিধিনিষেধ থাকতে পারে। তবু জেলায় এ ধরনের একজন খ্যাতনামা মানুষের কত কিছু করার আছে। কিন্তু তিনি তা করেননি। ”

এ ব্যাপারে মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পংকজ কুমার কুণ্ডু বলেন, ‘সাকিবের ক্রিকেট নৈপুণ্যে মাগুরাবাসী গর্বিত। মাগুরার কৃতি সন্তান সে। কিন্তু জেলার সামাজিক ক্ষেত্রে তার কোনো অংশগ্রহণ নেই। জেলার কোনো কিছুতেই তার অবদান নেই। নির্বাচনে প্রার্থিতার সঙ্গে জেলার সর্বস্তরের জনসাধারণের সমর্থনের প্রশ্ন থাকে। সে কারণে সাকিবকে নিয়ে মাগুরা কেন্দ্রিক এ ধরনের কোনো আলোচনা হলে সেটি আমাদের কাছে অনেকটাই অসমর্থিত বলে মনে হবে। তার সঙ্গে ন্যূনতম যোগাযোগ পর্যন্ত আমাদের নেই। ’  

এদিকে, স্থানীয় আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, মাগুরা-১ (সদর) আসনে সাবেক ছাত্রনেতা ও প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সহকারী সচিব অ্যাডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখর প্রার্থী হবেন, এমনটাই ভাবছেন সাধারণ মানুষ। আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা শিখরের সঙ্গে নিয়মিত জনসংযোগেও অংশ নিচ্ছেন।

এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তানজেল হোসেন খান বলেন, ‘ইতোমধ্যে সাইফুজ্জামান শিখর ব্যাপক সাংগঠনিক তৎপরতার মাধ্যমে জেলা আওয়ামী লীগকে একটি শক্তিশালী অবস্থানে দাঁড় করিয়েছেন। তরুণ প্রজন্মের মধ্যেও তাকে ঘিরে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ফলে তাকে নিয়ে সর্বস্তরে ব্যাপক আশাবাদ সঞ্চার হয়েছে। এখনও পর্যন্ত তিনিই এ আসনে একমাত্র যোগ্য প্রার্থী বলে আমি মনে করি। ’

উল্লেখ্য, সম্প্রতি পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামালের মন্তব্যের পর আগামী নির্বাচনে সাকিব আল হাসানের  অংশগ্রহণের ব্যাপারে বিভিন্ন মিডিয়ায় আলোচনা হয়। তবে সাকিবের বাবা মাশরুর রেজা কুটিল জানিয়েছেন, এমন কথা শোনেননি।  

তিনি বলেন, ‘সাকিবের সঙ্গে এ ধরনের কোনো আলোচনা আমাদের হয়নি। খেলার মাঠে তার সিদ্ধান্তের প্রতি আমরা যেমন আস্থাশীল, তেমনি এ ধরনের কোনো বিষয় থাকলে সাকিব নিজেই সেটা ভালো বুঝবে। ’


অরিন▐ NEWS24 

সম্পর্কিত খবর