ট্রেনে 'অতিমানব', আতঙ্কিত যাত্রীরা!

সংগৃহীত ছবি

ট্রেনে 'অতিমানব', আতঙ্কিত যাত্রীরা!

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

এ যেন যেন বামনের দেশে এসে হাজির গালিভার! ট্রেনের ছাদে গিয়ে ঠেকেছে মাথা! অতিকায় মানুষটিকে দেখতে ততক্ষণে ভিড় জমে গেছে রেল স্টেশনে। কিন্তু, কেউই কাছে ঘেষছে না। পাছে ছুড়ে ফেলে দেয়। গতকাল বুধবার ভারতের হাওড়া স্টেশনে আফগানিস্তানের বাসিন্দা শের খানকে দেখতে ছুটে আসেন শত শত মানুষ।

স্টেশনে পড়ে যায় হুড়োহুড়ি। পরে পরিস্থিতি সামাল দিতে ছুটে আসতে হয় পুলিশকে।

গল্প-উপন্যাসে বারে বারে দেখা মেলে এমন বিরাটদর্শন অতিমানবের। কেবল দীর্ঘদেহীই নয়, তাদের চোখমুখের গড়নেও থাকে কোন এক অপার্থিব আবেদন! তেমনই এক মানুষকে ঘিরে আচমকাই শোরগোল শুরু হয় হাওড়া স্টেশনে।

অতিকায় মানুষটিকে দেখতে ভিড় জমতে শুরু করে।  ক্রমে ভিড় বাড়তে থাকে। তার পর এক সময় কীভাবে রটে যায়, কাছে গেলেই নাকি ছুড়ে ফেলে দেবে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা অতিমানব! আর রক্ষে নেই। ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায়, ঘটনাস্থলে ছুটে আসতে হয় জিআরপির টিমকে।  

কিন্তু, কে এই অতিমানব? ক্রমে সামনে আসে দীর্ঘদেহীর পরিচয়। তিনি আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের বাসিন্দা। নাম শের খান। উচ্চতা ৮ ফুট ২ ইঞ্চি। কয়েকদিন আগেই এসেছেন কলকাতায়। বুধবার বোলপুরে যাওয়ার জন্য মালদা ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস ধরতে তিনি এসে হাজির হন হাওড়া স্টেশনে। ১২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় তাঁর দিকে নজর পড়ে জনতার। তার পরেই ঘটে যায় আলোড়ন। ক্রমে খবর ছড়িয়ে পড়তে থাকে। অন্য প্ল্যাটফর্ম থেকেও মানুষ এসে ভিড় জমান।

দীর্ঘদেহী শের খান বুঝতে পারছিলেন তাঁকে দেখে আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ। আর এর ফলে রীতিমতো বিব্রত বোধ করছিলেন তিনি। চেষ্টা করছিলেন নিজেকে লুকাতে। কিন্তু অত বড় শরীর নিয়ে কোথায়ই বা লুকাবেন! শেষে জিআরপির তত্ত্বাবধানে মালদা ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসে ডি১ কোচে তাঁকে বসিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু সেই কোচের মধ্যে থাকা ৭২ জন যাত্রী চমকে ওঠেন শের খানকে দেখে। ক্রমে খবর ছড়িয়ে পড়ে অন্য কম্পার্টমেন্টে। এবার ভিড় জমে যায় ট্রেনের ভিতরেই। ততক্ষণে চলে এসেছে সংবাদমাধ্যমের কর্মীরাও। অসহায় শের খান শৌচাগারের পাশের গেটে দাঁড়িয়ে পড়েন। মাথা ঠেকে যাচ্ছিল সিলিংয়ে। কোনও মতে ঝুঁকে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে শেষে পা দু’টো ঝুলিয়ে বসে পড়েন।  

তবে ট্রেন ছাড়ার পরে তাঁকে আর ওখানে বসতে দেয়নি জিআরপি। তাঁকে নিয়ে গিয়ে বসিয়ে দেওয়া হয় তাঁর জন্য নির্দিষ্ট আসনে। ক্রমে ট্রেন এগিয়ে যায় বোলপুরের উদ্দেশে। কম্পার্টমেন্ট থেকে কম্পার্টমেন্টে ছড়িয়ে পড়তে থাকে এক অতিকায় মানুষকে ঘিরে গজিয়ে ওঠা নানা গল্প।

আর চারপাশের মানুষের বিস্ময় ও কৌতূহল মেশানো দৃষ্টি শরীরে মেখে নিজের আসনে বসে থাকেন শের খান; এক ভিনগ্রহ থেকে আসা প্রাণীর মতো। সূত্র: এবেলা 

সম্পর্কিত খবর