তিন লক্ষাধিক রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ, অপেক্ষায় ৫ লাখ

তিন লক্ষাধিক রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ, অপেক্ষায় ৫ লাখ

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক:

মিয়ানমারের রাখাইন (আরকান) রাজ্যে গত ২৪ আগস্ট রাত থেকে নতুন উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার পর গত ১৫ দিনে ৩ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশের বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে অনুপ্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী। যদিও জাতিসংঘের রির্পোটে বলা হয়েছে ২ লাখ ৭০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

নতুন পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের থেকে জানা গেছে, আশ্রয় নেওয়া ৩ লাখ ছাড়াও বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় মিয়ানমারে এখনো ৫ লাখের উপরে রোহিঙ্গা রয়েছে। ওইসব রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের সেনাবাহিনী চারদিকে ঘিরে রাখার কারণে তারা আসতে পারছে না।

 

একটি সূত্র জানায়, ২৪ আগস্ট রাতে মিয়ানমারে সেনাবাহিনী নতুন করে হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন, জ্বালাও পোড়াও শুরু করে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বসবাসকারী রোহিঙ্গা মুসলিমরা পালিয়ে আসার জন্য সীমান্তের জিরো পয়েন্ট অবস্থান নেয়। বিজিবি ও অন্যান্য আইশৃংখলাবাহিনীর কড়া বাধার মুখে বেশ কয়েকদিন সীমান্তে অপেক্ষার পর ঈদুল আজহার দিন থেকে মানবিক বিবেচনায় সরকার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশে নমণীয় হন।  

এর পরেরদিন থেকে আজ পর্যন্ত রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ভয়াবহ আকার ধারণ করে।

সীমান্তের অন্তত ২২টি পয়েন্ট দিয়ে বানের স্রোতের মতো রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করছে বাংলাদেশে।  সীমান্ত পেরিয়ে আসা হাজার হাজার রোহিঙ্গা পরিবার টেকনাফ শাহ পরীর দ্বীপ থেকে উখিয়ার কুতুপালং পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে বনবিভাগের জায়গায় অবস্থান নিয়েছে। বিশেষ করে তারা উখিয়ার কুতুপালং, বালুখালী, নতুন গড়ে ওঠা বালুখালী ঢালার মুখ, থাইনখালী হাকিম পাড়া, পালংখালী তাজনিরমার খোলা, পালংখালীর বাঘঘোনা বস্তিতে প্রবেশ করছে।  

অচিন এলাকায় যে যেখানে পারছেন সেখানেই মাথা গোজার ঠাঁই নিচ্ছেন। ফলে উখিয়া-টেকনাফ সীমান্তের পাহাড়ি এলাকায় নতুন করে গড়ে উঠছে ঝুপড়ি ।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাংলাদেশের অভ্যান্তরে নতুন করে হাজার হাজার ঝুপড়ি ঘর তৈরি করেছে নতুন পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা। সেই সঙ্গে প্রতিদিন বানের স্রোতের মতো রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে ঢুকছে। যে যেখানে পারছে সেখানেই আশ্রয় নিচ্ছে। প্রতিটি সীমান্ত দিয়ে দলে দলে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে ঢুকছে। শিশু-বৃদ্ধদের কোলে-কাঁধে করে নিয়ে আসছে তারা।  

স্থানীয় কুতুপালং, বালুখালী বস্তির লালু মাঝি ও শামশু মাঝি জানান, পুরাতন ছাড়াও নতুন গড়ে উঠা বস্তিতে বিপুল পরিমান রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। এ সংখ্যা প্রায় ৩ লক্ষাধিক। স্থানীয় সীমান্তবর্তী এলাকার বালুখালী গ্রামের জাফর ইকবাল জানান, ঈদের দিন থেকে যে হারে রোহিঙ্গার স্রোত আসছে তাতে এ সংখ্যা ৩ লাখ ছাড়িয়ে যাবে।  

সম্পর্কিত খবর