বাজারে পেঁয়াজের সঙ্কট নেই। সরবরাহও প্রচুর। চলতি বর্ষা মৌসুমে বৈরী আবহাওয়ায় পেঁয়াজের উৎপাদন ব্যাহতও হয়নি। মজুতও ফুরিয়ে যায়নি।
ভবিষ্যতে এ ধরনের কোনও আশঙ্কাও নাই। তারপরও কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়ানোর অপচেষ্টা করছে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী।তাদের উদ্দেশ্য ফায়দা লুটা। কোরবানির সময় পেঁয়াজের চাহিদা বেড়ে যায়।
এখনই এই চক্রের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে ক্রেতারা আরও ভোগান্তিতে পড়বে। আর ব্যবস্থাটি নিতে হবে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেই। এমন মন্তব্য ভোক্তা, ব্যবসায়ী ও বাজার বিশ্লেষকদের।
জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজের চাহিদা তৈরি হয় কোরবানির ঈদে। আর এই উৎসব সামনে রেখেই ধাপে ধাপে বাড়ছে এ পণ্যটির দাম। প্রায় ২ মাস ধরে বাড়তে বাড়তে এই দাম পৌঁছে গেছে ৬০ টাকায়।
এদিকে, আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়, যা আগে বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা দরে। পেঁয়াজ ব্যবসায়ীদের একটি অসাধু সিন্ডিকেটের তৎপরতায় কোনো কারণ ছাড়াই পেঁয়াজের দাম বাড়ছে- এমন অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পাইকারিতে (ট্রাকসেল) পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ৬ টাকা। আগে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ২২ টাকা থেকে ২৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এখন তা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৮ টাকা থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে। তবে পেঁয়াজের এই দাম বাড়াকে ব্যবসায়ীদের এক ধরনের কারসাজি বলে মন্তব্য করছেন ক্রেতারা।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো’র (বিবিএস) তথ্য মতে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন হয়েছিল ১৮ লাখ ৬৬ হাজার টন, যা ২০১৫-১৬ অর্থবছরের তুলনায় প্রায় দেড় লাখ টন বেশি। বিবিএস জানিয়েছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন প্রায় ১৯ লাখ টন ছাড়িয়ে যেতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির বলেন, ‘পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে ব্যাপক পার্থক্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এটি কমিয়ে আনা প্রয়োজন। না পারলে সরকার সমালোচিত হবে। ’
এ প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘পেঁয়াজের প্রচুর সরবরাহ রয়েছে। মজুতও স্বাভাবিক। শুধু স্বাভাবিকই নয়, অতিরিক্ত মজুতও রয়েছে পেঁয়াজের। তাই কোনো অজুহাতেই পেঁয়াজের দাম বাড়বে না। এ বিষয়ে সরকার তৎপর রয়েছে। ’
অরিন/নিউজ টোয়েন্টিফোর