আয় বৈষম্য কমাতে প্রত্যক্ষ কর বাড়ানোর তাগিদ

আয় বৈষম্য কমাতে প্রত্যক্ষ কর বাড়ানোর তাগিদ

আয় বৈষম্য কমাতে প্রত্যক্ষ কর বাড়ানো প্রধান উপায় বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এ ক্ষেত্রে সব করযোগ্য ব্যক্তিরা আয়কর স্লাব অনুযায়ী কর প্রদান করলে জিডিপির অনুপাতে বর্তমানে ব্যক্তি আয়কর ১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩.১ শতাংশ অর্জন করা সম্ভব বলে জানান তারা।

শনিবার (১৯ নভেম্বর) রাজধানীর পুরানা পল্টনে ‘বৈষম্য মোকাবেলা ও রাজস্ব আয় বৃদ্ধিতে প্রত্যক্ষ কর প্রয়োগ’ শীর্ষক সেমিনারে এমন তথ্য তুলে ধরেন গবেষণা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র‍্যাপিড) এর বক্তারা। র‍্যাপিড এবং ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) যৌথভাবে সেমিনারের আয়োজন করে।

সেমিনারে তারা বলেন, এ বৈষম্য কমাতে নিবন্ধিত করদাতার সংখ্যা বাড়াতে হবে। একইসাথে কর অব্যাহতি সুবিধা বাদ দিলে জিডিপির অনুপাতে আরও ২ শতাংশ কর বাড়ানো সম্ভব। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন র‍্যাপিড চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক।

ড. রাজ্জাক বলেন, বাংলাদেশের কর জিডিপি অনুপাত ৯ শতাংশ, যা সারা বিশ্বে সর্বনিম্ন।

এর বড় কারণ প্রত্যক্ষকর অনেক কম যেটা বাড়াতে হবে। বর্তমানে পরোক্ষকর ৬৫ শতাংশ এবং প্রত্যক্ষকর ৩৫ শতাংশ। তবে সরকার আগামী দিনে প্রত্যক্ষকর ৭০ শতাংশ ও পরোক্ষকর ৩০ শতাংশে আনার যে উদ্যোগ নিয়েছে- সেটি সঠিক সিদ্ধান্ত।

বাংলাদেশে প্রধানতম দুটি সমস্যা ক্রমবর্ধমান বৈষম্য এবং সরকারি ব্যয় জিডিপির অংশ হিসাবে অনেক কম জানিয়ে তিনি বলেন, দেশে প্রত্যক্ষকর কম হলেও টাকার অংকে প্রত্যক্ষকর আগের চেয়ে বেড়েছে। তবে জিডিপির অনুপাতে ও পরিমাণের দিক থেকে বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় অনেক কম।

এসময় র‍্যাপিড চেয়ারম্যান আরও বলেন, আমাদের উচ্চ প্রবৃদ্ধি ও উন্নত দেশে যেতে হলে জিডিপির অনুপাতে রাজস্ব আয় ২০৩০ সালের মধ্যে ১৭ শতাংশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ২১ শতাংশ করতে হবে। আর এর উল্লেখযোগ্য অংশ প্রত্যক্ষকর থেকে আসতে হবে। বর্তমানে কর নেট অনেক কম। টিআইনধারীর সংখ্যা ৭.৬ মিলিয়ন হলেও রিটার্ন দাখিলকারির সংখ্যা মাত্র ২.৪ মিলিয়ন।

সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. নাসির উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, প্রত্যক্ষ কর বাড়ানো উচিত। তবে ৭০ শতাংশ প্রত্যক্ষকর বৃদ্ধি উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নের নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করা প্রয়োজন। কারণ এনবিআরের কাঠামোগত সমস্যা রয়েছে। রাজনৈতিক অর্থনীতির কারণে এনবিআর রাজস্ব আয়ে পিছিয়ে আছে। রাজস্ব আয় বাড়াতে এখন বড় বাধা রাজনৈতিক অর্থনীতি। কারণ অনেক খাতেই কর অবকাশ সুবিধা দিতে হচ্ছে। বিশেষ কর হার আরোপ করতে হচ্ছে।

সেমিনারে র‍্যাপিডের নির্বাহী পরিচালক ড. এম আবু ইউসুফের সঞ্চালনায় আরও অংশ নেন এনবিআরের সদস্য মাহমুদুর রহমান, ইআরএফ সভাপতি শারমিন রিনভী ও সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম।

news24bd.tv/FA

এই রকম আরও টপিক